যুক্তরাজ্যে ঊর্ধ্বতনের যৌন নিপীড়নে মানসিক পীড়া থেকে ১৯ বছর বয়সী নারী এক সৈনিক আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করছেন তদন্তকারীরা।
দেশটির সেনাবাহিনীর তদন্ত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
সেনাবাহিনীর তদন্তে থেকে জানা যায়, ১৯ বছর বয়সী নারী সৈনিক রয়্যাল আর্টিলারি গানার জেসলি বেক তার ঊর্ধ্বতন একজনের মাধ্যমে যৌন নিপীড়নের শিকার হন।
উইল্টশায়ারের লারখিল ক্যাম্পে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় বেককে।
এ নারী সৈনিকের মৃত্যু নিয়ে করা তদন্ত প্রতিবেদন বুধবার প্রকাশ হয়। এতে বলা হয়, মৃত্যুর আগের দুই মাস বেককে যৌন নিপীড়ন করা হয়েছে, যা তার মানসিক স্থিতি ও সুস্থতার ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে।
আদালতের দেয়া পরবর্তী তারিখে বেককে যৌন হেনস্তাকারীর বিষয়ে তদন্ত শুরু হবে।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, বেককে তার ঊর্ধ্বতন একজনই যৌন নিপীড়ন করেছিলেন।
প্রতিবেদনে হেনস্তাকারীর নাম প্রকাশ করা হয়নি। এতে বলা হয়, হেনস্তাকারী বেককে ২০২১ সালের অক্টোবরে এক হাজারেরও বেশি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ ও ভয়েস মেইল পাঠান। পরের মাসে তার মেসেজের পরিমাণ বেড়ে হয় সাড়ে তিন হাজার।
প্রতিবেদনে স্পষ্ট করে বলা হয়, বেক এ সম্পর্কের বিষয়ে আগ্রহী ছিলেন না এবং ওই হেনস্তাকারীকে তা জানিয়ে দিয়েছিলেন। এমনকি তার মৃত্যুর আগে বসকে মেসেজে বলেছিলেন, ‘আমি আর এসব নিতে পারছি না। বিষয়গুলো আমাকে ভারাক্রান্ত করছে।’
হেনস্তাকারী তাকে ও বেককে যেন একসঙ্গে কাজ দেয়া হয়, তা নিশ্চিত করতেন।
এসব ঘটনার একপর্যায়ে বেক তার পরিবারকে বিষয়গুলো জানান। বেকের মা লেইহান ম্যাকক্রিডি জানান, তার মেয়ে ১৬ বছর বয়সে সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়।
তিনি বলেন, ‘আপনাদের কাছে হয়তো মনে হতে পারে আমার মেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই লোককে ব্লক করে দিলেই পারত, কিন্তু একবার ভেবে দেখবেন, নিজের বসকে কীভাবে এত সহজে ব্লক করে দেয়া যায়!’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার মেয়ে ওই হেনস্তাকারীর আচরণে প্রতিনিয়ত হতাশ হয়ে পড়ছিল। সে যেখানে কাজ করতে এত ভালবাসত, সেই কাজেই সে আর মন দিতে পারছিল না।’
বেক তার অন্য এক সিনিয়রের মাধ্যমে যৌন নিপীড়নের কথাও জানিয়েছিলেন পরিবারকে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সেনাবাহিনীর চেইন অফ কমান্ড ঘটনাটিকে গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে, কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে বোঝা যায়, এ বিষয়ে জানানোর সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি।
সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বলেন, ‘এই কঠিন সময়ে বেকের পরিবার ও বন্ধুদের প্রতি আমরা সহানুভূতিশীল। আমরা যত দ্রুত সম্ভব এ ঘটনার সঠিক বিচার করার চেষ্টা করছি।’