বাগরাম ঘাঁটি ফেরত দেবে না আফগানিস্তান। দেশটির এমন সিদ্ধান্তে ক্ষেপেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ঘাঁটি ফেরত না পেলে ‘খারাপ কিছু’ করার হুমকি দিয়েছেন তিনি।
গত শনিবার নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশালে দেওয়া এক পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট লেখেন, বাগরাম ঘাঁটি তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আফগানিস্তান যদি এটি ফিরিয়ে না দেয়, তবে খারাপ ঘটনা ঘটবে।
কয়েক দিন আগে ট্রাম্প যুক্তরাজ্য সফরকালে বাগরাম ঘাঁটি ফের যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে আনার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, আমরা এটিকে ফেরত আনার চেষ্টা করছি… আমরা চেষ্টা করছি কারণ তাদের আমাদের কাছ থেকে কিছু প্রয়োজন। তবে ট্রাম্পের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে আফগানিস্তানের তালেবান প্রশাসন।
বাগরাম ঘাঁটির গুরুত্ব
আফগানিস্তানের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটি বাগরাম। দীর্ঘ দুই দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন তালেবানবিরোধী যুদ্ধে অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে এটি। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলার পর তালেবান সরকার উৎখাতে এ ঘাঁটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
২০২১ সালের জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো বাহিনী বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে ঘাঁটিটি ছাড়ে। এর পরপরই তালেবান দ্রুত দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেয়।
মানবাধিকার বিতর্ক
বছরের পর বছর ধরে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বাগরাম ঘাঁটিকে নিয়ে নানা অভিযোগ করেছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ বিভিন্ন সংস্থা জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র এখানে আটক বন্দিদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে এবং ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে’ এটি নিয়মিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল।
ট্রাম্পের অবস্থান
ট্রাম্প ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে বারবার বাগরাম হারানো নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ব্যর্থ কূটনৈতিক কৌশলের কারণে আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র দুর্বল অবস্থায় সরে যায়। এছাড়া তিনি দাবি করেন, আফগানিস্তানে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হুমকি হয়ে উঠছে।
শনিবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকরা যখন তাকে প্রশ্ন করেন, যুক্তরাষ্ট্র কি আবার বাগরাম দখল করার পরিকল্পনা করছে কি না, তখন ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা সে বিষয়ে এখনই কিছু বলব না। তবে আমরা আফগানিস্তানের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলছি। আমরা এটি চাই, খুব শিগগির চাই। যদি তারা তা না করে, তবে আপনারা শিগগিরই জানতে পারবেন আমি কী করতে যাচ্ছি।’