জাপানিজ স্টোর হিসেবে নিজেদের জাহির করে আসছিল চীনা খুচরা প্রতিষ্ঠান-মিনিসো। এতে চীনা গ্রাহকদের সমালোচনার মুখে পড়ে ব্র্যান্ডটি। সমালোচকদের অভিযোগ, প্রতিষ্ঠানটি চীনা শিকড়কে সমর্থন করছে না।
এক বিবৃতিতে গত সপ্তাহে এ ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছে হোমওয়্যার এবং ইলেকট্রনিকস পণ্য বিক্রি করা প্রতিষ্ঠানটি। জানিয়েছে, এটি করে ‘গুরুতর ভুল’ করেছে তারা।
দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়, ২০১৫ সালে চালু হয় মিনিসো। সে সময় এর নেতৃত্বে ছিলেন এক জাপানি ডিজাইনার। প্রতিষ্ঠানটি এমন একটি লোগো এবং ব্র্যান্ডিং ব্যবহার করত, যা জাপানি পোশাক সংস্থা-ইউনিক্লোর মতোই। এ কারণেই জাপানি ফ্যাশন ব্র্যান্ড পরিচিতির ধোঁয়াশা তৈরি হয়। ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ৫ হাজারের বেশি মিনিসো স্টোর ছিল।
মিনিসোর বিপণন কৌশলটি যথেষ্ট সফল হয়েছিল। এ কারণে চীনা নাগরিকরা যখন জানতে পারেন যে ব্র্যান্ডটি আসলে চাইনিজ, তখন তারা বেশ অবাক হয়েছিল। তবে মিনিসো গ্রুপ হোল্ডিং নিজেদের জাপানি কোম্পানি বলে দাবি করেছে কি না, তা জানা যায়নি।
সমালোচনার ঢেউ শুরু হয় জুলাইয়ে। সে সময় মিনিসোর স্প্যানিশ শাখা চাইনিজ চেওংসাম পোশাকে ডিজনি প্রিন্সেসের ছবি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছিল। লেখা হয়, এগুলো জাপানি গেইশা ডল।
বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত হয়। চীনা মিডিয়ার সম্পাদকীয়গুলোতেও তখন অনেক লেখালেখি হয়। সেখানে বলা হয়, এ ধরনের ভুল একেবারেই গ্রহণযোগ্য না। এ ঘটনার পর প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের দাম ৩৭ শতাংশের বেশি কমে যায়।
চীনা জাতীয়তাবাদ এবং জাপানবিরোধী মনোভাব চীনে বাড়ছেই, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায়। প্রায়শই সামান্য বিষয়কে কেন্দ্র করে তুমুল বিতর্ক সৃষ্টি হয় অনলাইনে।
ক্ষমা চাওয়াকে যথেষ্ট মনে করছে না অনেকেই। অন্যরা বলছেন, ভুল সংশোধন না করা পর্যন্ত তারা ব্র্যান্ডটিকে সমর্থন করে যাবে।
একজন বলেন, ‘দেশীয় ব্র্যান্ড পরিবর্তিত হয়েছে। বিদেশি ব্র্যান্ডের দ্রুত পরিবর্তন আনা উচিত।’
অন্য একজন বলেন, ‘জাতীয়তাবাদের চেতনা ধারণ করতে হবে সব উদ্যোক্তাকে। তারা নিজেরা নিজেদের পরীক্ষা করবে। এতে এ ধরনের সমস্যা কাটানো যাবে।’
মিনিসো বলছে, ২০১৯ সাল থেকে স্টোরগুলো থেকে জাপানি পণ্য সরিয়ে নেয়ার কাজ চলছে। দেশের বাইরের দোকানগুলোতেও পরিবর্তন আনা হবে।
‘মিনিসো শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একটি চীনা কোম্পানি। মিডিয়া এবং জনসাধারণকে তাদের তত্ত্বাবধান এবং উত্সাহের জন্য ধন্যবাদ।