চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিভিন্ন দেশ সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছে কিয়েভকে। বিপরীতে নিজেদের সামরিক শক্তি দিয়েই প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে লড়েছে বৈশ্বিক পরাশক্তি রাশিয়া, তবে যুদ্ধের আট মাস পর রাশিয়াকে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে সহায়তায় এগিয়ে এসেছে কৌশলগত মিত্র ইরান।
বিভিন্ন পাল্লার এসব ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকানোর কার্যকর কোনো ব্যবস্থা হাতে না থাকায় বড় ধরনের শঙ্কায় পড়েছে ইউক্রেন। দেশটি মনে করছে, এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র পুরো ভূখণ্ডকেই হুমকিতে ফেলতে পারে।
ইউক্রেনের বিমান বাহিনীর মুখপাত্র ইউরি ইহানাতকে উদ্ধৃত করে বুধবার এ খবর জানিয়েছে সিএনএন।
ইউক্রেনের বিমান বাহিনী বলছে, ইরান রাশিয়ায় যে ধরনের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করতে যাচ্ছে, তার বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নেই কিয়েভের।
ইউক্রেনের এয়ার ফোর্স কমান্ডের মুখপাত্র ইউরি ইহানাত জানান, ইরানি ওই ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের একটি ৩০০ কিলোমিটার এবং অন্যটি ৭০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। এটি দিয়ে রুশ বাহিনী ইউক্রেনের যেকোনো জায়গাতেই হামলা চালাতে পারবে।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার কিয়েভে সংবাদ সম্মেলনে ইহানাত শঙ্কা প্রকাশ করে জানান, ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইউক্রেনের উত্তর সীমান্তে নিয়ে আসার আশঙ্কা ব্যাপক। সেখান থেকে গোটা ইউক্রেনকে হুমকির মুখে ফেলে দিতে পারবে রাশিয়া।
এর আগে মঙ্গলবার সিএনএনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার ব্যবহারের জন্য স্বল্পপাল্লার সারফেস টু সারফেস ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং অ্যাটাক ড্রোনসহ প্রায় ১ হাজার অস্ত্র পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ইরান।
ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহতে প্রস্তুত কি না জানতে চাইলে ইহানাত বলেন, এ ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর বিরুদ্ধে সুরক্ষার সব ব্যবস্থা নেবে ইউক্রেন।
তিনি আরও বলেন, ‘এ ক্ষেপণাস্ত্রের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো প্রতিরক্ষাব্যবস্থা এ মুহূর্তে আমাদের হাতে নেই। তাত্ত্বিকভাবে ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকে ধ্বংস করা সম্ভব, কিন্তু বর্তমানে আমাদের কাছে যে ব্যবস্থা রয়েছে, তা দিয়ে এটি করা খুব কঠিন।
‘আমাদের বিমান প্রতিরক্ষা আছে, ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা নয়।’
ইহানাত মনে করেন, রাশিয়ার তৈরি ইস্কান্দার-এম ক্ষেপণাস্ত্রের সরবরাহ কমে যাওয়ায় ইরানের কাছে থেকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিচ্ছে রাশিয়া।
তিনি বলেন, রাশিয়ার কাছে থাকা ইস্কান্দারের মজুত ফুরিয়ে আসছে। এটা স্পষ্ট যে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইস্কান্দারের পরিপূরক হিসেবে আসছে।
এদিকে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট কার্যালয় প্রধানের উপদেষ্টা মিখাইলো পোদোলিয়াক তেহরানকে ‘আগ্রাসনের সহযোগী’ আখ্যা দিয়েছেন।
এক টুইটে তিনি বলেন, রাশিয়াকে ক্ষেপণাস্ত্র দিচ্ছে ইরান। তারা জানে এগুলো দিয়ে ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে আক্রমণ চালানো হবে।
পোদোলিয়াক আরও বলেন, রুশদের ড্রোন ব্যবহার শেখাচ্ছে ইরান। মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি জানে, এগুলো দিয়ে ইউক্রেনের জ্বালানি খাতের ওপর হামলা হবে। এতে করে ইউরোপীয় ইউনিয়নে শরণার্থী বাড়বে।