উষ্ণতম জুলাইয়ের মুখোমুখি হলো গ্রিস। ৫০ বছরে এমন তাপদাহের শিকার হয়নি দেশটি।
গ্রিসের আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাসে তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ১১৩ ডিগ্রি ফারেনহাইটের ওপরে যাওয়ার তথ্য দেয়া হয়েছে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানা যায়, দাবদাহের পাশাপাশি দাবানল নিয়ন্ত্রণেও ব্যাস্ত সেখানকার দমকলবাহিনী।
জরুরি অবস্থা ও নাগরিক সুরক্ষা কর্মকর্তারা দেশজুড়ে দাবানলের উচ্চ ঝুঁকি এবং তাপদাহের বিষয়ে স্থানীয়দের বিনা প্রয়োজনে বাইরে বের না হওয়ার জন্য সতর্ক করছেন।
এএফপি বার্তা সংস্থার উদ্ধৃতি দিয়ে গ্রিসের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারকারী ইআরটির আবহাওয়াবিদ প্যানাজিওটিস জিয়ানোপোলোস বলেছেন, 'গত ৫০ বছরের মধ্যে জুলাই মাসে সবচেয়ে উষ্ণ হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, ‘জুলাইয়ের শেষ পর্যন্ত ছয় থেকে সাত দিনের জন্য এথেন্সের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে থাকতে পারে।’
উত্তর গোলার্ধের কয়েক মিলিয়ন মানুষ এ গ্রীষ্মের তীব্র গরমে ভুগছে। বিশ্ব রেকর্ডে এ গোলার্ধ উষ্ণতম জুলাইয়ের দিকে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।
তাপমাত্রার রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়ায় বিশেষজ্ঞরা এ পরিস্থিতির জন্য জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোকে দায়ী করে জলবায়ু পরিবর্তনের দিকে আঙুল তুলছেন।
তারা জানাচ্ছেন, জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর কারণে বৈশ্বিক উষ্ণতা ধ্বংসাত্মক আবহাওয়ার মূল ভূমিকা পালন করছে।
অপরদিকে দাবদাহ কমছে না যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটির দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে আসন্ন তাবদাহ রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিসের (এনডব্লিউএস) মতে, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে প্রায় ৮০ মিলিয়ন আমেরিকান এ সপ্তাহে ৪১ ডিগ্রি তাপমাত্রার মুখোমুখি হয়েছে এবং এ সপ্তাহের শেষ দিকে তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য ফিনিক্স ও অ্যারিজোনায় তাপমাত্রা ৪৬ ডিগ্রিতে পৌঁছাবে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। বাসসের এক প্রতিবেদন থেকে এমন তথ্য জানা যায়।
গত তিন সপ্তাহ যাবত এখানে তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে।
আশঙ্কা করা হচ্ছে, তাপমাত্রা ১৯১৩ সালের জুলাই মাসে সেট করা রেকর্ড ভেঙে ৫৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি হতে পারে।
নাসার জলবায়ুবিদ গ্যাভিন শ্মিটের তথ্য মতে, জুলাই ২০২৩ সবচেয়ে উষ্ণতম মাস হতে চলেছে। শুধু রেকর্ড শুরু হওয়ার পর থেকে নয়, হাজার হাজার বছর না হলেও শত শত বছরের মধ্যে এটি হবে রেকর্ড তাপমাত্রা।
এল নিনো মধ্য ও পূর্ব গ্রীষ্মমন্ডলীয় প্রশান্তমহাসাগরে সমুদ্র পৃষ্ঠের তাপমাত্রার উষ্ণতার সঙ্গে জড়িত।
গ্যাভিন শ্মিট বলেন, ‘আশা করেছিলাম চরম তাপের প্রবণতা অব্যাহত থাকবে না।’
তিনি আরও জানান ‘বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ অব্যাহত থাকায় এখন আমরা আশঙ্কা করছি এ তাবদাহ অব্যাহত থাকবে।’