ক্রিমিয়ার সেভাস্তোপোল বন্দরে রুশ নৌবহরে ড্রোন হামলার প্রতিশোধ নিতে ইউক্রেনে বিদ্যুৎ স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সোমবার একটি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমনটি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে পুতিন আরও বলেন, ক্রিমিয়ায় হামলার কারণেই কৃষ্ণ সাগরের বন্দরগুলো থেকে শস্য রপ্তানি নিয়ে ইউক্রেনের সঙ্গে হওয়া চুক্তি স্থগিত করেছে তার দেশ।
গত জুলাইয়ে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় এই চুক্তি হয়েছিল।
ক্রিমিয়ার সেভাস্তোপোল বন্দরে রুশ নৌবহরে ড্রোন হামলার জন্য ইউক্রেনকে দুষছে রাশিয়া। তবে কিয়েভের পক্ষ থেকে এই হামলার কথা অস্বীকার করা হয়েছে।
জাতিসংঘ বলছে, রাশিয়া চুক্তি স্থগিত করার পর গত শনিবার থেকে শস্যবাহী কোনো জাহাজ কৃষ্ণ সাগর দিয়ে যায়নি। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার যুদ্ধ শুরু হয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, যুদ্ধের ২৫০তম দিনে কিয়েভসহ ইউক্রেনের প্রধান শহরগুলোতে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছ রাশিয়া।
ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর জেনারেল স্টাফ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া একটি বিবৃতিতে জানান, ইউক্রেনের কমপক্ষে ছয়টি অঞ্চলে সোমবার গোলাবর্ষণ করেছে রুশ সেনারা।
এ হামলা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে পুতিন বলেন, এটি আমাদের সামর্থ্যের সব কিছু না। এ সময় ইউক্রেনে হামলা আরও বাড়ানো হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় তাদের বিদ্যুৎ স্থাপনা, জলবিদ্যুৎ বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে অনেক শহর পানি ও বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় খারকিভ অঞ্চলের গভর্নর ওলেহ সিনেহুবভ ম্যাসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে জানিয়েছেন, ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর এক লাখ ৪০ হাজার বাসিন্দা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। এর মধ্যে ৫০ হাজার বাসিন্দাই খারকিভ শহরের। এটি ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। এদিকে রুশ হামলার পর কিয়েভের ৮০ শতাংশ এলাকার পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়ার ৫০টি ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে ৪৪টি ভূপাতিত করা হয়েছে। ইউক্রেনের পুলিশ জানায়, গত কয়েকদিন ধরে চালানো রুশ হামলায় ইউক্রেনে ১৩ জন আহত হয়েছেন।
গত তিন সপ্তাহ ধরেই রাশিয়া ইউক্রেনের বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা জোরদার করেছে। আর এ সব হামলায় ব্যবহার করা হয়েছে ইরানের তৈরি আত্মঘাতী ড্রোন।