বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বড়দিনে বেথলেহ্যামে কবরের নীরবতা

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৮:২৩

বেথলেহ্যামের অনেকেরই আত্মীয়তার সম্পর্ক থাকায় গাজায় মানুষের মৃত্যু ও দুর্দশার কারণে যিশুর জন্মস্থান হিসেবে পরিচিত এই জনপদে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বেথলেহ্যামের ভেতরের এলাকাগুলোতে বড়দিনের সাজসজ্জার উপকরণগুলোও সরিয়ে ফেলা হয়েছে। কুচকাওয়াজ ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলো বাতিল করা হয়েছে। শহরের কেন্দ্রে ম্যাংগার স্কয়ারের ঐতিহ্যবাহী বিশালাকার ক্রিসমাস ট্রিগুলোও নেই।

যিশুর জন্মস্থান হিসেবে পরিচিত বেথলেহ্যাম। ক্রিসমাসের এই সময়ে ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীর বরাবরই পর্যটকের পদচারণায় মুখর থাকে। কিন্তু এবারের চিত্র একেবারেই উল্টো। গাজায় ইসরায়েলের চলমান হামলা পুরো জনপদে এখন কবরের নীরবতা।

স্থানীয় নেতারা প্যালেস্টাইনের বাসিন্দাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশের উদ্দেশ্যে উৎসব বা অনুষ্ঠানের আয়োজন পিছিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় এখনও ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে প্রচণ্ড লড়াই চলছে।

হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলা ও স্থল অভিযানের কারণে ২০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। আর প্রায় ৮৫ শতাংশ বাসিন্দা বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

বেথলেহ্যামের অনেকেরই আত্মীয়তার সম্পর্ক থাকায় গাজায় মানুষের মৃত্যু ও দুর্দশার কারণে যিশুর জন্মস্থান হিসেবে পরিচিত এই এলাকাটিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

বেথলেহ্যামের ভেতরের এলাকাগুলোতে সাজ-সজ্জার উপকরণগুলোও সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এখানকার কুচকাওয়াজ ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলো বাতিল করা হয়েছে। শহরের কেন্দ্রে ম্যাংগার স্কয়ারের ঐতিহ্যবাহী বিশালাকার ক্রিসমাস ট্রিগুলোও নেই।

জেরুজালেম থেকে ৮ কিলোমিটার দক্ষিণের জনপদ বেথলেহ্যামে ভ্রমণ করা সহজ নয়। ইসরায়েলের তৈরি করা পশ্চিম তীরের দেয়াল ও শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ইসরায়েলি সেনারা চেকপোস্ট বসানোয় সেখানে যাতায়াতে স্থানে স্থানে বাধার মুখে পড়তে হয়। বর্তমানে সেই অবস্থার চরম অবনতি ঘটেছে।

হামাসের ৭ অক্টোবর হামলার পর বেথলেহ্যামসহ পশ্চিম তীরের অন্য শহরগুলোতে সাধারণ মানুষের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ইসরায়েল। কেবল ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের শহরটিতে ঢোকা ও বের হওয়ার অনুমতি রয়েছে।

প্যালেস্টেনিয়ান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৩০০ জন নিহত হয়েছেন।

বেথলেহ্যামের কাছে আল শাওয়াওরা নামক গ্রামের বাসিন্দা আলি থাবেত সিএনএনকে বলেন, ‘আমার ছেলে আমাকে জিজ্ঞেস করেছে- এ বছর এখানে কেন কোনো ক্রিসমাস ট্রি নেই। আমি বুঝতে পারছি না তাকে কিভাবে এটা বুঝিয়ে বলব।’

তিনি জানান, বেথলেহ্যামের ক্রিশ্চিয়ান ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে সুসম্পর্কের কারণে তারা প্রতি ক্রিসমাসে বেথলেহ্যাম ভ্রমণে যান।

তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের উৎসবে যাই ও তারা আমাদের উৎসবে আসে। তবে এবারের ছুটির মৌসুমটি খুবই খারাপ।’

করোনা মহামারির দুর্ভোগ ও ভ্রমণ বিধিনিষেধ শেষ হওয়ার পর এখানকার ব্যবসা ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে এখানে পর্যটক শূন্যতার কারণে বেশিরভাগ দোকান ও রেস্তোরাঁ বন্ধ হয়ে গেছে।

বেথলেহ্যামের একজন দোকান মালিক রনি তাবাশ জানান, সেখানকার অর্থনীতি নির্ভর করে মূলত তীর্থযাত্রী ও পর্যটকদের ওপর। খোদাই করা জলপাই কাঠের স্যুভেনির ছিল তাবাশের দোকানে। তিনি দক্ষ কারিগরদের তৈরি পণ্যগুলো বিক্রির আশা নিয়ে ক্রেতার অপেক্ষা করছিলেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা এমন ক্রিসমাস কখনও দেখিনি। সত্যি কথা বলতে, গত তিন মাস ধরে আমাদের কোনো বেচাবিক্রি নেই।’

প্যালেস্টেনিয়ান এলাকাগুলোর মধ্যে প্রথমবার বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পাওয়া চার্চ অফ নেটিভিটিও খালি অবস্থায় পড়ে আছে। স্বাভাবিক সময়ে এই স্থানটি অসংখ্য তীর্থযাত্রীর পদচারণায় মুখর থাকে।

চার্চটির গ্রিক অর্থোডক্স প্রিস্ট ফাদার স্পিরিডন স্যামুর বলেন, ‘আমি চার্চটিকে কখনও এমন অবস্থায় দেখিনি।

‘ক্রিসমাস হলো আনন্দ, ভালোবাসা ও শান্তি। আমাদের কোনো শান্তি নেই। আমাদের কোনো আনন্দ নেই। পরিস্থিতি এখন আমাদের নাগালের বাইরে চলে গেছে।’

এ বিভাগের আরো খবর