৩৭০ ধারা বিলুপ্ত করে রাজ্যের মর্যাদা খোয়ানো জম্মু ও কাশ্মীর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত হওয়ার পর এবার প্রথম ভোট দিয়েছে সেখানকার ভোটাররা। তবে কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণে প্রথম ভোটেই ক্ষমতা হারিয়েছেন উপত্যকার দুই বাঘা নেতা জম্মু ও কাশ্মীর ন্যাশনাল কনফারেন্সের সহ-সভাপতি ও সাবেক মূখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ এবং পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (পিডিপি) সভাপতি ও সাবেক মূখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি।
স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আবদুল রশিদের কাছে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৭০৫ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন ওমর আব্দুল্লাহ।
জম্মু, কাশ্মীর ও লাদাখের ছয়টি আসনের মধ্যে ন্যাশনাল কনফারেন্স দুটি আসনে, ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) দুটি আসনে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা দুটি করে আসনে এগিয়ে রয়েছে।
বেআইনী কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইনের (ইউএপিএ) মামলায় বর্তমানে তিহার জেলে বন্দি আবদুল রশিদ। জেলে থেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন তিনি। তার হয়ে ভোটের প্রচার চালান তার ছেলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র আবরার রশিদ।
রশিদ ২ লাখ ৯১ হাজার ৬১০ ভোট পেয়েছেন। অন্যদিকে, আব্দুল্লাহ ১ লাখ ৫৬ হাজার ৯০৫ ভোট পেয়েন। এছাড়া ৯৮ হাজার ৬০৩ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন পিপলস কনফারেন্সের চেয়ারম্যান সাজ্জাদ লোন।
অপরদিকে, অনন্তনাগ-রাজৌরি লোকসভা কেন্দ্রে ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রার্থী মিয়া আলতাফের চেয়ে ২২২,৮৩১ ভোটে পিছিয়ে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি।
নিজের পরাজয় স্বীকার করে নিয়ে এক্সে মুফতি লিখেছেন, ‘জনগণের রায়কে সম্মান জানিয়ে আমি আমার দলের কর্মী ও নেতাদের সমস্ত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও তাদের কঠোর পরিশ্রম ও সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানাই। যারা আমাকে ভোট দিয়েছেন তাদের প্রতি আমার গভীর কৃতজ্ঞতা।
‘জয়-পরাজয় খেলারই অংশ। এটি আমাদের পথ থেকে বিরত রাখতে পারবে না। জয়ের জন্য মিয়া সাহেবকে অভিনন্দন।’
২০১৯ সালের অগস্টে কাশ্মীরে বিশেষ মর্যাদার অবলুপ্তি ঘটায় বিজেপিশাসিত ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। সেসময় স্থানীয় নেতাদের ‘গৃহবন্দি’ করে রাখার অভিযোগ ওঠে।
সম্প্রতি জম্মু ও কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।
আনন্দবাজারের তথ্যানুযায়ী, সাবেক জম্মু ও কাশ্মীরে ছিল মোট ছয়টি লোকসভা আসন। বর্তমানে লাদাখ পৃথক হয়ে যাওয়ায় আসনের সংখ্যা পাঁচটি। এর মধ্যে তিনটি আসন কাশ্মীর উপত্যকায়। দুটি আসন জম্মুতে। অবশ্য আসন পুনর্বিন্যাসের পর কাশ্মীরের সাবেক অনন্তনাগ আসনটির মধ্যে ঢুকেছে জম্মুর বিস্তীর্ণ একটি অংশ। আসনটির নতুন নাম হয়েছে অনন্তনাগ-রাজৌরি। পুনর্গঠিত হয়েছে শ্রীনগর এবং বারামুলা আসনও।