বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গাজায় বড় সামরিক অভিযান শুরু করল ইসরায়েল

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ১৭ মে, ২০২৫ ২১:০৬

ফিলিস্তিনের গাজার কিছু গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল দখল ও নিয়ন্ত্রণের জন্য বড় ধরনের সামরিক অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল। এই অভিযানের লক্ষ্য হলো হামাসকে পরাজিত করা এবং যারা এখনো হামাসের হাতে জিম্মি আছে তাদের মুক্ত করা। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এই ঘোষণা দিয়েছে। অপারেশন গিডিয়নের চ্যারিয়টস নামে এই অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। তারা বলছে, এই অভিযানে গাজার কৌশলগত এলাকা দখল করবে।

হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য ও সিভিল ডিফেন্স কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ২৫০ জন নিহত হয়েছেন। গত মার্চে দুই মাসের যুদ্ধবিরতির সমাপ্তির পর ইসরায়েল গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার বলেন, গাজায় অনেক মানুষ না খেয়ে আছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী তাদের এক পোস্টে অপারেশন গিডিয়নের চ্যারিয়টস নামটি ব্যবহার করেনি। তবে তারা বলেছে, হামাস যতদিন হুমকি হিসেবে থাকবে এবং সব জিম্মি ফিরে না আসে, ততদিন অভিযান চলবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তারা গাজাজুড়ে ১৫০টিরও বেশি হামলা চালিয়েছে, বলেও জানিয়েছে সেনাবাহিনী। ইসরায়েল সীমান্তে ট্যাঙ্ক ও সেনা সমাবেশ বাড়িয়েছে, যদিও আন্তর্জাতিক চাপ রয়েছে যুদ্ধবিরতির দিকে ফিরে যাওয়ার জন্য। কিন্তু এই নতুন অভিযান থেকে বোঝা যাচ্ছে, কূটনৈতিক চেষ্টাগুলো ব্যর্থ হয়েছে।

টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, গিডিয়নের চ্যারিয়টস নামটি বাইবেলের একজন যোদ্ধার নাম থেকে নেওয়া এবং এই অভিযানের মাধ্যমে ইসরায়েলি সেনারা গাজার কিছু এলাকা দখল করে রাখবে, বেসামরিক লোকজনকে দক্ষিণে পাঠাবে, হামাসকে আক্রমণ করবে এবং ত্রাণের ওপর হামাসের নিয়ন্ত্রণ ঠেকাবে।

এদিকে জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভল্কার টার্ক হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ইসরায়েলের এই তীব্র আক্রমণ আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হতে পারে। তিনি বলেন, যেভাবে মানুষকে জোর করে সরানো হচ্ছে, এলাকাগুলো ধ্বংস করা হচ্ছে এবং মানবিক সহায়তা বন্ধ করা হয়েছে এতে গাজায় স্থায়ীভাবে মানুষের সংখ্যা কমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে, যা জাতিগত নির্মূলের মতো এবং আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থি। জাতিসংঘের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, গাজার জনগোষ্ঠী বর্তমানে ‘চরম দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে’ রয়েছে। যদিও ইসরায়েলি সরকার বারবার দাবি করে আসছে, গাজায় কোনো খাদ্য সংকট নেই।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র গাজার পরিস্থিতি নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু চলতি মাসের শুরুতে বলেছিলেন, ইসরায়েল গাজায় তীব্র আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। যার উদ্দেশ্য ওই এলাকা তাদের দখলে রাখা। তবে ইসরায়েলি সরকার এটিও বলেছিল, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই অভিযান শুরু হবে না। শুক্রবারই ট্রাম্প সফর শেষে মধ্যপ্রাচ্য ত্যাগ করেন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ১২০০ জন নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায়। এরপরই ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। এখনো হামাসের কাছে ৫৭ জন জিম্মি রয়েছে। গাজায় হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৫৩ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি মারা গেছে।

