বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যুক্তরাষ্ট্রে মধ্যবর্তী নির্বাচনের গুরুত্ব যেখানে

  •    
  • ৮ নভেম্বর, ২০২২ ০০:২৭

মধ্যবর্তী নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পরিবর্তন না হলেও সিদ্ধান্ত হবে কংগ্রেসের পাশাপাশি বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে আইনসভা এবং গভর্নরের অফিস কে নিয়ন্ত্রণ করবে।

আর মাত্র ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচন। আমেরিকার স্থানীয় সময় মঙ্গলবার এই ভোট অনুষ্ঠিত হবে? এই নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পরিবর্তন না হলেও সিদ্ধান্ত হবে কংগ্রেসের পাশাপাশি বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে আইনসভা এবং গভর্নরের অফিস কে নিয়ন্ত্রণ করবে।

মধ্যবর্তী নির্বাচন কী?

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের চার বছর মেয়াদের মাঝামাঝি সময়ে এই নির্বাচন হয়, তাই একে মধ্যবর্তী নির্বাচন বলা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের সরকারে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করেন ৫৩৫ জন আইন প্রণেতা, যারা কংগ্রেস সদস্য হিসেবে পরিচিত।

কংগ্রেসের আছে দুটি কক্ষ- সিনেট ও হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস। আইন তৈরির জন্য কংগ্রেসের এই দুটি কক্ষ একসঙ্গে কাজ করে।

সিনেট হচ্ছে কংগ্রেসের ১০০ সদস্যের উচ্চকক্ষ। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গরাজ্য, তাদের আকার যাই হোক, দুজন করে সিনেট সদস্য নির্বাচিত করে। সিনেটররা নির্বাচিত হন ছয় বছর মেয়াদের জন্য। প্রতি দুই বছর পর পর সিনেটের এক-তৃতীয়াংশ আসনের জন্য নির্বাচন হয়। এবার ৩৫ জন সিনেটর নির্বাচিত হবেন।

হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস বা প্রতিনিধি পরিষদে (যাকে সংক্ষেপে হাউস বলে ডাকা হয়) সদস্য আছেন ৪৩৫ জন। প্রত্যেক সদস্য তাদের অঙ্গরাজ্যের একটি নির্দিষ্ট ডিস্ট্রিক্ট বা জেলার প্রতিনিধিত্ব করেন। তারা দুই বছর মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হন। কাজেই এবার যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচনে প্রতিনিধি পরিষদে সব আসনের জন্যই নির্বাচন হবে।

নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো

কংগ্রেসের আকারে পরিবর্তন ঘটলে তা সারা দেশে আমেরিকানদের দৈনন্দিন জীবনকে সরাসরিভাবে প্রভাবিত করতে পারে। এর একটি ভালো উদাহরণ হলো নারীদের গর্ভপাতের অধিকার।

গত জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট নারীদের গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকার বাতিল করে। মধ্যবর্তী মেয়াদের এই নির্বাচনে কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণ হাতে নিতে পারলে ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাট এবং বিরোধী রিপাবলিকান পার্টি এ নিয়ে দেশব্যাপী নতুন আইন তৈরি করবে বলে প্রস্তাব করেছে।

ডেমোক্র্যাটরা নারীদের গর্ভপাতের অধিকার বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। অন্যদিকে রিপাবলিকানরা নারীর ১৫ সপ্তাহের গর্ভাবস্থার পর গর্ভপাতের বিরুদ্ধে জাতীয় নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব দিয়েছে। এ ছাড়া অর্থনীতি, অভিবাসন এবং গণতন্ত্র মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির মাঠে প্রধান গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

অর্থনীতি নিয়ে ভোটারদের ভাবনা

ইউক্রেন যুদ্ধের মতো বৈশ্বিক সংকটের কারণে কয়েক মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রাস্ফীতি আকাশচুম্বী।

যুক্তরাষ্ট্রের মনমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৮২ শতাংশ আমেরিকান মনে করেন যে মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে মুদ্রাস্ফীতির বিষয়টি সরকারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ । অভিবাসন সম্পর্কে কী বলা হচ্ছে?

