ক্রিমিয়া সেতুতে (কের্চ স্ট্রেইট সেতু) প্রাণঘাতী হামলার জন্য ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থাকে দায়ী করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
রাশিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্রিমিয়া সেতুতে হামলা নিয়ে রোববার রাশিয়ার জাতীয় তদন্ত কমিটির প্রধান আলেকসান্দ্র বাস্ট্রিকিনের একটি প্রতিবেদন প্রকাশের পর পুতিন এ কথা বলেন।
রিপোর্ট প্রকাশের পর বাস্ট্রিকিনকে পুতিন বলেন, ‘আপনি এই মাত্র রিপোর্ট করেছেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই। এটি ইউক্রেনীয় নিরাপত্তা পরিষেবার আদেশ ও পরিকল্পনায় বাস্তবায়িত হয়েছে।’
বাস্ট্রেকিনের মতে, আক্রমণটি ইউক্রেনীয় গোয়েন্দাদের পরিকল্পনাতেই হয়েছে এবং এ ঘটনা বাস্তবায়নে বিদেশি নাগরিকসহ কিছু রুশ নাগরিকের সহায়তাও ছিল।
বাস্ট্রেকিন আরও জানিয়েছেন, ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস (এফএসবি, রাশিয়ার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা) বিস্ফোরণে জড়িত সন্দেহভাজনদের চিহ্নিত করেছে।
সেতুতে বিস্ফোরণ হওয়া ট্রাকটি বুলগেরিয়া থেকে জর্জিয়া ও আর্মেনিয়া হয়ে রাশিয়ায় পৌঁছেছিল।
তিনি বলেন, এটি ছিল ইউক্রেনের নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা সংগঠিত একটি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। এর লক্ষ্য ছিল বড় বেসামরিক অবকাঠামো সুবিধা ধ্বংস করা।
শনিবার ভোরে হওয়া এই হামলায় ক্রিমিয়া সেতুতে একটি ট্রাক বিস্ফোরিত হয়। এই ঘটনায় হাইওয়ে সেতুর একটি অংশ ধসে পড়ে এবং কাছাকাছি থাকা রেলওয়ে সেতু দিয়ে ক্রিমিয়ার দিকে যাওয়া ট্রেনের সাতটি জ্বালানি ট্যাংকে আগুন ধরে যায়।
এ ঘটনায় অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। বিস্ফোরণের ফলে সড়ক ও রেলপথ উভয় ট্রাফিক সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়, যদিও শনিবার সন্ধ্যার মধ্যে আবার তা চালু করা সম্ভব হয়।
ইউক্রেন হামলার দায় স্বীকার না করলেও এ ঘটনায় বেশ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে।
এক টুইট বার্তায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কির সহকারী মিখাইল পোডোলিয়াক লেখেন, ‘ক্রিমিয়া সেতু, শুরু। অবৈধ সবকিছু ধ্বংস করতে হবে, চুরি হওয়া সবকিছু ইউক্রেনকে ফেরত দিতে হবে, রাশিয়ার দখলে থাকা সব কিছু থেকে তাদের বহিষ্কার করা হবে।’
এর আগেও অসংখ্যবার ইউক্রেনের পক্ষ থেকে ক্রিমিয়া সেতু ধ্বংস করে দেয়ার হুমকি দেয়।
গত আগস্টেও পোডোলিয়াক বলেছিলেন, ইউরোপের বৃহত্তম সেতুটি ধ্বংস করে দেয়া উচিত, কারণ এটি একটি অবৈধ নির্মাণ এবং ক্রিমিয়ায় রুশ সেনাবাহিনীর সরবরাহের প্রধান প্রবেশদ্বার।
আলোচিত ক্রিমিয়া অঞ্চলটি একসময় ইউক্রেনের অংশ ছিল। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে এ অঞ্চল নিজ ভূখণ্ডে একীভূত করে নেয় রাশিয়া। ক্রিমিয়ার সেভাস্তাপোলে নৌঘাঁটি কৌশলগত কারণে রাশিয়ার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।