গাজাবাসীর পাশে দাঁড়াচ্ছেন হলিউড তারকারা

গাজায় চলমান সহিংসতা ও ‘গণহত্যা’র বিরুদ্ধে চলচ্চিত্র শিল্পের নীরবতার নিন্দা জানিয়ে একটি উন্মুক্ত প্রতিবাদপত্রে নতুন করে যোগ দিলেন হলিউডের জনপ্রিয় তারকারা। সম্প্রতি অভিনেতা জোয়াকিন ফিনিক্স, পেদ্রো পাসকাল, রিজ আহমেদ ও পরিচালক গুইয়ারমো দেল তোরোদের মতো শিল্পীরা এই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন আয়োজকরা।

আরব নিউজ জানিয়েছে, এই চিঠিতে ৩৭০ জনেরও বেশি অভিনেতা, পরিচালক ও চলচ্চিত্রকর্মী স্বাক্ষর করেছেন। তারা গাজায় ফাতিমা হাসুনা নামে এক ফটোসাংবাদিকের হত্যারও তীব্র প্রতিবাদ জানান। ফাতিমা ‘Put Your Soul in Your Hand and Walk’ নামক একটি তথ্যচিত্রে কাজ করেছিলেন, যা বৃহস্পতিবার কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে।

চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন কান উৎসবের বিচারকমণ্ডলীর সভাপতি ফরাসি অভিনেত্রী জুলিয়েট বিনোশও। উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিনোশ বলেন, ‘সে (ফাতিমা) আজ আমাদের সঙ্গে এখানে থাকার কথা ছিল।’ তিনি জানান, ফাতিমা তথ্যচিত্রটি কানে নির্বাচিত হওয়ার খবর জানার পরদিনই পরিবারের আরও ১০ সদস্যসহ ইসরায়েলের বিমান হামলায় প্রাণ হারান। এ ছাড়া প্রতিবাদপত্রে যোগ দিয়েছেন, রুনি মেরা, মার্কিন স্বাধীন চলচ্চিত্র পরিচালক জিম জারমাশ এবং ‘লুপিন’ সিরিজের তারকা ওমর সি-ওর মতো হলিউডের পরিচিত মুখ।

চিঠিতে আরও স্বাক্ষর করেছেন ‘শিন্ডলারস লিস্ট’খ্যাত রেইফ ফাইনস, রিচার্ড গিয়ার, মার্ক রাফালো, গাই পিয়ার্স, সুসান সার্যান্ডন, হাভিয়ের বারডেম, পরিচালক ডেভিড ক্রোনেনবার্গ, পেদ্রো আলমোডোভার, আলফোনসো কুয়ারন, মাইক লি প্রমুখ। তারা বলেন, আমরা লজ্জিত যে আমাদের শিল্পজগৎ গাজায় ইসরায়েলি অবরোধ নিয়ে মুখ খুলছে না।

ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরের ছক যুক্তরাষ্ট্রের

ফিলিস্তিনি জনগণকে নিজ ভূমি থেকে সরিয়ে দিতে একাধিক আফ্রিকান দেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের আগ্রাসন শুরুর পর থেকে এ প্রচেষ্টা আরও স্পষ্ট হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন শুরু থেকেই মধ্যপ্রাচ্যের এ সংকটকে নতুনভাবে সমাধানের নামে গাজাবাসীদের আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে পুনর্বাসনের পরিকল্পনায় এগোচ্ছে।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জেরুসালেম পোস্ট জানায়, গাজাবাসীদের জন্য মরক্কো, সোমালিয়ার পুন্টল্যান্ড ও সোমালিল্যান্ডকে সম্ভাব্য গন্তব্য হিসেবে বিবেচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশগুলোর রাজনৈতিক দুর্বলতা, নিরাপত্তাহীনতা এবং অর্থনৈতিক দুরবস্থার সুযোগ নিয়ে এসব অঞ্চলে ফিলিস্তিনিদের পাঠানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এরপর মার্চে বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) জানায়, পূর্ব আফ্রিকার ৩টি দেশ-সুদান, সোমালিয়া ও বিচ্ছিন্ন অঞ্চল সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল যৌথভাবে আলোচনা করেছে।

এ বিভাগের আরো খবর