রাষ্ট্রীয় উপহার সংক্রান্ত (তোশাখানা) তথ্যের বিষয়ে ভুল তথ্য দেয়ায় পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের নেতা ইমরান খানকে পাঁচ বছরের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করেছে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)। ফলে সামনের জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না তিনি।
দেশটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) সিকান্দার সুলতান রাজার নেতৃত্বে ৪ সদস্য ইসলামাবাদের নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে শুক্রবার এই রায় ঘোষণা করা হলো।
যদিও সিদ্ধান্তটি বেঞ্চের ৫ সদস্যের সর্বসম্মতির সিদ্ধান্ত। তবে আজকের ঘোষণায় পাঞ্জাবের সদস্য উপস্থিত ছিলেন না।
রায়ে একই সঙ্গে জানানো হয়েছে, ভুল তথ্যের জন্য ইমরানের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হবে।
নির্বাচন কমিশনের এই রায় ঘোষণার পরপরই পিটিআই নেতা ফাওয়াদ চৌধুরী নির্বাচন কমিশনের বাইরে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে জনসাধারণকে তাদের অধিকার আদায়ের জন্য বাড়ি থেকে রাস্তায় নামতে বলেছেন।
ইসিপির এই রায়কে ২২ কোটি মানুষের মুখে চপেটাঘাত হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন ফাওয়াদ।
তিনি বলেন, ‘আজ থেকে বিপ্লবের সূচনা। কেউই ইমরান খানকে অযোগ্য ঘোষণা করতে পারে না। এই এখতিয়ার কেবল জনগণের।’
তিনি অভিযোগ করেছেন, এই রায় নওয়াজ শরিফ লিখেছে আর তার চাকররা স্বাক্ষর করেছে।
জনসাধরণ এই সিদ্ধান্ত মানবে না বলে দাবি করেন ফাওয়াদ।
পিটিআই নেতা শাহবাজ গিল বলেছেন, পিটিআই রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিটি ফোরামে যোগাযোগ করবে।
তিনি আরো বলেন, ইমরানকে শুধু একটি আসন থেকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে, রাজনীতি নয়।
রায়ের আগে ইসিপিতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল।
ইসিপির ঘোষণার আগে, টেলিভিশন ফুটেজে পিটিআই নেতাদের কমিশনের সচিবালয়ে পৌঁছানোর জন্য গেটের ওপরে উঠতে দেখা গেছে।
তোশাখানা উপহার ও বিক্রি থেকে আয়ের বিবরণ বিস্তারিতভাবে দেননি ইমরান, আগস্টে এমন অভিযোগের কথা জানিয়েছিল শাহবাজ নেতৃত্বাধীন সরকার। পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) সিকান্দার সুলতান রাজার কাছে চিঠি পাঠিয়েছিল সরকার।
১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত তোশাখানা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণাধীন একটি বিভাগ, অন্যান্য সরকার ও রাজ্যের প্রধান এবং বিদেশি বিশিষ্ট ব্যক্তি, শাসক, সংসদ সদস্য, আমলা ও কর্মকর্তাদের দেওয়া মূল্যবান উপহার সংরক্ষণ করে।
তোশাখানার নিয়ম অনুসারে, প্রাপ্ত উপহার/উপহার ও অন্যান্য এই জাতীয় উপকরণগুলোর বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রতিবেদন দাখিল করতে হয়।
পিটিআই সরকারে থাকাকালীন, ২০১৮ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ইমরানকে দেওয়া উপহারের বিবরণ প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক ছিল দলটি।
৮ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া লিখিত জবাবে, ইমরান প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন তার প্রাপ্ত উপহারের কমপক্ষে চারটি বিক্রি করার কথা স্বীকার করেছিলেন।