মুসলিমদের বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অবস্থানের সমালোচনা থাকা বিবিসির ডকুমেন্টারি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদি কোয়েশ্চেন’ শিরোনামের ওই ডকুমেন্টারি সিরিজে ভারতের গুজরাটে ২০০২ সালের দাঙ্গায় মোদির ভূমিকায় নজর দেয়া হয়েছে।
সিরিজের প্রথম অংশ প্রচার হয় গত মঙ্গলবার। দ্বিতীয় অংশ প্রকাশ হওয়ার কথা রয়েছে ২৪ জানুয়ারি।
এতে বিবিসির পক্ষ থেকে বলা হয়, নরেন্দ্র মোদির প্রধানমন্ত্রিত্বের পুরোটা সময় ভারতের মুসলিম জনগোষ্ঠীর প্রতি তার সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ক্রমাগত অভিযোগ এসেছে। এ সিরিজে এসব অভিযোগ অনুসন্ধানের পাশাপাশি মোদির উঠে আসার গল্প তুলে ধরা হয়েছে। একই সঙ্গে ভারতের বৃহত্তম ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রশ্নে মোদির রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে অন্যান্য প্রশ্নের উত্তরও খোঁজা হয়েছে।
সিরিজে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপিতে মোদির উত্থান এবং তার গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।
মোদি ২০০১ সালে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরের বছর রাজ্যে হিন্দু তীর্থযাত্রীদের বহনকারী একটি ট্রেনে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়, যাতে ৫৯ জন নিহত হয় বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে জানানো হয়। মুসলিমদের বিরুদ্ধে এ হামলার অভিযোগে দাঙ্গা শুরু হয়, যাতে দুই হাজারের মতো মানুষ প্রাণ হারান। নিহত ব্যক্তিদের বেশিরভাগই মুসলিম।
এ দাঙ্গা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে না পারার অভিযোগে ব্যাপক সমালোচনার শিকার হয় বিজেপির নেতৃত্বাধীন তৎকালীন সরকার; প্রশ্নবিদ্ধ হয় মোদির ভূমিকা। বিবিসির সিরিজের প্রথম পর্বে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর তৎকালীন ভূমিকায় মূল দৃষ্টি দেয়া হয়েছে।
ওই সিরিজের সমালোচনা করে ভারতীয় বংশোদ্ভূত যুক্তরাজ্যের নাগরিক ও অলাভজনক সংস্থা ইন্ডিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আদিত কোঠারি দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে বলেন, সিরিজে মোদিকে অসহিষ্ণু ও মুসলিমদের সঙ্গে বাজে আচরণকারী হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যে বিবিসির কাটতি বাড়াতে এমনটি করা হয়েছে।
কোঠারি আরও বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ জায়গা থেকে একে (ডকুমেন্টারি) টরি পার্টি ও (যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী) রিশি সুনাকের ওপর যুক্তরাজ্যের বামঘেঁষা উদার বুদ্ধিজীবী মহলের সরাসরি আক্রমণ হিসেবে দেখা উচিত। কয়েক দশক ধরে বিবিসির অবস্থান ভারতবিরোধী, তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এটি মোদি ও হিন্দুবিরোধিতায় রূপ নিয়েছে।’
নিজেদের সামাজিক আন্দোলন হিসেবে পরিচয় দেয়া ইনসাইট ইউকে নামের একটি সংস্থার (যার সদস্য ব্রিটিশ হিন্দু ও ব্রিটিশ ভারতীয় কমিউনিটির লোকজন) টুইটে বলা হয়, ‘বিবিসি নিউজের মিথ্যাচার আর কতদিন চলবে? ইহুদি ও হিন্দুবিদ্বেষ এবং ভারতবিরোধী পক্ষপাতে জর্জরিত হয়ে তারা অনেক দর্শক হারিয়েছে। এরপরও তারা ঘৃণা ছড়ানো অব্যাহত রেখেছে।’
এদিকে জয়া পাঠক নামের এক টুইটার ব্যবহারকারী টুইটে বলেন, ডকুমেন্টারি সিরিজ তাদেরই ক্ষুব্ধ করবে, যারা মুসলিমদের বিরুদ্ধে মোদি ও বিজেপির ঘৃণা ছড়ানোর প্রচারণাকে অস্বীকার করে।