অনেক রিপাবলিকান মধ্যবর্তী নির্বাচনের প্রচারাভিযানজুড়ে দৃঢ় অভিবাসনবিরোধী অবস্থান তুলে ধরেছে। মেক্সিকোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্তে বিপুলসংখ্যক অভিবাসী প্রত্যাশী আসার জন্য ডেমোক্র্যাটদের দোষারোপ করতে চাইছে তারা।

যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে এর প্রভাব কতটুকু

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচনের বিষয়টি পুরোপুরি আমেরিকার অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। তবে এর ফল বাইডেনের প্রথম প্রেসিডেন্ট মেয়াদের বাকি সময়কে প্রভাবিত করবে। ইউক্রেনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে প্রেসিডেন্টের পররাষ্ট্রনীতি পরিবর্তন করে দিতে পারে এই নির্বাচন। ভোটারদের নজর বেশি কোন দিকে

মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচনে ৩৫ জন সিনেটর নির্বাচিত হবেন। এদিকেই ভোটারদের নজর বেশি থাকবে। কারণ রিপাবলিকানরা কংগ্রেসের উচ্চকক্ষে নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারের জন্য মুখিয়ে আছে। যদিও এই আসনগুলোর মধ্যে অনেকগুলোতে রিপাবলিকান বা ডেমোক্র্যাটদের শক্ত ঘাঁটি রয়েছে। যেখানে প্রতিটি দলের নিজ নিজ প্রার্থীদের জয়ের অনেকটা নিশ্চয়তাও রয়েছে। এতে কিছু আসনে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশেষ করে সুইং স্টেটগুলোতে।

কারা জিততে পারে?

ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, সাধারণত যে দল হোয়াইট হাউসে থাকে, তারা মধ্যবর্তী নির্বাচনে খারাপ ফল করে। কাজেই রিপাবলিকানরা তাদের আসন সংখ্যা বাড়াতে পারে এ রকম ইঙ্গিত রয়েছে।

তা ছাড়া এই মুহূর্তে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের জনপ্রিয়তা কম, তার প্রতি সমর্থন গত আগস্ট মাস থেকেই ৫০ শতাংশের নিচে আটকে আছে। ফলে ডেমোক্র্যাট প্রার্থীদের সমর্থনে ভাটা পড়তে পারে।

বাইডেনের জন্য কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ?

যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে বাইডেনের দল ডেমোক্র্যাটদের সামান্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে বাইডেন এই সংখ্যাগরিষ্ঠতার মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ, অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ এবং দরিদ্র শিশুদের জন্য নতুন আইন চালু করতে পেরেছেন।

পার্লামেন্টের দুটি কক্ষের মধ্যে কোনো একটি যদি রিপাবলিকানদের হাতে চলে যায়, তাহলে ডেমোক্র্যাটদের আনা বিলগুলো তারা কংগ্রেসে পাস হওয়া ঠেকিয়ে দিতে পারবে। ফলে জটিলতা তৈরি হবে।

ট্রাম্পের জন্যও কি গুরুত্বপূর্ণ?

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে হারার পর পরাজিত প্রেসিডেন্টদের রাজনীতি ছেড়ে দিতে দেখা গেছে। তবে ট্রাম্প তেমনটি করেননি। তিনি এখনও ২০২৪ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার ব্যাপারে আগ্রহী বলে মনে হচ্ছে। ফলে সংসদের এই মধ্যমেয়াদি নির্বাচন তার হাতকে হয় শক্তিশালী করবে বা নয়তো তার সব আশা গুঁড়িয়ে দিতে পারে। যদিও এই নির্বাচনে তার ওপর কোনো ভোট হচ্ছে না, কিন্তু তার নির্বাচিত কয়েক ডজন প্রার্থী যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে গুরুত্বপূর্ণ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

জ্যেষ্ঠ রিপাবলিকান নেতাদের আপত্তি সত্ত্বেও প্রথাগত রিপাবলিকান রাজনীতিবিদদের বাদ দিয়ে ট্রাম্প জর্জিয়ার প্রাক্তন রাগবি খেলোয়াড় হার্শেল ওয়াকার, পেনসিলভেনিয়ায় টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব ডা. মেহমেত ওজ এবং ওহাইওর জনপ্রিয় লেখক জেডি ভ্যান্সের মতো কিছু সিনেট পদপ্রার্থীর প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।

নির্বাচনে এরা জয়লাভ করলে তাতে ট্রাম্পের রাজনৈতিক দূরদর্শিতা প্রমাণ হবে। তবে কংগ্রেসে রিপাবলিকানদের সংখ্যা কমে গেলে সেই দায়ভারও তার ওপরই চাপবে।

এ বিভাগের আরো খবর