ভারতীয় সেনাবাহিনী বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, বিতর্কিত কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর সীমান্তে ভারত ও পাকিস্তানের সৈন্যরা রাতভর ছোট অস্ত্র ও কামানের গোলা বিনিময় করেছে। শ্রীনগর থেকে এএফপি এ সংবাদ জানিয়েছে।
বুধবার ভারত তার প্রতিবেশীর উপর মারাত্মক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর পারমাণবিক অস্ত্রধারী এই দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। এর আগে কয়েকদিন ধরে সীমান্ত সংঘর্ষ শেষে পরিস্থিতি এই কামান হামলায় রূপ নেয়।
ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বুধবারের হামলায় পাকিস্তানে ৯টি ‘সন্ত্রাসী ঘাঁটি’ ধ্বংস করা হয়েছে। এর দুই সপ্তাহ আগে, ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর হামলার জন্য ইসলামাবাদকে দায়ী করেছিল নয়াদিল্লি। পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে ।
বুধবার রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বলেন, ইসলামাবাদ ‘ভারতের হত্যাকাণ্ডের বদলা নেবে।’
বুধবারের সংঘর্ষে দুই পক্ষ মিলিয়ে এখন পর্যন্ত অন্তত ৪৩ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ইসলামাবাদ জানিয়েছে, ভারতের হামলা ও সীমান্তে গুলিতে ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। নয়াদিল্লি জানিয়েছে পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছে।
সীমান্তে সর্বশেষ সংঘর্ষের বিষয়ে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে তৎক্ষণাত কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
ভারতীয় সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘রাতের বেলায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পোস্টগুলো কাপওয়ারা, বারামুল্লা, উরি এবং জম্মু ও কাশ্মীরের আখনূরের বিপরীতে এলাকা থেকে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর ছোট অস্ত্র এবং কামান ব্যবহার করে বিনা উসকানিতে গুলি চালিয়েছে।’ ‘আমরাও পাল্টা জবাব দিয়েছি’।
বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘বিশ্ব নেতৃবৃন্দ এবং কূটনীতিকরা দুই দেশকে সংঘর্ষ থেকে পিছু হটতে চাপ দিয়ে যাচ্ছেন। আমিও চাই তারা থেমে যাক।’
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি (আজ) বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামণ্যম জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করবেন, এর আগে তিনি পাকিস্তান সফর করেছেন। তেহরান দুই দেশের মধ্যে মধ্যস্থতা করতে চাইছে।
ভারত ও পাকিস্তান ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনের রক্তক্ষয়ী বিভাজনের পর থেকে একাধিকবার যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে, যখন উপনিবেশিক কর্মকর্তারা সোজা লাইন টেনে মানচিত্রে বিভক্তির সীমারেখা এঁকেছিলেন, যা অনেক সম্প্রদায়কে বিভক্ত করে দেয়।
মুসলিম-প্রধান কাশ্মীর দীর্ঘদিন ধরে সংঘর্ষের মূল কেন্দ্রবিন্দু হয়ে আছে। উভয় দেশই কাশ্মীরকে তাদের নিজের দাবি বলে মনে করে আসছে।