ক্রিমিয়া সেতুতে বিস্ফোরণের পর যুদ্ধের কৌশল পাল্টেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ধীরে চল নীতি থেকে সরে এসে জোরদার করেছেন হামলা। আর এই অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেনারেল সের্গেই সুরোভিকিন; পশ্চিমাদের চোখে যিনি একজন নির্মম জেনারেল হিসেবে পরিচিত।
রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের বিকট শব্দে সোমবার ঘুম ভাঙে ইউক্রেনবাসীর। ঘড়িতে তখন ভোর ৬টা। একের পর ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়ে দেশটির সামরিক ও জ্বালানি স্থাপনায়। সকাল ৮টা নাগাদ চলতে থাকে তাণ্ডব।
ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্যামিগাল বলেন, সোমবারের হামলায় ইরানের তৈরি ‘কামিকাজে’ ড্রোন ব্যবহার করেছে রাশিয়া। হামলায় কিয়েভ, ডিনিপ্রো এবং সুমি অঞ্চলের কয়েক শ গ্রাম বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। প্রাণ গেছে ৭ জনের। তাদের চারজন সুমি শহরের, বাকিরা রাজধানী কিয়েভের বাসিন্দা।
- আরও পড়ুন: ইউক্রেনে রুশ নতুন কমান্ডার সুরোভিকিন
- আরও পড়ুন: ইউক্রেনজুড়ে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
হামলার কথা স্বীকার করে রাশিয়া বলছে, ইউক্রেনের সামরিক ঘাঁটি এবং জ্বালানি স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলাগুলো হয়েছে। নির্ভুলভাবে সেগুলো লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে।
ইউক্রেনের উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়েভেন ইয়েনিন বলেছেন, সুমিতে একটি জ্বালানি উৎপাদন কেন্দ্রে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানলে, চারজন নিহত হন।
রাশিয়া জ্বালানি-সম্পর্কিত অবকাঠামোগুলো খুঁজছে। তারা জ্বালানি শিল্পে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়।
‘হতাশ হয়ে’ রাশিয়া এমন কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে বলে মনে করছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির কার্যালয়ের প্রধান আন্দ্রি ইয়ারমাক।
কিয়েভের মেয়র ক্লিটসকো টেলিগ্রামে কামিকাজে ড্রোনের একটি টুকরোর ছবি শেয়ার করেছেন
এদিকে বন্দর নগরী মাইকোলাইভে সূর্যমুখী তেলের ট্যাঙ্ক আত্মঘাতী ড্রোনের সাহায্যে জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শহরের মেয়র ওলেক্সান্ডার সেনকেভিচ।
সেনকেভিচ বলেন, ‘কিয়েভে হামলার কয়েক ঘণ্টা আগে রোববার সন্ধ্যায় তিনটি ড্রোন মাইকোলাইভের ট্যাঙ্কগুলোকে জ্বালিয়ে দেয়।’
রোববার রাত থেকে ৩৭টি ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের বিমান বাহিনীর এক কর্মকর্তা। তিনি জানান, ড্রোনগুলো দক্ষিণ দিক থেকে ইউক্রেনে ছুটে এসেছে।
ইউক্রেনে রুশ অভিযান শুরুর পর থেকে রাশিয়ার সীমান্ত শহর বেলগোরোডে বেশ কয়েকবার আঘাত হেনেছে। মস্কো হামলার জন্য কিয়েভকে দায়ী করেছে। সোমবার কিয়েভ হামলায় ব্যবহৃত একটি ড্রোনের টুকরো ‘বেলগোরোদের জন্য’ লেখা দেখতে পেয়েছেন রয়টার্সের এক সাংবাদিক।
কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো নতুন হামলাকে ‘ইউক্রেনীয় জনগণের গণহত্যা’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি জানান, ইউক্রেনীয়দের ছাড়া একটি ইউক্রেন দরকার রাশিয়ানদের।
শহর কর্তৃপক্ষ শিগগিরই ড্রোন হামলা থেকে রাজধানী রক্ষায় বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পাওয়ার আশায় দিন গুনছে বলে জানান ক্লিটসকো।