পাকিস্তানে সাধারণ নিবার্চনের প্রাথমিক তারিখ ঘোষণা করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন।
দেশটির সুপ্রিম কোর্টকে বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির ১১ তারিখে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
নির্ধারিত সময়ে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন নিয়ে আদালতে করা পিটিশনের শুনানী শেষে নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী সাজিল সোয়াতি বিচারকদের এ তারিখ জানান বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে জিও নিউজ।
প্রধান বিচারপতিসহ তিন সদস্য বিশিষ্ট দেশটির শীর্ষ আলাদতের বিচারক বেঞ্চকে তিনি বলেন, ‘৩০ নভেম্বরে শুরু হওয়া নির্বাচনী আসনগুলোর সীমানা নির্ধারণের পর সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণের সম্পর্কে তিনি আদালতকে আরও বলেন, ‘সীমানা নির্ধারণের বিষয়ে চূড়ান্ত তালিকাটি প্রস্তুত হতে আরও ৩ থেকে ৫ দিন লাগতে পারে কমিশনের। চলতি বছরের ডিসেম্বরের ৫ তারিখ থেকে সম্ভাব্য ৫৪ দিন ধরলে জানুয়ারির ২৯ তারিখে সকল কাজ শেষ হওয়া সম্ভব। এরপরই সামনের বছরের শুরুতে ফেব্রুয়ারির ১১ তারিখে নির্বাচনের আয়োজন করবে কমিশন।’
ভোটারদের অংশগ্রহণ বাড়াতে ও ভোটদানকে সহজ করতে নির্বাচনের দিনটি রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাখা হয়েছে বলে আদালতকে জানান এ আইনজীবী।
এ সময় প্রধান বিচারপতি দেশটির প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এ বিষয়ে আলোচনা করতে বৈঠকে বসার পরামর্শ দেন এ আইনজীবীকে।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘একবার নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হয়ে গেলে তা আর পেছানোর সুযোগ থাকবে না।’
নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তারিখটি আলাদত ‘শ্বেতপত্রে’ লিখে ফেলবে বলে আইনজীবীকে সতর্ক করেন।
এ সময় আলাদত প্রধান আইন কর্মকর্তাকে দেশটির প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর জন্য একটি আলোচনা অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দেন। বৈঠকের পর প্রেসিডেন্ট ও কমিশনার নির্বাচনের বিষয়ে আলাদতকে আনুষ্ঠিনভাবে তারিখ জানাবে বলে আশা প্রকাশ করেছে আদালত।
প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বৈঠকের পর এ বিষয়ে শুক্রবার বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানিয়েছে আলাদত। নির্বাচনের তারিখ চূড়ান্ত করতে যেকোনো সমস্যায় সহযোগিতার আশ্বাস দেয় আদালত।
দেশটির স্বাধীনতার পর থেকেই সাধারণ নির্বাচন বেশ অনিয়মিত। অধিকাংশ সময় সামরিক শাসণে থাকা দেশটিতে প্রথম সাধারণ নির্বাচন হয় প্রায় ২৩ বছর পরে অর্থ্যাৎ ১৯৭০ সালের ডিসেম্বরে। কিন্তু ক্ষমতাসীন জান্তারা ক্ষমতা হস্তান্তর না করে নির্বাচনে বিজয়ী আওয়ামী লীগ ও পূর্ব পাকিস্তানে সামরিক আগ্রাসন চালায় এবং পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন বাংলাদেশে রুপান্তরিত হয়।
এছাড়াও দেশটির সামরিক বাহিনী ও আদালতের কারণে আজ পর্যন্ত কোনো নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতার পূর্ণ মেয়াদ শেষ করতে পারেন নি। সর্বশেষ সাবেক বিশ্বকাপ জয়ী ক্রিকেটার ইমরান খানকে প্রধানমন্ত্রীর পূর্ণ মেয়াদ শেষ না করেই দেশটির ক্ষমতা ছাড়তে হয়।