কাঠপাচারকে কেন্দ্র করে ভারতের আসাম-মেঘালয় সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলির ঘটনায় বন কর্মকর্তাসহ ছয়জন নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে মঙ্গলবার রাতে মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ে একটি গাড়ি পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ভোর ৩টায় বেআইনিভাবে মেঘালয়ের ওয়েস্ট জৈন্তিয়া হিলসের মুকরোহ গ্রামে কাঠ বহন করার অভিযোগে একটি ট্রাককে থামায় আসাম বনবিভাগ। ট্রাকটি পালানোর চেষ্টা করলে বনরক্ষীরা তাতে গুলি চালায়। এ সময় তিনজনকে আটক করা হয়। বাকিরা পালিয়ে যেতে সমর্থ হয়।
বিষয়টি বনরক্ষীরা আসামের জিরিকেন্ডিং থানায় জানায় এবং অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স দাবি করে।
পুলিশের দল পৌঁছালে মেঘালয় থেকেও বিপুলসংখ্যক মানুষ অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ঘটনাস্থলে যায়।
পুলিশ জানায়, আটক ব্যক্তিদের মুক্তির দাবিতে মেঘালয়ের মানুষেরা বনরক্ষী ও পুলিশের দলকে ঘেরাও করে। পরে পুলিশ কর্মকর্তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি চালায়। দুপক্ষের গোলাগুলিতে এ সময় হতাহতের ঘটনা ঘটে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মেঘালয় রাজ্যের সাত জেলায় ৪৮ ঘণ্টার জন্য মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা গোলাগুলির ঘটনায় মেঘালয়ের পাঁচজন এবং আসামের একজন বনরক্ষীসহ মোট ছয়জন নিহতের কথা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। মেঘালয় পুলিশ একটি এফআইআর নথিভুক্ত করেছে।’
আসাম-মেঘালয়ের সীমান্তবিরোধ পুরনো। মেঘালয় ১৯৭২ সালে আসাম থেকে বিভক্ত হয়ে যায়। আসাম পুনর্গঠন আইন ১৯৭১ কে মেঘালয় চ্যালেঞ্জ করায় দুই রাজ্যের ১২টি এলাকায় সীমান্ত নিয়ে সমস্যা রয়েছে।
গত ২৯ মার্চ ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উপস্থিতিতে ৫০ বছর ধরে চলমান সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে আসাম এবং মেঘালয়ের মধ্যে চুক্তি হয়েছিল। আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা এবং মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা রাজধানী দিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। এ সময় সীমান্ত বিরোধ নিরসনে সমঝোতা হয়েছিল।
সে সময়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, ‘উভয় রাজ্যের সীমান্তের ৭০ শতাংশ আজ বিবাদমুক্ত হয়েছে।’