মদ পানের পর ভারসাম্য হারিয়ে ফ্রান্সের বিখ্যাত আইফেল টাওয়ারেই ঘুমিয়ে পড়লেন আমেরিকার দুই পর্যটক।
স্থানীয় সময় সোমবারের এ ঘটনায় রীতিমতো হুলস্থুল পড়ে গেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
পুলিশ বলছে, ওই দুই ব্যক্তি রোববার রাতে আইফেল টাওয়ার চত্বরে ঢোকেন। সেখানকার রেস্তরাঁয় মদ্যপান করেন তারা। এর পরই মত্ত অবস্থায় ওই দুজন টাওয়ারের উপরে ওঠেন বলে অনুমান।
টাওয়ারের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্তরের মধ্যে সাধারণভাবে জনসাধারণের জন্য বন্ধ একটি এলাকায় পাওয়া যায় তাদের। সকালে আইফেল টাওয়ারের মধ্যে দুজনকে শুয়ে থাকতে দেখেন পর্যটকদের একাংশ। পরে পুলিশ ও দমকলকে খবর দেয়া হয়। দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন তারা।
তবে ওই দুই ব্যক্তিকে টাওয়ার থেকে নামাতে রীতিমতো হিমশিম থেকে হয় ফরাসি পুলিশকে। নীচে জাল পেতে নানাভাবে তাদের নামানোর চেষ্টা চালান তারা। শেষে উপর থেকে জালের উপর ঝাঁপ দেন ওই দুজন।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এর পর ওই দুজনকে গ্রেপ্তার করে প্যারিস পুলিশের সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। তারা মাতাল অবস্থায় টাওয়ারের উপরে ওঠেন বলে পুলিশের ধারণা।
আইফেল টাওয়ার চত্বরে সব সময়ই পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে। ওই এলাকায় থাকেন নিরাপত্তারক্ষীরাও। তা সত্ত্বেও কীভাবে ওই দুজন টাওয়ারের উপরে উঠলেন? তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
বিবিসি বলছে, সম্প্রতি বিস্ফোরণের হুমকি দিয়ে ফোন করায় আইফেল টাওয়ার চত্বর ফাঁকা করতে হতে হয়। টাওয়ারের তিনটি তলায় যে রেস্তরাঁগুলো রয়েছে সেগুলোও সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয় পুলিশ। পুরো এলাকা ঘিরে ফেলে দীর্ঘ সময় ধরে তল্লাশি চালায় বোম স্কোয়াড। যদিও বিস্ফোরক বা বোমা জাতীয় কিছু সেখান থেকে।
মধ্য প্যারিসের ঐতিহ্যশালী আইফেল টাওয়ারের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে সেতি নামের একটি সংস্থা। সোমবারের ঘটনার পর বিবৃতি দেন সংস্থার মুখপাত্র। তার কথায়, বারবার আইফেল টাওয়ারের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এটা সত্যিই দুঃখের।
ফরাসি বিপ্লবের প্রায় শতবর্ষের মাথায় ১৮৮৭ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয় আইফেল টাওয়ারের নির্মাণ কাজ। ১৮৮৯ সালের ৩১ মার্চ এই মিনার তৈরির কাজ শেষ করে ফরাসি প্রশাসন।
জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আইফেল টাওয়ার উদ্বোধন করা হয়েছিল। যাতে ভিড় করেন প্রায় ২০ লাখ মানুষ। বর্তমানে এই ঐতিহ্যবাহী মিনার দেখতে বছরে প্রায় ৭০ লাখ পর্যটকের পা পড়ে প্যারিসে।