বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

খারকিভ পুনরুদ্ধার, কিয়েভের বড় সাফল্য

  •    
  • ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ২১:০১

উত্তর-পূর্ব ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহ কেন্দ্র খারকিভের কুপিয়ানস্ক শহর এখন কিয়েভের কব্জায়। ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর এক সপ্তাহের মধ্যে এই এলাকা দখল করে নিয়েছিল ক্রেমলিন।

রাশিয়ার বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে পাল্টা আক্রমণে বড় ধরনের অগ্রগতির খবর দিয়েছে ইউক্রেন। বলা হয়েছে, দেশটির সেনারা রাশিয়ার দখলে থাকা উত্তর-পূর্বাংশে খারকিভ অঞ্চলে বড় যুদ্ধক্ষেত্র পুনরুদ্ধার করে নিজেদের কব্জায় নিয়েছে।

রুশ বাহিনীর দখলে থাকা অঞ্চল পুনরুদ্ধারে চলতি সপ্তাহে পাল্টা আক্রমণ শুরুর পর ইউক্রেনের সেনাবাহিনী দেশের পূর্বাঞ্চলে এমন বড় ধরনের সাফল্য অর্জন করেছে।

এপ্রিলে কিয়েভের আশপাশের এলাকাগুলো থেকে রাশিয়া সেনা প্রত্যাহার করার পর থেকে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর এটি তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি।

ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী শনিবার বলেছে, তারা পূর্ব ইউক্রেনের খারকিভে কুপিয়ানস্ক শহরে প্রবেশ করেছে।

কুপিয়ানস্ক পূর্ব ইউক্রেনে রাশিয়ান বাহিনীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহ কেন্দ্র। ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর এক সপ্তাহের মধ্যে এই এলাকা দখল করে নিয়েছিল ক্রেমলিন।

কিয়েভের পক্ষ থেকে দেশটির উত্তর ও দক্ষিণে যুদ্ধক্ষেত্রে সাফল্যের কথাও জানিয়েছে।

ইউক্রেনের বিশেষ বাহিনী সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি প্রকাশ করে বলেছে, তাদের অফিসারদের কুপিয়ানস্ক শহরে দেখা গেছে। স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র বহনকারী কিছুসংখ্যক ছদ্মবেশী সৈন্য একটি সাঁজোয়া যানের চারপাশে জড়ো হয়েছে।

বিবিসির খবরে বলা হয়, ইউক্রেনের একজন আঞ্চলিক কর্মকর্তা পৃথকভাবে একটি পোস্ট দিয়েছেন। প্রায় ২৭ হাজার জনঅধ্যুষিত কুপিয়ানস্ক শহরের ছবি পোস্ট করে তিনি লিখেছেন- ‘কুপিয়ানস্ক ইউক্রেনের’।

ইউক্রেনের সৈন্যরা উত্তর-পূর্ব খারকিভ অঞ্চলে অভিযানে দ্রুত অগ্রসর হয়ে রুশ লাইনের গভীরে ঢুকে পড়েছে। চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর দ্রুতই কুপিয়ানস্ক এলাকা দখল করে নেয় রাশিয়া। এরপর থেকে কুপিয়ানস্ককে গুরুত্বপূর্ণ রেল কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করে আসছিল ক্রেমলিন।

ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর একজন মুখপাত্র ওলেক্সান্ডার শুপুন বলেন, ‘সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ইউক্রেনের এক হাজার বর্গকিলোমিটারেরও বেশি এলাকা দখলদারদের হাত থেকে মুক্ত করা হয়েছে। খারকিভ অঞ্চলে রাশিয়ানদের দখল করে নেয়া ৩০টিরও বেশি বসতি মুক্ত করা হয়েছে বা নিয়ন্ত্রণে নেয়া হয়েছে।’

ইউক্রেনীয় সৈন্যরা ইজিয়ামেও অগ্রাভিযান চালিয়েছে। সেখানে ৪৫ হাজার জনঅধ্যুষিত একটি শহর মুক্ত করা হয়েছে, যেটি রুশ সামরিক অভিযানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চায়নস্থল হিসেবে কাজ করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক যুদ্ধবিষয়ক থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট বলেছে, ‘খারকিভ সিটি-ইজিয়াম লাইনে ইউক্রেনীয় বাহিনীর এই সাফল্য সাফল্য রাশিয়ান তথ্যগত যোগাযোগে ফাটল তৈরি করছে। আর ইউক্রেনীয় বাহিনীর এই অগ্রাভিযান রাশিয়ান কমান্ডের প্রতি আস্থাকেও সজোরে ধাক্কা দিয়েছে। এমনকি মে মাসের মধ্যভাগ থেকে একজন রাশিয়ানকেও এখানে নদী পারাপার থেকে দেখা যায়নি।’

দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে ইউক্রেনীয় বাহিনী

ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর দক্ষিণাঞ্চলীয় কমান্ডের মুখপাত্র নাটালিয়া গুমেনিউক শনিবার স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘দক্ষিণ ফ্রন্ট লাইন ধরে ইউক্রেনীয় সেনারা কয়েক ডজন কিলোমিটার পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে। এসব এলাকা আগ্রাসনের শুরুতে রুশ বাহিনী দখল করে নিয়েছিল।’

এদিকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, শুক্রবার রাশিয়ান সামরিক যানবাহনগুলোকে খারকিভের একটি মহাসড়ক ধরে এগিয়ে চলেছে এবং দুটি হেলিকপ্টার মাথার ওপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে। ভিডিও ফুটেজের সঙ্গে বলা হয়েছে যে খারকিভ অঞ্চলে শক্তি বৃদ্ধি করা হচ্ছে।

খারকিভ অঞ্চলে রুশ-সমর্থিত প্রশাসনের প্রধান ভিটালি গানচেভ বলেছেন, ‘খারকিভ অঞ্চলে ইউক্রেনের অগ্রগতি খুবই জোরালো ও দ্রুত হয়েছে। ইউক্রেনীয় বাহিনী বেশ কয়েকটি বসতি পুনরুদ্ধার করেছে।

‘শত্রুকে যতটা সম্ভব বিলম্বিত করা হচ্ছে। তবে বেশ কয়েকটি বসতি ইতোমধ্যে ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। এ অবস্থায় ইজিয়াম, কুপিয়ানস্ক এবং ভেলিকি বুরলুক শহর থেকে বেসামরিক লোকদের সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।’

‘রাশিয়াকে চড়া মূল্য দিতে হচ্ছে’

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, ‘খারকিভে ইউক্রেনীয় বাহিনীর অভিযানে যে রাশিয়ার উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সেখানে শক্তি বৃদ্ধির উদ্যোগে তার প্রমাণ মেলে।

‘ইউক্রেনে বিপুলসংখ্যক রুশ সেনা রয়েছে। দুঃখজনকভাবে, পুতিন চড়া মূল্য দিয়ে এসব রাশিয়ানকে এখানে নিক্ষেপ করছেন।’

ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘পূর্ব ডনবাস অঞ্চলে লড়াই মস্কোর সৈন্যদের পক্ষে ভাল যাচ্ছে না।’

যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এর আগে বলেছিলেন, ‘ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী দেশটির পূর্বে রুশ নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে।

রাশিয়ার বাহিনী সম্ভবত অবাক হয়ে গেছে। সেক্টরটি শুধু হালকাভাবে দখল করা হয়েছিল এবং ইউক্রেনীয় ইউনিটগুলো বেশ কয়েকটি শহর দখল করেছে বা ঘিরে রেখেছে।’

মুক্ত বাসিন্দারা

প্রায় সাত মাস রাশিয়ার দখলে ছিল খারকিভ। ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর হাতে এই অঞ্চল মুক্ত হওয়ার পর নতুন বাস্তবতার মুখোমুখি এখানকার গ্রাকোভো গ্রামের বাসিন্দারা।

মুক্ত খারকিভে গ্রাকোভো গ্রামের বাসিন্দা সেরহি লুতসাই শুক্রবার ইউক্রেন পুলিশকে একটি জায়গা দেখান, যেখানে মার্চ মাসে বিচ্ছিন্নতাবাদী যোদ্ধারা তাকে দুজনের মরদেহ দাফন করতে বাধ্য করেছিল।

খারকিভ অঞ্চলের পুলিশ তদন্তের প্রধান সেরহি বলভিনভ ওই দুই যুবকের মরদেহ নিয়ে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘ওদের মাথার পেছনে গুলির ক্ষত ছিল এবং তাদের কান কেটে দেয়া হয়েছিল। লুৎসাই ও অন্য একজন বাসিন্দা এই লোকদের কবর দিয়েছিলেন।’

এ বিভাগের আরো খবর