আল-কায়েদার প্রতিষ্ঠাতা ওসামা বিন লাদেনকে হত্যার পর তার মরদেহ সাগরে ফেলে দেয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে তার ছেলে ওমর বিন লাদেনের ধারণা, লাদেনের মরদেহ যুক্তরাষ্ট্রেই আছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য সানকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ওসামা বিন লাদেনের চতুর্থ ছেলে ওমর এমন ধারণা পোষণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে নাইন-ইলেভেন হামলার প্রধান পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযুক্ত ছিলেন ওসামা বিন লাদেন। পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে ২০১১ সালে আমেরিকান সেনাদের অভিযানে নিহত হন তিনি। এরপর লাদেনের মরদেহ সাগরে ফেলে দেয় আমেরিকান সেনারা। হোয়াইট হাউজের ওই ঘোষণা নিয়ে ধোঁয়াশায় আছেন ওমর।
তিনি বলেন, ‘ভালো হতো যদি আমার বাবাকে দাফন করা হতো। তবে তারা আমাদের সেই সুযোগ দেয়নি। আমি জানি না বাবার সঙ্গে কি করেছে। তারা বলেছে, মরদেহ সাগরে ফেলে দেয়া হয়েছে। তবে আমার মনে হয় মানুষকে দেখানোর জন্য বাবার মরদেহ আমেরিকাতেই রাখা হয়েছে।’
ওমর বলেন, ‘ছোটবেলায় আফগানিস্তানে থাকার সময় বিন লাদেনই তাকে আগ্নেয়াস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। আমাকে উনার মতোই বানাতে চাইতেন বাবা।’
স্ত্রীকে নিয়ে ওমর ফ্রান্সের নরম্যান্ডিতে থাকেন। বিশ্বকাপ উপলক্ষে এখন তিনি কাতারে অবস্থান করছেন। সেখানেই সানকে এই সাক্ষাৎকার দেন ওমর।
ওমর বলেন, ‘বাবা (লাদেন) একজন ভুক্তভোগী। অতীতের সেই দুঃসময় ভুলে যাওয়ার চেষ্টায় আছি।’
৪১ বছর বয়সী ওমর জানান, নিউইয়র্কে টুইন টাওয়ারের সন্ত্রাসী হামলার কয়েক মাস আগে আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি।
লাদেনের কাছ থেকে বিদায় নেয়ার কথা জানাতে গিয়ে ওমর বলেন, ‘আমি বিদায় বলেছিলাম এবং তিনিও বিদায় জানান। আমি চলে যাচ্ছি জেনে তিনি খুশি ছিলেন না।’
নিজের কুকুরের ওপর রাসায়নিক অস্ত্র পরীক্ষার বর্ণনা দিতে গিয়ে ওমর বলেন, ‘আমি দেখেছিলাম। তার এক সহযোগী আমার কুকুগুলোর ওপর এটির পরীক্ষা চালিয়েছিল। আমি খুশি ছিলাম না। এটা কঠিন সময় ছিল।’
ওমর একজন চিত্রশিল্পী। পাহাড় পছন্দ করেন ভীষণ। আফগানিস্তানে পাঁচ বছর থাকার সময়েই পাহাড়ারের প্রতি তার আগ্রহের জন্ম। ওমরের হাতে আঁকা এক একটি ছবি সাড়ে আট হাজার পাউন্ডেও বিক্রি হয়েছে।
সৌদি আরবে ১৯৮১ সালের মার্চে লাদেনের প্রথম স্ত্রী নাজওয়ার ঘরে জন্ম ওমরের।
তিনি বলেন, ‘বাবা আমাকে কখনোই আল-কায়েদায় যোগ দিতে বলেননি, তবে তিনি আমাকে তার উত্তরসূরি ভাবতেন। আমি সেই জীবনের জন্য উপযুক্ত নই জানালে বাবা হতাশ হয়েছিলেন।’
বিন লাদেন কেন তাকে উত্তরসূরি হিসেবে বেছে নিতে চেয়েছিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে ওমর বলেন, ‘আমি জানি না... হয়তো আমি বেশি বুদ্ধিমান ছিলাম। এ কারণেই আজ বেঁচে আছি।’