ভিয়েতনাম, ১৯৮০ সাল। তিন বছর আগের ধর্ষণ মামলায় মৃত্যুদণ্ডের সাজা হয়েছে ভো ভ্যানের। কদিনের মধ্যেই কার্যকর হবে সাজা। তবে তার আগেই দক্ষিণ ভিয়েতনামের মেকং ডেল্টার হাউ গিয়াং প্রদেশের জেল থেকে পালিয়ে যান ভো ভ্যান। তারপর কেটে যায় ৪২ বছর। অবশেষে গত শুক্রবার পুলিশের কাছে ধরা পড়েন ভো।
পুলিশকে ভো জানান, পালিয়ে যাওয়ার পর এক বছরেরও বেশি সময় পাশের কিয়েন গিয়াং প্রদেশে বসবাস করেন তিনি। তারপর সড়কপথে তিন ঘণ্টার দূরের প্রদেশ চা মাও-এ থিতু হন ভ্যান। নতুন জীবনের শুরুতে নাম পরিবর্তন করে বিয়ে করেন। তার ঘরে একটি সন্তানও রয়েছে।
প্রায় তিন দশক সেখানে বাস করার পর ২০১৩ সালে জীবিকার সন্ধানে রাজধানী হো চি মিন সিটির কাছে ডং নাই প্রদেশে চলে যান ভো। সেখানে ইটভাটার শ্রমিকের কাজ নেন তিনি।
এত বছর পর কর্তৃপক্ষ কীভাবে ভো-কে ট্র্যাক করতে পেরেছে, তা স্পষ্ট নয়। ভো-কে গ্রেপ্তারের মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে পুলিশ আরেক পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তার করে। নগুয়েন ভ্যান হাং নামের ওই আসামি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন।
৪০ বছরের নগুয়েন একটি হামলা মামলায় ওয়ান্টেড ছিলেন। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে ১৭ বছর কাটিয়ে দেয়ার পর গত নভেম্বরে ধরা পড়েন নগুয়েন ভ্যান হাং।
পুলিশকে নগুয়েন জানান, এক দশক ধরে তিনি তার ভাইয়ের নামে বসবাস করতেন। ভাইবোনদের সহায়তায় পরিচয়পত্র জাল করেছিলেন তিনি। তবে সরকারি রেকর্ডে পরিবারের সদস্যদের সংখ্যায় গরমিল দেখা দিলে বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। তদন্তে বেরিয়ে আসে রহস্য।
ভিয়েতনামে সাজাপ্রাপ্ত আসামির পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা আরও নজির আছে। গত বছরের জুলাইয়ে হো চি মিন শহরের চি হোয়া কারাগার থেকে পালিয়ে যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক বন্দি। ২০১৫ সালে হত্যা ও ডাকাতির দায়ে দোষী প্রমাণিত হলে, মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় তাকে।
চি হোয়া-কে ভিয়েতমানের সবচেয়ে নিরাপদ কারাগার বলে মনে করা হয়। পালানোর দুদিন পর হো চি মিন সিটি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন আসামি।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার শীর্ষ ‘জল্লাদ’ হিসেবে পরিচিত আছে ভিয়েতনামের। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশটিতে মৃত্যুদণ্ডের সাজা নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উদ্বেগ জানিয়ে আসছে।
ভিয়েতনামে মৃত্যুদণ্ডের বিষয়ে কিছু সরকারি পরিসংখ্যান রয়েছে। তবে খুব গোপন রাখা হয় সেগুলো। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর হিসাবে, ভিয়েতনামে এখন ১ হাজারের বেশি মানুষ মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত রয়েছেন।