বিজেপি সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ভারতের মণিপুর রাজ্যে আগে থেকেই চলছিল অসন্তোষ। রাজ্যের হাইকোর্টের সাম্প্রতিক নির্দেশ সেই আগুনেই যেন ঘি ঢাললো।
আদালতের নির্দেশের পরপরই বিক্ষোভে উত্তাল পাহাড়বেষ্টিত ভারতের এই রাজ্যটি।
আনন্দবাজার অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে, পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে ইতোমধ্যে সেখানে সেনাবাহিনী নামিয়েছে প্রসাশন; আট জেলায় জারি করা হয়েছে কারফিউ। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ৫ দিনের জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বুধবার রাতে মণিপুরের রাজধানী ইম্ফল, চূড়াচাঁদপুর ও কাংপোকপিতে নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায়। পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাতেই আধাসামরিক বাহিন ও রাইফেলস সদস্যদের রাস্তায় নামায় প্রশাসন।
এদিন সরকারি ভবনগুলোকে লক্ষ্য করে আক্রমণ চালায় বিক্ষোভকারীরা। ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় সেখানকার প্রায় চার হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে সেনাবাহিনী।
এই ঘটনায় আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ভারতের কিংবদন্তি বক্সার মেরি কম। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘আমার রাজ্য জ্বলছে, দয়া করে সাহায্য করুন।’
মণিপুরের বনাঞ্চল ও জলাভূমির ওপর সেখানকার অধিবাসীদের অধিকার কেড়ে নেয়ার অভিযোগে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে বেশ কিছুদিন ধরেই আন্দোলন চলছিল। রাজ্য প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে ‘অনৈতিক’ দাবি করে ও এর প্রতিবাদ জানিয়ে সংহতি মিছিলের ডাক দেয় রাজ্যের জনজাতি ছাত্র ইউনিয়ন (এটিএসইউএম)।
সম্প্রতি নিজেদের উপজাতি হিসেবে তফসিলভুক্ত করার দাবি তুলেছে মণিপুরের মেইতেই সম্প্রদায় । কিন্তু রাজ্যের তফসিলভুক্ত সম্প্রদায়গুলো একযোগে তার বিরোধিতা করে আসছে।
মণিপুর হাইকোর্ট সম্প্রতি মেইতেই সম্প্রদায়ের এই দাবিটি বিবেচনা করার জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেয়। তারপরই নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায় বিভিন্ন এলাকায়।
মণিপুরের প্রায় ৫১ শতাংশ অধিবাসীই মেইতেই সম্প্রদায়ের মানুষ। তফসিলভুক্ত জাতির তকমা না থাকায় সেখানকার পার্বত্য অঞ্চলের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার অনুমতি পান না তারা।
তাদের অভিযোগ, মিয়ানমার ও বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা সেখানে প্রবেশের ফলে তাদের অধিকার খর্ব হচ্ছে।
তবে মেইতেইদের দাবির বিরোধিতা করেছে অন্য তফসিলভুক্ত সম্প্রদায়গুলো।