দক্ষিণ ইউক্রেনের জাপোরিজ্জা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকা অসামরিকীকরণের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে রাশিয়া।
রাশিয়ার কর্মকর্তারা বলছেন, রুশ সেনা প্রত্যাহারের মতো কোনো পদক্ষেপ এই অঞ্চলকে আরও অরক্ষিত করবে।
রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয় পক্ষই একে অপরের ওপর জাপোরিজ্জায় গোলাবর্ষণের অভিযোগ এনেছে। এমন পরিস্থিতিতে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে বিশ্বনেতাদের মধ্যে।
রুশ তত্ত্বাবধানে জাপোরিজ্জা প্ল্যান্টে কাজ করা ইউক্রেনীয় কর্মীরা যেকোনো সময় বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন। বিশেষ করে দুই সপ্তাহ ধরে বেশ কয়েকবার সেখানে গোলাবর্ষণের ঘটনা ঘটছে।
ইউক্রেন এই ঘটনার দায় রুশ সেনাদের ওপর দিলেও রাশিয়া বলছে পারমাণবিক কেন্দ্রে গোলাবর্ষণ করছে ইউক্রেনীয় সেনারা।
এদিকে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, জাপোরিজ্জা নিয়ে যেকোনো সম্ভাব্য ক্ষতি আত্মহত্যার শামিল।
জাতিসংঘের মহাসচিব ইউক্রেন সফরে এসে লেভিভে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
বৈঠকে জাপোরিজ্জাকে অসামরিকীকরণ করতে পদক্ষেপ নিতে জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে আহ্বান জানান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি।
জাপোরিজ্জা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ঘিরে ইউক্রেন ও রাশিয়ার সেনাদের গোলা বিনিময়ের ঘটনায় জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। পারমাণবিক কেন্দ্রের অঞ্চলকে সামরিক কর্মকাণ্ডমুক্ত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান শুরুর পর জাতিসংঘ-প্রধান ও জেলেনস্কির এই প্রথম বৈঠক।
রুশ অভিযান শুরুর পর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানও প্রথমবারের মতো ইউক্রেন সফর করছেন।
তুরস্কের প্রেসিডেন্টও জাতিসংঘ-প্রধানের সুরেই কথা বলেছেন। তিনি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে আরেকটি চেরনোবিল বিপর্যয়ের বিপদ সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
গত ৬ আগস্ট ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শনিবার রাশিয়ার রকেট হামলায় পারমাণবিক স্থাপনার গুরুতর ক্ষতি হয়েছে। তিনটি তেজস্ক্রিয় শনাক্তকরণ যন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে যেকোনো তেজস্ক্রিয় লিকের ক্ষেত্রে প্রাথমিক অবস্থায় তা শনাক্তকরণ ও বিকিরণ প্রতিরোধ অসম্ভব হয়ে গেছে।
কিয়েভ বলছে, এবার ভাগ্যক্রমে পারমাণবিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেলেও বারবার ভাগ্য সহায়ক হবে না।
জাতিসংঘের আণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থা (আইএইএ) ইউক্রেনের জাপোরিজ্জা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাছে যেকোনো ধরনের সামরিক পদক্ষেপ অবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে।
তবে মস্কোর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, এই হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন।
জাপোরিজ্জায় বর্তমান ভারপ্রাপ্ত রুশ প্রধান ইয়েভজেনি বালিতস্কি রোবরার টেলিগ্রামে এক বার্তায় বলেন, ইউক্রেনীয় সেনারাই বিদ্যুৎকেন্দ্রের তেলের মজুত লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। তাদের হামলায় প্রশাসনিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।