যুক্তরাষ্ট্রের একটি স্কুলে কয়েক শ গুলিসহ বন্দুক নিয়ে হামলা চালিয়েছেন সাবেক এক শিক্ষার্থী। নির্বিচারে গুলি চালানোর সময় হঠাৎ অস্ত্রটিতে গুলি আটকে যায়। এ সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন ১৯ বছরের ওই ছাত্র।
স্থানীয় সময় সোমবার সকাল ৯টায় মিসৌরি অঙ্গরাজ্যের সেন্ট লুইস শহরের ‘সেন্ট্রাল ভিজ্যুয়াল অ্যান্ড পারফর্মিং আর্টস হাই স্কুলে’ বন্দুক হামলা ও হতাহতের এই ঘটনা ঘটে। স্কুলটিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা চার শতাধিক।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে সিটি পুলিশ কমিশনার মাইকেল স্যাক জানিয়েছেন, হামলার একপর্যায়ে সন্দেহভাজন হামলাকারীর হাতে থাকা অস্ত্রটিতে জ্যাম (গুলি আটকে যাওয়া) লেগে যায়। এতে অনেকের প্রাণ রক্ষা পায়। পরে পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হন ১৯ বছর বয়সী সাবেক ওই শিক্ষার্থী। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।’
পুলিশ কর্মকর্তা স্যাক আরও বলেন, ‘বন্দুকধারীর সঙ্গে অন্তত ১২টি অত্যাধুনিক ম্যাগাজিনের মধ্যে কয়েক শ গুলি ছিল। তাকে থামানো না গেলে অনেকে হতাহত হতে পারত। ঘটনা তদন্তে গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই আমাদের সঙ্গে রয়েছে। দিনটি আমাদের জন্য ভীষণ বেদনার।’
হামলার উদ্দেশ্য কী ছিল তা এখনও স্পষ্ট জানাতে পারেনি পুলিশ। তবে ধারণা করা হচ্ছে শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে অসুন্তুষ্ট ছিলেন তিনি।
বন্দুকে গুলি আটকে গেলে হামলাকারীকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি এই স্কুলের ওপর খুবই হতাশ আর বিরক্ত।’ এই কথা একাধিক স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন ১৬ বছর বয়সী ছাত্রী তানিয়া গোলস্তন।
হামলায় কিশোরীসহ এক শিক্ষক নিহত হয়েছেন। ওই ছাত্রী ঘটনাস্থলেই নিহত হন। আহত সাতজনের মধ্যে তিনজন ছাত্রী ও চারজন ছাত্র।
জ্যাঁ কুকজকা নামের ৬১ বছর বয়সী ওই শিক্ষিকা সেখানে ‘হেলথ টিচার’ হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্কুল ভবনের ফটকে তালা লাগানো ছিল। তবে সন্দেহভাজন ওই বন্দুকধারী কীভাবে ভেতরে ঢুকে তা এখনও স্পষ্ট নয়।
সেন্ট লুইস পাবলিক স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পুলিশ অভিযুক্ত ওই বন্দুকধারীকে দ্রুত রুখে দিতে পেরেছে। সন্দেহভাজন ওই হামলাকারী ১৯ বছর বয়সী ওই স্কুলের সাবেক ছাত্র বলে পুলিশ শনাক্ত করেছে। হামলার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পুলিশের সঙ্গে সন্দেহভাজন হামলাকারীর গোলাগুলি হয়।
যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলা এবং এতে প্রাণহানির ঘটনা থামানো যাচ্ছে না।
দেশটির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানবিষয়ক সংস্থা এডুকেশন উইকের তথ্য অনুযায়ী চলতি বছর দেশটির অন্তত ৩৫টি স্কুলে বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছে একজন, আহত অনেকে।
দেশটির শপিং মল, স্কুল, মেট্রো স্টেশন, মেডিক্যাল সেন্টারের মতো জায়গাগুলোতেও প্রায়ই হামলার ঘটনা ঘটছে। গত মে মাসে টেক্সাসে একটি স্কুলে ভয়াবহ হামলায় নিহত হয় ১৯ শিশু শিক্ষার্থীসহ ২১ জন। রব এলিমেন্টারি স্কুলের সেই ঘটনায় ফের গোটা যুক্তরাষ্ট্রে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে জোর দাবি ওঠে।