২০ বছর বয়সী বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী সারাহ ইসলাম মরণোত্তর অঙ্গদান করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন; এবার তার মতোই আরেকজনকে পাওয়া গেল ভারতে। মাত্র ১৭ বছরের ওই শিক্ষার্থী বাবাকে বাঁচাতে দান করলেন যকৃতের অংশ।
কেরালা রাজ্যের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী দেবনন্দা হাইকোর্ট গিয়ে অনুমতি নিয়ে ৯ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালে এই অঙ্গদান প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
বাবাকে নিজের যকৃতের অংশ দান করে এই শিক্ষার্থী এখন ভারতের কনিষ্ঠতম অঙ্গদাতা। প্রশংসায় ভাসছেন তিনি। ৪৮ বছর বয়সী প্রতীশ দেবনন্দার বাবা। তিনি একটি ক্যাফে চালান। তাদের বাড়ি ত্রিশূরে।
ইন্ডিয়া ডটকম বলছে, হঠাতই অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রতীশ। যকৃতে জটিলতা দেখা দেয় তার। সঙ্গে ক্যানসারের উপসর্গ। উপযুক্ত অঙ্গদাতা পাওয়া যাচ্ছিল না। দেবনন্দা ঠিক করে ফেললেন, বাবাকে বাঁচানোর দায়িত্ব নিজেই নেবেন।
তবে অঙ্গ প্রতিস্থাপন আইন ১৯৯৪ অনুযায়ী, অপ্রাপ্তবয়স্ক কেউই অঙ্গদান করতে পারেন না। দেবনন্দা তন্ন তন্ন করে সব সম্ভাবনা খতিয়ে দেখে খুঁজে বের করলেন, অতীতে এক বিশেষ ক্ষেত্রে কেরালা হাইকোর্ট নাবালকের অঙ্গদানে অনুমতি দিয়েছিল।
ওই নজির আশ্রয় করেই আদালতে গেলেন দেবনন্দা। আদালত তার একাগ্রতা দেখে ব্যতিক্রমী অনুমোদন দিল। সেই সঙ্গে প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করার এই উদ্যোগকে প্রশংসা করল।
কোচির রাজাগিরি হাসপাতালে সম্পন্ন হয়েছে এই অঙ্গ প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়া। হাসপাতালের এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
এতে জানানো হয়, রাজাগিরি হাসপাতালের মাল্টি-অরগান ট্রান্সপ্লান্ট সার্ভিসের প্রধান ডা. রামচন্দ্রন নারায়ণ মেনন ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন এবং ট্রান্সপ্লান্ট অ্যানেস্থেটিস্টদের সঙ্গে নিয়ে অস্ত্রোপচার করেন।
অঙ্গদানের প্রস্তুতি হিসেবে ডায়েট শুরু করেন দেবনন্দা। জিম করে তিনি নিজের শরীরকে উপযুক্ত করে গড়ে তোলেন। বাবার প্রতি ভালোবাসার এমন দৃষ্টান্ত দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই অপারেশনে কোনও খরচ নেয়নি।
এক সপ্তাহ পর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন দেবনন্দা। তিনি বলেছেন, ‘নিশ্চিন্ত, গর্বিত, আনন্দিত।’
গত ১৯ জানুয়ারি মরণোত্তর অঙ্গদান করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন ২০ বছর বয়সী বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী সারাহ ইসলাম। তার দুটি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয় দুই নারীর শরীরে। আর কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করা হয় আরও দুজনের চোখে।
পরে নন্দিতা বড়ুয়া নামের এক নারী ও জামাল উদ্দিন নামের একজনেরও অঙ্গদানের খবর পাওয়া যায়।