বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বন্ধ হয়ে গেল গাজার আল শিফা হাসপাতাল, নেমেছে মৃত্যুর মিছিল

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ১৩ নভেম্বর, ২০২৩ ২১:৩৪

ইসরায়েলি বাহিনীর দাবি, ‘হাসপাতালের নিচে হামাস তাদের একটি কমান্ড সেন্টার স্থাপন করে সেখান থেকে কার্যক্রম চালাচ্ছে।’ তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মন্তব্য, ‘এই দাবি পুরোপুরি মিথ্যা ও বানোয়াট।’

জ্বালানির অভাবে গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল শিফার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে সংস্থাটি বলছে, হাসপাতালের ভেতরে অন্তত ২ হাজার ৩০০ রোগী রয়েছে। এদের মধ্যে নবজাতক রয়েছে ৩৬টি যাদের নিবিড় পরিচর্যা প্রয়োজন। এই শিশুরা সবচেয়ে বেশি মৃত্যুঝুঁকিতে আছে। ইতোমধ্যে ৬ নবজাতক মারা গেছে।

এখনও থেমে থেমে ইসরায়েলের বোমা হামলা চলছে হাসপাতালটিতে। ফলে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে আল শিফা।

ইসরায়েলি বাহিনীর দাবি, ‘হাসপাতালের নিচে হামাস তাদের একটি কমান্ড সেন্টার স্থাপন করে সেখান থেকে কার্যক্রম চালাচ্ছে।’ তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মন্তব্য, ‘এই দাবি পুরোপুরি মিথ্যা ও বানোয়াট।’

হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান ড. মারওয়ান আবু সাদা বলেন, ‘আমরা বেসামরিক নাগরিক। আমাদের এখানে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, রোগী আর আছে বাস্তুচ্যুত মানুষের হাহাকার। আর কিছুই নেই এখানে।’

যদিও ইসরায়েলি বাহিনী বারবার বলছে যে, গুরুতর অসুস্থ শিশুদের তারা নিরাপদ হাসপাতালে সরিয়ে নিতে চায়, তবে বাস্তবে এই সরিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়াটি খুবই জটিল।

গত রোববার এক বিবৃতিতে একটি সাহায্য সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেলানি ওয়ার্ড বলেন, ‘যেখানে হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স ঢোকার মতো অবস্থাই নেই, সেখানে বিশেষ ব্যবস্থা ছাড়া কীভাবে এই গুরুতর অসুস্থ শিশুদের সরানো সম্ভব? এই শিশুগুলোকে বাঁচানোর একটাই মাত্র নিরাপদ বিকল্প রয়েছে, আর তা হলো ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করা আর হাসপাতালে পানি ও জ্বালানি সরবরাহ স্বাভাবিক করা। সেই সঙ্গে শিশুদের বাবা-মাদের তাদের কাছে রাখা।’

একটি দাতব্য সংস্থার হয়ে আল শিফা হাসপাতালে কাজ করছিলেন রয়েল লিভারপুল হাসপাতালের চিকিৎসক আব্দুল কাদির হাম্মাদ। ইসরায়েলি হামলা শুরু হলে সেখানে আটকা পড়েন তিনি। সম্প্রতি লিভারপুলে ফিরে গিয়ে হাম্মাদ বলেন, ‘হাসপাতালে এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হবে তা জানাই ছিল। গত দুই-তিন সপ্তাহ ধরেই জাতিসংঘ বলে আসছিল যে পানি ও জ্বালানির অভাবে অপারেশনসহ কোনো সেবাই রোগীদের দেয়া সম্ভব হবে না হাসপাতালে।’

বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘চিকিৎসকদের এখন আর কিছুই করার নেই সেখানে। তাদের চোখের সামনে রোগী ছটফট করতে করতে মারা যাচ্ছে। আর তারা অসহায় হয়ে তা দেখছেন কেবল।’

মুহুর্মুহু বোমা হামলায় সেখানে তিনজন নার্সও নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। সেই সঙ্গে হাসপাতালের অক্সিজেন উৎপাদন সিস্টেম, পানির ট্যাংকসহ সব ব্যবস্থাই ভেঙে পড়েছে।

এর পরও ইসরায়েলের দাবি, তারা হাসপাতালের আশপাশে হামলা চালিয়েছে, হাসপাতালে নয়।

নবজাতকসহ ১৫ জনের মৃত্যু

জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হওয়ার পর আল শিফা হাসপাতালে ৬ অপরিণত নবজাতকসহ ১৫ রোগী ইতোমধ্যেই মারা গেছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গ্যাব্রিয়াসুস এ অবস্থাকে ‘করুণ ও বিপজ্জনক’ বলে অভিহিত করেছেন।

গত এক মাসের বেশি সময় ধরে চলা এ হামলায় অন্তত ১১ হাজার ১০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে চার হাজারই শিশু।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, আল শিফা ও আল কুদস হাসপাতালের পাশাপাশি কামাল আদওয়ান হাসপাতালেও জ্বালানির অভাবে সেবা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।

কামাল আদওয়ান হাসপাতালের প্রধান আহমেদ আল-কাহলুত জানিয়েছেন, সেখানে শত শত রোগী ছাড়াও পাঁচ হাজারের বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষ রয়েছেন। কিন্তু ইসরায়েলি বোমাবর্ষণের ভয়ে কেউ বাইরে যেতে পারছে না।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, হাসপাতাল থেকে কেউ বের হলেই ইসরায়েলি স্নাইপাররা গুলি করছে। এতে বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছেন।

এ বিভাগের আরো খবর