ইরানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর দেশটিতে মৃত্যুদণ্ড ৮৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
নরওয়েভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ইরান হিউম্যান রাইটস বলছে, ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত ইরানে দুই অপ্রাপ্ত বয়স্ক ও ১২ জন নারীসহ কমপক্ষে ৪২৮ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে।
২০২১ সালের এ সময় ইরানে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সংখ্যা ছিল ২২৬টি এবং ২০২০ সালে ছিল ২০৯টি।
ইরান হিউম্যান রাইটসের পরিচালক মাহমুদ আমিরি-মোগাদ্দাম বলেছেন, ‘৪৩ বছর ধরে ইসলামিক প্রজাতন্ত্র সন্ত্রাস ও মৃত্যুদণ্ড সৃষ্টি করে ক্ষমতায় টিকে আছে। মৃত্যুদণ্ডের অমানবিক শাস্তির বিরোধিতা করা এবং এর বিলুপ্তির জন্য লড়াই করা স্বৈরাচারের চিরস্থায়ী অবসানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।‘
মাদক সম্পর্কিত মৃত্যুদণ্ডের ক্রমাগত বৃদ্ধি
২০২২ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত শুধু মাদকসংক্রান্ত অপরাধে একজন নারীসহ অন্তত ১৮০ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
২০২১ সালে একই সময়ে ৮৩ জন এবং ২০২০ সালে এই ইস্যুতে ১৮ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল।
বালুচ সংখ্যালঘুদের মৃত্যুদণ্ড
ইরানে বালুচ সংখ্যালঘুদের অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর অব্যাহত রয়েছে। ২০২১ সালে ইরানে হিউম্যান রাইটস বলেছে, দেশটিতে মোট কার্যকর হওয়া মৃত্যুদণ্ডের মধ্যে ২১ শতাংশই ছিল বালুচ। অথচ দেশটির মোট জনসংখ্যার মাত্র ২ থেকে ৬ শতাংশ বালুচ।
২০২২ সালে অন্তত ১২১ জন বালুচ নাগরিকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে, যা সব মৃত্যুদণ্ডের ৩৫ শতাংশ। ১২১ জনের মধ্যে একজন নারীসহ ৮২ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে মাদকসংক্রান্ত অভিযোগে।
দেশব্যাপী বিক্ষোভে রাষ্ট্রীয় হত্যাকাণ্ডে বালুচ সংখ্যালঘুরাও ব্যাপকভাবে মারা গেছেন। দেশটিতে চলমান বিক্ষোভে মোট নিহতের সংখ্যার অর্ধেকই বালুচ।
কিশোর অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড
ইরানের ইসলামী প্রজাতন্ত্র হলো বিশ্বের শেষ অবশিষ্ট সরকারগুলোর মধ্যে একটি, যা এখনও কিশোর অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে। ২০২২ সালের প্রথম ১০ মাসে কমপক্ষে দুজন কিশোর অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল।
নারীর মৃত্যুদণ্ড
২০২২ সালের প্রথম ১০ মাসে অন্তত ১২ জন নারীকে ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের দ্বারা মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে ১১ জনকে হত্যার জন্য কিসাস (প্রতিশোধ-অনুরূপ) শাস্তি দেওয়া হয়েছিল এবং একজন বালুচ নারীকে মাদকসংক্রান্ত অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।