শ্রদ্ধা ওয়াকার হত্যাকাণ্ডের মতো আরেকটি ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে ভারতের দিল্লিতে। এবার সন্তানকে নিয়ে স্বামীকে ১০ টুকরা করে ফ্রিজে রেখে দিয়েছেন এক নারী।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়, আগের ঘরের সন্তানকে নিয়ে স্বামী অঞ্জন দাসকে ১০ টুকরা করেন পুনম নামের ওই নারী। তাকে দিল্লির পাণ্ডবনগর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে তার সন্তানকেও গ্রেপ্তার করা হয়। দুজনই হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।
অভিযুক্ত নারী জানান, জুয়েলারি বিক্রি করে বিহারে থাকা প্রথম স্ত্রীকে টাকা পাঠানোয় স্বামীর ওপর ক্ষুব্ধ হন তিনি। এরপরই পুনম তার আগের ঘরের সন্তান দীপককে নিয়ে বর্তমান স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
পুনমের আগের স্বামী ২০১৭ সালে ক্যানসারে মারা যান। এরপর তিনি অঞ্জনকে বিয়ে করেন।
পুনমের ছেলে দীপক জানান, তার মাকে প্রতিনিয়ত অত্যাচার করায় তিনি হত্যায় অংশ নেন।
অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পুলিশকে জানায়, জুনে তারা অঞ্জনকে হত্যা করেন। পানীয়র সঙ্গে মাদক মিশিয়ে অঞ্জনকে অজ্ঞান করে। তারপর তাকে খুন করে মরদেহ ১০ টুকরা করা হয়। পরে সেগুলো ফ্রিজে রেখে দেন তারা।
পুলিশ জানায়, এ পর্যন্ত দেহের ছয় টুকরা উদ্ধার করতে পেরেছে তারা।
পুলিশ আরও জানায়, জুনেই পাণ্ডবনগর থেকে মরদেহের খণ্ডিত অংশ উদ্ধার করা হয়। পরে একটি হত্যা মামলা করে তারা। মরদেহের অংশগুলো পচে যাওয়ায় পুলিশ তদন্ত করতে হিমশিম খায়। শ্রদ্ধা ওয়াকারের ঘটনা সামনে এলে পুলিশ ধারণা করতে থাকে এই মরদেহ শ্রদ্ধার হতে পারে। পরে পুলিশ জানতে পারে যে মরদেহটি পুরুষের।
তদন্তের সময় দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্র্যাঞ্চ যেখান থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয় সেখানকের সিসিটিভির ফুটেজ বিশ্লেষণ করে। এতে দেখা যায়, পুনম এবং দীপক ওই স্থানে কয়েকবার গিয়েছিলেন। এ সময় দীপকের হাতে একটি ব্যাগ ছিল। পুলিশ খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, অঞ্জন দাস নামের এক ব্যক্তি ছয় মাস ধরে নিখোঁজ। তবে এ নিয়ে তার পরিবার পুলিশের কাছে কোনো অভিযোগ জানায়নি। এরপর পুলিশ পুনম ও দীপককে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ চালায়। একপর্যায়ে তারা হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন।
এই ঘটনার সঙ্গে শ্রদ্ধা ওয়াকার হত্যাকাণ্ডের অনেক মিল রয়েছে। মুম্বাইয়ের বাসিন্দা ২৮ বছরের যুবক আফতাব পুনাওয়ালা তার লিভ ইন পার্টনার ২৬ বছরের শ্রদ্ধা ওয়াকারের সঙ্গে দিল্লির ছাতারপুর এলাকার একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। চলতি বছরের ১৮ মে তাদের মধ্যে তুমুল ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে সেদিন শ্রদ্ধাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন আফতাব।
পরে মরদেহ ৩৫ টুকরা করে ৩০০ লিটার ধারণক্ষমতার ফ্রিজে প্রায় তিন সপ্তাহ রাখেন। ফ্রিজ থেকে টুকরাগুলো কয়েক দিন ধরে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ফেলেন তিনি। ৮ নভেম্বর শ্রদ্ধার বাবা বিকাশ মদন ওয়াকার মেয়ের খোঁজে মেহরাউলি পুলিশের কাছে অপহরণের অভিযোগ করেন। তার ভিত্তিতে ১২ নভেম্বর আফতাবকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।