ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে ভারি বৃষ্টিতে তিন দিনে কমপক্ষে ২৮ জনের প্রাণহানি হয়েছে।
স্থানীয় সময় সোমবার এনডিটিভির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, টানা বৃষ্টিতে ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় অনেক নগর ও শহরের সড়ক ও ভবনে হাঁটু পানি জমে গেছে।
এমন বাস্তবতায় ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, জম্মু-কাশ্মীর, রাজস্থান, দিল্লি ও সংলগ্ন এলাকাগুলোতে আগামী কয়েক দিন আরও বৃষ্টিপাতের আভাস দিয়েছে।
অনলাইনে হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড ও দিল্লির বাসিন্দাদের শেয়ার করা ছবিতে দেখা যায়, কাগজের নৌকার মতো ভেসে যাচ্ছে যানবাহন, আবাসিক এলাকায় ঢুকছে কর্দমাক্ত পানি, উপচে পড়া পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে নদী তীরের বিভিন্ন স্থাপনা।
টানা বৃষ্টিতে হিমাচল প্রদেশে ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা। এতে স্থবির হয়ে গেছে জনজীবন।
রাজ্যের মানালি, কুল্লু, কিন্নুড় ও চাম্বা এলাকায় আকস্মিক বন্যার পানিতে ভেসে গেছে কিছু দোকান ও যানবাহন। পানি বেড়েছে রবি, বিয়াস, সাতলুজ, সোয়ান ও চেনাবের মতো প্রধান নদীগুলোর।
বন্যা পরিস্থিতিতে রাজ্যের বাসিন্দাদের নিরাপদে থাকার আহ্বান জানিয়ে হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখিন্দর সিং সুখু এক ভিডিওবার্তায় বলেন, ‘অতি ভারি বর্ষণের সম্ভাবনা থাকায় রাজ্যের সব বাসিন্দাকে অনুরোধ করব, দয়া করে আগামী ২৪ ঘণ্টা বাড়িতে থাকুন। আমরা তিনটি হেল্পলাইন ১১০০, ১০৭০, ১০৭৭ চালু করেছি।
‘দুর্যোগে আটকে পড়া যে কারও তথ্য জানাতে আপনারা এসব নম্বরে কল করতে পারেন। সার্বক্ষণিক আপনাদের সেবায় নিয়োজিত আছি।’
রাজ্য সরকারের মন্ত্রী জগৎ সিং নেগি সোমবার বলেন, ‘মূলত সড়ক দুর্ঘটনা ও এ ধরনের কারণে এখন পর্যন্ত ২০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যার কারণে প্রাণহানি এত বেশি নয়।
‘রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় মহাসড়ক, জেলা ও সংযোগ সড়কগুলোসহ ১ হাজার তিন শর বেশি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগামী দুই দিন আমরা উচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকব।’
হিমাচল প্রদেশের পার্শ্ববর্তী উত্তরাখণ্ডেও ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যার খবর পাওয়া গেছে। রাজ্যটিতে নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে।
প্রবল বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা দেখা দেওয়ায় গুরগাঁও ও দিল্লিতে সোমবার সব স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে। যানজট এড়াতে গুরগাঁও শহর কর্তৃপক্ষ করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাসা থেকে কাজের পরামর্শ দিয়েছে।
এদিকে হরিয়ানা রাজ্য সরকার হাথনিকুণ্ড বাঁধ থেকে যমুনা নদীতে এক লাখের বেশি কিউসেক পানি ছেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বন্যাপ্রবণ এলাকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ১৬টি নিয়ন্ত্রণকক্ষ চালু করেছে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল দিল্লি সরকার।