বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যুদ্ধে রাশিয়াকে সহায়তার ফল ভোগ করতে হবে চীনকে: নেটো প্রধান

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ১৮ জুন, ২০২৪ ১২:৪২

নেটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ বলেন, ‘চীন দুদিকেই সুবিধা নিতে চাইছে। দেশটি একদিকে রাশিয়ার যুদ্ধকে সমর্থন দিচ্ছে, অন্যদিকে ইউরোপের মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করছে। তবে এটা দীর্ঘমেয়াদে কাজে আসবে না।’

পশ্চিমা সামরিক জোট নেটোর মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ বলেছেন, চীন তার অবস্থান না বদলালে ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধকে সমর্থন দেয়ার পরিণতি ভোগ করতে হবে দেশটিকে।

বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘চীন দুদিকেই সুবিধা নিতে চাইছে। দেশটি একদিকে রাশিয়ার যুদ্ধকে সমর্থন দিচ্ছে, অন্যদিকে ইউরোপের মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করছে। তবে এটা দীর্ঘমেয়াদে কাজে আসবে না।’

ওয়াশিংটন সফরকালে নেটো প্রধানের সঙ্গে কথা হয় বিবিসির। দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে তিনি পারমাণবিক অস্ত্র এবং প্রতিরক্ষা ব্যয় নিয়েও কথা বলেন। সূত্র: বিবিসি বাংলা

ভ্লাদিমির পুতিন উত্তর কোরিয়া সফরে যাচ্ছেন- মঙ্গলবার ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে এটা নিশ্চিত করার পরই ওয়াশিংটন সফরে আসেন নেটো প্রধান।

পুতিন এর আগে গত মাসে চীন সফর করেন।

একদিন আগেই সুইজারল্যান্ডে একটি শান্তি সম্মেলন শেষ হয়েছে, যেখানে কিয়েভকে সমর্থন দিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে অনেক রাষ্ট্র।

তবে রাশিয়া সম্মেলনটিকে ‘সময়ের অপচয়’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেছে, ইউক্রেন আত্মসমর্পণ করলেই কেবল তারা শান্তি আলোচনায় সম্মত হবে।

ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার এমন অনমনীয় অবস্থানের মধ্যেই নেটো মহাসচিবের মন্তব্যটি এলো।

রাশিয়ার প্রতি চীনের সমর্থনের ব্যাপারে নেটো দেশগুলো কী করতে পারে- এমন প্রশ্নে স্টলটেনবার্গ বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সম্ভাব্যতা নিয়ে একটি আলোচনা চলমান।’

রাশিয়ায় অনেক প্রযুক্তি সরবরাহ করছে চীন। এর মধ্যে মাইক্রো-ইলেক্ট্রনিক্সের এতা প্রযুক্তিও আছে, যা দিয়ে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলার জন্য ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে,’ যোগ করেন স্টলটেনবার্গ।

তিনি বলেন, ‘চীন যদি তাদের এই আচরণ না পাল্টায়, আমাদের কিছু অর্থনৈতিক পদক্ষেপ বিবেচনা করতে হবে।

‘বেইজিং ইতোমধ্যে কিছু নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছে। গত মাসে চীন ও হংকংভিত্তিক ২০টি প্রতিষ্ঠানকে টার্গেট করে কড়াকড়ি আরোপের ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।

‘কোনো প্রাণঘাতী অস্ত্র বিক্রি করছে না দাবি করে চীন মস্কোর সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক রক্ষা করে চলেছে এবং আইন-কানুন মেনেই সুকৌশলে ডুয়াল-ইউজ (দ্বিমুখী ব্যবহারযোগ্য) ব্যবস্থায় পণ্য রপ্তানি করছে।’

চীন-রাশিয়া সম্পর্ক

২০২২ সালে ইউক্রেনের সঙ্গে পূর্ণ মাত্রায় যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়া বিশ্ব মঞ্চে ক্রমশ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে থাকে।

পুতিন বার বার বলে আসছেন, পশ্চিমা বিশ্বের ক্ষমতার ভারসাম্য সরে যাচ্ছে। আর তিনি সমমনা নেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে কাজ করে যাচ্ছেন।

‘রাশিয়া আরও বেশি বেশি কর্তৃত্ববাদী শাসকদের দিকে ঝুঁকে পড়েছে,’ বিবিসিকে বলেন স্টলটেনবার্গ। উদাহরণ হিসেবে ইরান, চীন ও উত্তর কোরিয়ার নাম উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেন, উত্তর কোরিয়া গোলা-বারুদ পাঠাচ্ছে। বিনিময়ে দেশটির মিসাইল ও পারমাণবিক কর্মসূচির জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তি দিচ্ছে রাশিয়া। অর্থাৎ, উত্তর কোরিয়া ইউক্রেনে যুদ্ধে আগ্রাসন চালাতে রাশিয়াকে সহযোগিতা করছে।’

দুই বছর আগে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে চীন ও রাশিয়া ‘আনলিমিটেড পার্টনারশিপ’-এর ঘোষণা দেয়। সেই মাসেই ইউক্রেন আক্রমণ করে রাশিয়া। এখনও সেই যুদ্ধে জড়িয়ে আছে রাশিয়া।

যুদ্ধের প্রভাবে রাশিয়ার অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার পর অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রাখতে চীনের ওপর নির্ভর করতে হয়েছে রাশিয়াকে।

তবে রাশিয়ায় চীনের সামরিক-বেসামরিক উভয় কাজে ব্যবহার করা যায় এমন দ্রব্য এবং অস্ত্র রপ্তানির সমালোচনা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ।

চীনের কাস্টমস্ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী গত বছর ২৪০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বাণিজ্য হয়েছে দুই দেশের মধ্যে। এতে সময়ের অনেক আগেই পূরণ হয়েছে দেশ দু’টির নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা। তাতে প্রবৃদ্ধি ২৬ শতাংশের বেশি।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের সময় রাশিয়ায় চীনের গাড়ি রপ্তানি ব্যাপকভাবে বেড়ে গিয়েছিল। সাড়ে নয় লাখ গাড়ি রপ্তানি হয়েছে গত বছর। আগের বছরের তুলনায় ৪৮১ শতাংশ বেড়েছে এই খাতের বাণিজ্য।

অন্যদিকে রাশিয়া স্বল্প মূল্যে চীনের কাছে খনিজ জ্বালানি বিক্রি করছে। রুশ কোম্পানি গ্যাজপ্রম এখন চীনের সর্ববৃহৎ প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহকারী।

বিশ্লেষকদের মতে, দুই দেশের সম্পর্কটা মূলত বাজার চাহিদার ওপর ভর করে দাঁড়িয়ে আছে।

তাদের মতে, এই সুযোগ যতটা না চীনের সহায়তার কারণে হচ্ছে, তারচেয়ে বেশি হচ্ছে পশ্চিমা চাপের কারণে। এর ফলে, দুই দিকের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো আরও বেশি অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতার প্রণোদনা পাবে।

পশ্চিম দিক থেকে নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হয়ে পড়ার পর রাশিয়ার অর্থনীতি প্রাচ্যমুখী হয়েছে। রুশ কূটনীতির খাতায় বন্ধু তালিকায় পশ্চিমের চেয়ে পূর্বদিকের দেশের সংখ্যাই বেশি।

এ বিভাগের আরো খবর