যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসিকে অপহরণচেষ্টা ও তার স্বামীর ওপর হামলাকারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টাসহ দুটি গুরুতর অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এসব অপরাধে ওই ব্যক্তির সর্বোচ্চ ৫০ বছরের সাজা হতে পারে।
স্থানীয় সময় সোমবার ৪২ বছর বয়সী অভিযুক্ত ডেভিড ডিপাপের বিরুদ্ধে পেলোসি দম্পতির বাড়িতে জোরপূর্বক ঢোকার অভিযোগও আনে দেশটির জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট (বিচার বিভাগ)। ফেডারেল আইনের দুটি ধারা ভঙ্গের অভিযোগে তার এই সাজা হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের একটি সম্মানিত ও বয়স্ক পরিবারের ওপর প্রতিশোধমূলক এই হামলায় ওই ব্যক্তির সর্বোচ্চ ৩০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
দ্বিতীয় ধারায়, ন্যান্সি পেলোসিকে অপহরণচেষ্টার মামলায় তার সর্বোচ্চ ২০ বছরের সাজা হতে পারে।
সান ফ্রান্সিসকোর ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি সোমবার ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৬টি অভিযোগ আনেন।
সান ফ্রান্সিসকোর জেলে থাকা ওই ব্যক্তিকে মঙ্গলবার আবারও আদালতে আনা হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি ও তার স্বামী পল পেলোসির সান ফ্রান্সিসকোর বাড়িতে স্থানীয় সময় শুক্রবার ভোরে ওই ব্যক্তি হাতুড়ি নিয়ে হামলা চালান। তিনি মাথা ও হাতে আঘাত পান।
৮২ বছর বয়সী পলের ওপর হামলা চালানোর পর তার স্ত্রী ও ডেমোক্রেটিক পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতা ন্যান্সি পেলোসিকে খুঁজছিলেন ওই ব্যক্তি। হামলাকারী বাড়িতে ঢুকে পলকে জিজ্ঞেস করছিলেন, ‘ন্যান্সি কোথায়, ন্যান্সি কোথায়?’
তবে ৮২ বছর বয়সী ন্যান্সি পেলোসি ওই সময় বাড়িতে ছিলেন না। ডেমোক্রেটিক পার্টির হয়ে প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে থাকা ন্যান্সি সেই সময় ওয়াশিংটনে ছিলেন।
ডেমোক্রেটিক স্পিকারের অফিস এক বিবৃতিতে জানায়, হামলার পর পল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। পরে তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন।
ইউএস ক্যাপিটল পুলিশ একটি বিবৃতি জানায়, এফবিআই এবং সান ফ্রান্সিসকো পুলিশ বিষয়টি যৌথভাবে তদন্ত করছে।
‘খবর পেয়ে ইউএসসিপির ক্যালিফোর্নিয়া ফিল্ড অফিসের বিশেষ এজেন্টরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। একই সঙ্গে ডিপার্টমেন্টের থ্রেট অ্যাসেসমেন্ট বিভাগের তদন্তকারীদের একটি দল এফবিআইকে সহায়তা করার জন্য পাঠানো হয়।’
ন্যান্সি পেলোসির মুখপাত্র ড্রিউ হ্যামিল বলেন, ‘হামলাকারীকে হেফাজতে রাখা হয়েছে। হামলার কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে। ঘটনার সময় স্পিকার ওয়াশিংটনে ছিলেন।’
পুলিশ বলছে, তাদের ধারণা হামলাকারী পেছনের দরজা দিয়ে পেলোসির বাসভবনে ঢুকে পড়েছিল।
স্থানীয় সূত্র বলছে, স্পিকার পেলোসি বাসভবনে না থাকার কারণে নিরাপত্তাব্যবস্থা এতটা জোরদার ছিল না। বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ তদন্তে সহায়তা করতে পারে।
এ ঘটনার পরপর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কথা বলেন স্পিকার পেলোসির সঙ্গে। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জিন-পিয়ের এক বিবৃতিতে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট পল পেলোসি এবং স্পিকার পেলোসির পরিবারের জন্য প্রার্থনা করেছেন। সকালে তিনি এই ভয়ানক হামলার পর স্পিকার পেলোসিকে সাহস যোগাতে ফোন করেন।
পেলোসি দম্পতি ঘর বাঁধেন ১৯৬৩ সালে। তাদের পাঁচ সন্তান।