বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় সিডনির হামলা

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ১৩ এপ্রিল, ২০২৪ ১৯:৩৫

প্রত্যক্ষদর্শী হুমা হুসাইনি বলেন, ‘এর মধ্যে হঠাৎ গুলির আওয়াজ পাই। আমি তখন শেষ! ভেবেছিলাম, ওর কাছে পিস্তলও আছে।’

ঘড়িতে তখন তিনটা বেজে কিছু বেশি। সিডনির ওয়েস্টফিল্ড বন্ডি জংশন শপিং মলে তখন লোকে লোকারণ্য। হঠাৎ করেই শোরগোল, সেইসঙ্গে শপিং মল থেকে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের হুমমুড়িয়ে বের হয়ে আসতে দেখা গেল। জানা গেল, ভেতরে ছুরি নিয়ে হামলা চালিয়েছেন এক ব্যক্তি।

প্রত্যক্ষদর্শী দোকানকর্মী রাশদান আকাশাহ বিবিসিকে বলেন, ‘ছুরি ধরে থাকা ব্যক্তি চলন্ত সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠছিল। সেসময় একটি রড দিয়ে আরেক যুবক তাকে সিঁড়ি থেকে নামানোর চেষ্টা করছিলেন।

ক্রোতাদের নিরাপত্তায় তাদের দোকানের মধ্যে ঢুকতে সাহায্য করেন রাশদান। ছবি: বিবিসি

‘সঙ্গে সঙ্গে আমি দোকানের সিইওকে দোকানের শাটার নামানোর অনুমতি দিতে অনুরোধ করি। ওই লোকটি হামলা শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে চারদিকে দৌড়াদৌড়ি শুরু হয়ে যায় আর এসব হচ্ছিল আমাদের দোকানের সামনেই।’

শপিং মল থেকে বের হয়ে একজন বলেন, ‘আমি তাকে (হামলাকারীকে) পুরোপুরি দেখিনি। কোনোমতে প্রাণ নিয়ে বের হয়ে এসেছি।

‘এটা একেবারে পাগলামি। মনে হচ্ছিল, প্রাণটা বুঝি আজকেই গেল।’

আরেকজন বলেন, ‘ছুরি দিতে আঘাত করার সঙ্গে সঙ্গে একজন লুটিয়ে পড়ে। তারপর আমিও প্রাণভয়ে দৌড় দেই।’

ওলিন্ডা নেমার নামের এক যুবতী হামলাকারীকে সরে যেতে বাধ্য করেন। তার কথায়, ‘আমি তাকে কাউকে আঘাত করতে দেখিনি। তবে দেখলাম যে সে পালাচ্ছে।

একটি দোকানের মধ্যে ঢুকে প্রাণ রক্ষা করেন ওলিন্ডা।

‘প্রথমে আমিও বুঝতে পারিনি ঘটনাটি কী ঘটেছে। ভেতরের লোকজন চিৎকার করছিল আর পালাচ্ছিল। তাই আমিও দৌড় দেই।

‘দৌড় দিয়ে এক দোকানে ঢুকে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে তারা দরজা বন্ধ করে দেয়। সেখানে আরও অনেকে ছিল। কেউ কেউ পুলিশে ফোন করছিল। ফোন করার দশ মিনিটের মধ্যে পুলিশ চলে আসে।’

পুরো ঘটনার সময় ৪৫ মিনিট ধরে একটি দোকানের চেঞ্জ রুমে লুকিয়ে ছিলেন হুমা হুসাইনি ও মোহাম্মদ নাভিদ।

কাঁপতে কাঁপতে বিবিসিকে হুমা বলেন, ‘আমার এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না! ওর (হামলাকারীর) হাতে বিশাল বড় একটি ছুরি ছিল, প্রায় এক হাত হবে। আমি ওর খুব কাছেই ছিলাম।

‘আর ওর পেছনে দুই জন অল্পবয়সী নারী মেঝেতে পড়ে ছিলেন। একজন ওঠার চেষ্টা করলেও অন্যজন নিথর ছিলেন।’

পুরো ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন হুমা হুসাইনি (বাঁয়ে) ও মোহাম্মদ নাভিদ।

এর মধ্যেই পুলিশ এসে হামলাকারীকে গুলি করে। তবে বিষয়টি বুঝতে না পেরে আরও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন হুমা।

তিনি বলেন, ‘এর মধ্যে হঠাৎ গুলির আওয়াজ পাই। আমি তখন শেষ! ভেবেছিলাম, ওর কাছে পিস্তলও আছে। পরে বুঝতে পারি যে, পুলিশ ওই ব্যক্তিকে গুলি করেছে।’

ঘটনার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ এসে ওই ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করে। এক নারী পুলিশের গুলিতে হামলাকারী নিহত হন, যাকে স্থানীয় গণমাধ্যমে ‘হিরো’র তকমা দেয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ছয়জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন অন্তত আটজন, যাদের মধ্যে নয় মাস বয়সী এক শিশু গুরুতর আহত হয়েছে। শিশুটির মা অবশ্য প্রাণ হারিয়েছেন।

একাই ওই ব্যক্তি ঘটনাটি ঘটিয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে জানিয়েছে নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশ।

এ হামলার উদ্দেশ্য সম্পর্কে এখনও স্পষ্ট হতে না পারলেও ঘটনার পুনরাবৃত্তির কোনো আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশের সহকারী কমিশনার অ্যান্থনি কুক।

এ বিভাগের আরো খবর