বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

প্রতি ৪ মিনিটে কোন দেশে কত শিশু জন্মায়

  •    
  • ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৩:০২

বিভিন্ন দেশের সরকারের নেয়া নীতি বড় পরিবারকে নিরুৎসাহিত করেছে। ফলে জন্মহার কমেছে। যেমন: বাংলাদেশে পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের স্লোগান ছিল, ‘দুটি সন্তানের বেশি নয়, একটি হলে ভালো হয়।’ চীনের মতো কমিউনিস্ট দেশ এক সন্তান নীতিতে হাঁটাও বৈশ্বিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির গতি হ্রাস পাওয়ার কারণ। আর এই কমতে থাকা জনসংখ্যাই ব্যাপক অর্থনৈতিক ও সামাজিক চাপের সৃষ্টি করতে পারে।

প্রতি ৪ মিনিটে এই পৃথিবীতে আনুমানিক ১ হাজার মানবশিশুর জন্ম হয়। প্রশ্ন হচ্ছে এই ১ হাজার মানবশিশুর মধ্যে কোন দেশে কত শিশু জন্মায়?

এর উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছেন ডেটা সায়েন্টিস্ট ও ভিজ্যুয়াল স্টোরিটেলার প্রতাপ বর্ধন

প্রতাপ যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) উন্মুক্ত ডেটা ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুকের আলোকে বিষয়টি তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন কানাডাভিত্তিক সংবাদ প্রতিষ্ঠান ভিজ্যুয়াল ক্যাপিটালিস্টের এক প্রতিবেদনে

ভিজ্যুয়াল ক্যাপিটালিস্টের এক গ্রাফিক্যাল প্রেজেন্টেশনে ১ হাজার শিশুর মধ্যে কোন দেশে কত শিশু জন্মায় তার একটি আনুমানিক ধারণা দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদনের সঙ্গে একটি তালিকাও যুক্ত করে দেয়া হয়েছে। যেখানে শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে ৫টিই এশিয়ার এবং বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার ৩টি দেশ শীর্ষ ১০-এ রয়েছে।

প্রতি হাজারে ১৭১ জনের বেশি শিশু জন্মায় কেবল ভারতেই

তালিকার শীর্ষ দেশ ভারত। ১ হাজার শিশুর মধ্যে ১৭১.৬২ জন শিশুই জন্মায় প্রায় ১৪০ কোটি জনসংখ্যার দেশ ভারতে।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে স্থান পাওয়া পাকিস্তান রয়েছে তালিকার চতুর্থ স্থানে। দেশটিতে জন্ম নেয় ৪৭.২৩ শিশু। আর বাংলাদেশের অবস্থান রয়েছে দশম স্থানে, দেশটিতে জন্ম নেয় ২১.৫২ জন শিশু।

অর্থাৎ প্রতি ১ হাজার শিশুর মধ্যে শুধু দক্ষিণ এশিয়াতেই জন্ম নেয় ২৪০.৩৭ শিশু। অর্থাৎ পৃথিবীতে জন্ম নেয়া প্রতি ৫ জনের ১ জনের বেশি শিশু জন্ম নেয় দক্ষিণ এশিয়াতেই।

তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছে এশিয়ার আরেক দেশ চীন। বিশ্বে প্রতি হাজারে এই দেশটিতেই জন্ম নেয় ১০২.৮৪ শিশু। দেশটির জনসংখ্যা ১০০ কোটির ওপর। বিশ্বে জন্ম নেয়া প্রতি ১০ জন শিশুর ১ জনের জন্ম হয় চীনে।

তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও চীনে জন্মহার কমে যাওয়ায় চিন্তিত সে দেশের সরকার। এরই মধ্যে জন্মহার বাড়াতে এক সন্তান নীতি থেকে বেরিয়ে এসেছে চীন।

এক সময়ে এক সন্তান নীতিতে থাকা চীন এখন জনসংখ্যা বাড়াতে চায়

ওয়ার্ল্ড ব্যাংক বলছে, গত ৬০ বছরে আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ায় শিশু জন্মের হার কমছে। এরপরও তালিকায় তৃতীয় দেশটি নাইজেরিয়া, কারণ এখনও দেশটিতে জন্মহার বৈশ্বিক গড় জন্মহারের দ্বিগুণ। প্রতি হাজারে সেখানে জন্ম নেয় ৫৬.৫০ শিশু।

যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গোতে জন্ম নেয় ৩১ শিশু। তালিকায় দেশটির অবস্থান পাকিস্তানের পরই। এশিয়ার আরেক দেশ ইন্দোনেশিয়াতে জন্ম নেয় ৩১.২০ শিশু। পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষ ১০-এ স্থান পাওয়া একমাত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্র, সেখানে ৩০.৪২ শিশু জন্ম নেয়।

এরপরের দেশটি আফ্রিকার ইথিওপিয়া। দেশটিতে জন্ম নেয় ২৫.৪৪ শিশু। শীর্ষ ১০-এ দক্ষিণ আমেরিকার একমাত্র দেশ ব্রাজিলে জন্ম নেয় ২২.২৭ শিশু।

এত জন্মের পরও গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো বিশ্বে আসলে সামগ্রিক জন্মহার ১৯৬০ সালের পর থেকে কমছে।

জন্মহার কমার কারণটি ঘটছে বেশ কয়েকটি কারণে। যার মধ্যে রয়েছে বিশ্বজুড়ে সম্পদ বৃদ্ধি। গবেষণায় দেখা গেছে, কম সন্তান জন্মদানের সঙ্গে সম্পদ বৃদ্ধির সম্পর্ক রয়েছে। যেমন- সাউথ কোরিয়ায় সত্তরের দশকে প্রত্যেক দম্পতির গড়ে ৪-৫ সন্তান থাকত। কিন্তু তা এখন ১ জনের নিচে নেমে এসেছে। দেশটির কর্তৃপক্ষ বলছে, এটি আশঙ্কাজনক।

বিশ্বব্যাংকের মতে নাইজেরিয়াতেও কমছে শিশু জন্মের হার

এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের সরকারের নেয়া নীতি বড় পরিবারকে নিরুৎসাহিত করেছে। ফলে জন্মহার কমেছে। যেমন: বাংলাদেশে পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের স্লোগান ছিল, ‘দুটি সন্তানের বেশি নয়, একটি হলে ভালো হয়।’ চীনের মতো কমিউনিস্ট দেশ এক সন্তান নীতিতে হাঁটাও বৈশ্বিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির গতি হ্রাস পাওয়ার কারণ।

গ্রাম থেকে শহুরে জীবনযাপনে পদার্পণও জন্মহার কমে যাওয়ার কারণ। শহুরে ব্যস্ত জীবনে শিক্ষিত, পেশাজীবী নারীরা অধিক সন্তানে আগ্রহী নয়।

বলা হচ্ছে, ২১০০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ০.১ শতাংশে নেমে আসবে। এর মানে হলো, বিশ্বের জনসংখ্যা আর বাড়বে না। এ বিষয়ে বিশ্বের আগাম প্রস্তুতি প্রয়োজন।

কমতে থাকা জনসংখ্যা দেশগুলোতে ব্যাপক চাপের সৃষ্টি করতে পারে। স্বাস্থ্যসেবার ব্যয় বৃদ্ধি, জনসংখ্যা অনুপাতে পেনশনের চাহিদা বৃদ্ধি ছাড়াও যুব জনসংখ্যার ঘাটতির ফলে শ্রমিকের সংকটও দেখা দিতে পারে, যা বৈশ্বিক অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

এ বিভাগের আরো খবর