বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কোরআন অবমাননা: সুইডেনে বাড়ছে জঙ্গি হামলার শঙ্কা

হামলার আশঙ্কায় ইতোমধ্যে নিজ দেশের নাগরিকদের সুইডেন ও ডেনমার্ক ভ্রমণে সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য।

সম্প্রতি মুসলিমদের পবিত্র গ্রন্থ কোরআন পোড়ানো এবং এর বিরুদ্ধে সুইডেন সরকারের ‘যথাযথ’ পদক্ষেপ না নেয়ার ঘটনায় দেশটিতে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা বেড়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সংবাদপত্র দাগেন্স নিহেতার।

বৃহস্পতিবার ওই সংবাদপত্রের বরাতে রয়টার্স জানায়, কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় সুইডেনে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা স্মরণকালের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।

সুইডেনের নিরাপত্তা পরিষেবা সংস্থা (সাপো, SAPO) দেশটিতে জঙ্গি হামলা নিয়ে হুমকির মাত্রা ৫-এর মধ্যে ৪-এ উন্নীত করেছে। কোরআন পোড়ানোর ঘটনার আগে এই মাত্রার অবস্থান ছিল ৩-এ।

এক বিবৃতিতে সাপো বলছে, সুইডেনে হামলার শঙ্কা ধীরে ধীরে বাড়ছে। তবে সম্প্রতি ঘটা ইসলামবিদ্বেষী ঘটনাগুলো এর গতি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

ওই ঘটনাগুলোর পর থেকে সুইডেন সন্ত্রাসী হামলার মূল লক্ষ্যে পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছে সাপো-র বরাতে জানিয়েছে আল-জাজিরা

বিশ্বের উদারপন্থী দেশগুলো মধ্যে সুইডেন ও ডেনমার্কের অবস্থান সবার উপরে। অনেক আগে থেকেই ধর্মসহ যেকোনো মতবাদের উন্মুক্ত সমালোচনা করার অনুমতি দিয়েছে দেশ দুটি।

তবে গত ২৮ জুন ঈদুল আজহার দিন সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমের প্রধান মসজিদের বাইরে দুই যুবক পবিত্র কোনআন পুড়িয়ে বিক্ষোভের পর ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে গোটা মুসলিম বিশ্ব।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবর থেকে জানা যায়, ইরাক থেকে আসা অভিবাসী সালমান মোমিকা ও তার সঙ্গে থাকা আরেকজন যুবক ওই কাজ করেন।

সুইডেনের সরকারি টেলিভিশন এসটিভি সেসময় জানায়, কোরআন নিষিদ্ধের দাবিতে ওই কাজ করেন তারা। এর জন্য তারা আদালতে আবেদন করলে দেশটির আদালত তাদের অনুমতি দেয়। তারপর ঘটনার দিন পুলিশের উপস্থিতিতে তারা কোরআন পুড়িয়ে প্রতিবাদ করেন। প্রথমে তারা কোরআনের পাতা ছেঁড়েন, তারপর তাতে আগুন দেন।

সালমানকে এ ঘটনায় সহযোগিতা করেন ওই ব্যক্তি। প্রায় দুই শ’ মানুষ এ ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী হয়।

ওই ঘটনায় আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে সুইডেন সরকার।

মুসলিম বিশ্বের দাবি, এ ঘটনা তাদের বিশ্বাসের ওপর আঘাত। ব্যক্তির অধিকার কতদূর পর্যন্ত মেনে নেয়া হবে- এ বিষয়ে আলোচনা হওয়া প্রয়োজন।

প্রতিবাদস্বরূপ কয়েকটি মুসলিম অধ্যুষিত দেশে সুইডেন ও ডেনমার্কের দূতাবাসে হামলার খবরও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে আসে।

কোরআন অবমাননার প্রতিবাদে গত ১৯ জুলাই ইরাকে সুইডেনের দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ করে দেশটির মুসলিম নাগরিকরা। ১ আগস্ট তুরস্কের সুইডিশ দূতাবাসের এক কর্মী গুলিবিদ্ধ হন। গত ৯ আগস্ট লেবাননে দেশটির দূতাবাসে হামলার চেষ্টা চালায় আততায়ীরা।

তবে ঘটনাটির পর তাৎক্ষণিক নিন্দা জানালেও নাগরিকদের মতপ্রকাশ ও বিক্ষোভের স্বাধীনতার সাংবিধানিক অধিকারকে সুরক্ষিত রাখার প্রত্যয়ও ব্যক্ত করে সুইডেন সরকার।

এক বিবৃতিতে দেশটির সরকার বলে, সংবিধানে সবাইকে বিক্ষোভ দেখানোর অধিকার দেয়া হয়েছে। কোরআন পুড়িয়ে যারা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, তাদেরও সাংবিধানিক অধিকার আছে। সে কারণেই তাদের বাধা দেয়া হয়নি।

হামলার আশঙ্কা বেড়ে যাওয়ায় ইতোমধ্যে নিজ দেশের নাগরিকদের সুইডেন ও ডেনমার্ক ভ্রমণে সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য।

তবে হামলার ঝুঁকি কমাতে ইতোমধ্যে নিজেদের সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছে সুইডেন ও ডেনমার্ক।

দেশের জাতীয় পর্যায়ের সংবাদমাধ্যম ডিএয়া-তে (DR) দেয়া এক স্বাক্ষাতকারে ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন বলেছেন, ‘ধর্মগ্রন্থ পোড়ানো উচিত নয়। কেউ যদি জনসম্মূখে বাইবেলে আগুন দেয়, তখন বিষয়টি তো নেতিবাচকভাবেই দেখা হবে। তেমনই ইহুদীদের ধর্মগ্রন্থ তোরাহ কেউ পোড়াবে, সেটিও আমি সমর্থন করি না।’

এ বিভাগের আরো খবর