সুদানে রাজধানী খার্তুমে সামরিক বাহিনীর দুই প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপের মধ্যে লড়াই অব্যাহত থাকায় কূটনীতিক ও নাগরিকদের সরিয়ে নিচ্ছে বেশ কিছু দেশ।
এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী আমেরিকান কূটনীতিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সে দেশ থেকে সরিয়ে নিয়েছে। যুক্তরাজ্য, চীন ও ফ্রান্সের কূটনীতিকদের সামরিক বিমানে করে নিরাপদে সরিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টা করা হচ্ছে।
বিবিসি বলছে, মুসলিমদের ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতরের জন্য একটি যুদ্ধবিরতি করার আহ্বান সত্ত্বেও সহিংসতা থামেনি সুদানে। এ অবস্থাতে পদক্ষেপ নিচ্ছে দেশগুলো।
সুদানের সামরিক নেতৃত্বের দুই অংশের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্বের কারণে গত সপ্তাহে এই সহিংসতা শুরু হয়। এক সপ্তাহ ধরে চলা সহিংসতায় এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৪০০ জন নিহত হয়েছে। খার্তুম শহরে বোমা বিস্ফোরণ, গোলাবর্ষণ ও বন্দুকের গুলিবিনিময় অব্যাহত রয়েছে।
খার্তুমের বাসিন্দারা বলছেন, যে শহরে ঈদের সময়টায় পরিবেশ উৎসবমুখর থাকে, সেখানে এখন বিরাজ করছে ভূতুড়ে পরিবেশ।
সুদানের পার্লামেন্টারি আর্মি র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) জানিয়েছে, স্থানীয় সময় শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকদের সরানোর অভিযানে ছয়টি বিমান ব্যবহার করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তারাও এতে সহায়তা করেছে।
তবে ঠিক কতজনকে সুদান থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে তা এখনও নিশ্চিত নয়। যুক্তরাষ্ট্রও এ ব্যাপারে কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি।
কী নিয়ে সংঘাত
সুদানে কীভাবে বেসামরিক শাসন ফিরিয়ে আনা হবে, মূলত তা নিয়ে দুই ক্ষমতাধর সামরিক অধিনায়কের দ্বন্দ্ব থেকে এই লড়াই চলছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
দেশটিতে বর্তমান সামরিক সরকার চলে মূলত সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের নেতৃত্বে। তার সঙ্গে উপনেতা হিসেবে আছেন আরেকটি আধা-সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) প্রধান মোহাম্মদ হামদান হেমেডটি ডাগালো।
বেসামরিক শাসনে প্রত্যাবর্তনের পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই দুটি বাহিনীকে একীভূত করার কথা। কিন্তু আরএসএফ তাদের বিলুপ্ত করার বিপক্ষে এবং এই পরিকল্পনা থামানোর জন্য তাদের বাহিনীকে রাস্তায় নামায়। এই ঘটনা সেনাবাহিনী এবং আরএসএফের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ লড়াইয়ে রূপ নিয়েছে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার মানুষ- যাদের বেশিরভাগ নারী এবং শিশু, সুদান ছেড়ে পালিয়েছে পাশের দেশে আশ্রয় নেয়ার জন্য।