তাইওয়ানকে ঘিরে চীনের বিশদ সামরিক মহড়া দ্বীপরাষ্ট্রটিতে বহিঃশক্তির হস্তক্ষেপের নজিরবিহীন সামরিক ও রাজনৈতিক হুমকি হলেও এটি যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রদের গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের দ্বার উন্মোচন করে দিয়েছে।
কূটনীতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের ভাষ্য, গত সপ্তাহে চার দিনের নিবিড় মহড়া এবং চলতি সপ্তাহে সেটির সময় বাড়ানোর ফলে শত্রুর মোকাবিলায় চীন কোন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করবে, সে বিষয়ে খুঁটিনাটি তথ্য সংগ্রহের সুযোগ তৈরি হয়েছে। একই সঙ্গে এটি চীনের যুদ্ধ পরিচালনা ও যোগাযোগব্যবস্থা বোঝারও সুযোগ করে দিয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বিশ্লেষণে বলা হয়, তাইওয়ানে হামলার বিকল্প কিংবা আগের পর্যায় হিসেবে চীন যে দ্বীপটি অবরোধ করতে পারে, তার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে সাম্প্রতিক মহড়ায়।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর দুই কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, চীনের সামরিক মহড়া থেকে প্রয়োজনীয় ডেটা সংগ্রহ করা হচ্ছে, তবে এ থেকে গভীরতর গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের সুযোগ নেই হয়তো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, মহড়াটি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের কথা জানে চীন। এ কারণে এতে সর্বোত্তম কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা দেখানোর কথা নয় দেশটির।
ওই দুই কর্মকর্তা বলেন, চীন যেসব ব্যবস্থা ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে, তার প্রায় সবই যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রদের কাছে দৃশ্যত পরিচিত। এ কারণে গত কয়েক সপ্তাহে চীনের সামর্থ্য নিয়ে কতটা বাড়তি তথ্য পাওয়া গেছে, তা নিশ্চিত নয়।
এ বিষয়ে সিঙ্গাপুরভিত্তিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক কলিন কোহ রয়টার্সকে বলেন, অস্ত্রের পরিবর্তে এই মহড়া চীনের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অনুষঙ্গগুলো (সংস্কারকৃত ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড, রকেট বাহিনী ও কৌশলগত সহায়তা বাহিনী) পর্যবেক্ষণের বড় সুযোগ করে দিয়েছে।
কোহর আশা, মহড়া থেকে চীনের সংকেত, যোগাযোগ ও ইলেকট্রনিক গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করবে যুক্তরাষ্ট্র। এত বড় সুযোগ হাতছাড়া করার মতো নয়।
চীনের হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি চলতি মাসের শুরুতে তাইওয়ান সফর করে। তার এ সফরের জবাবে তাইওয়ানকে ঘিরে জল ও আকাশপথে মহড়া শুরু করে চীন। শুরুতে এ মহড়া চার দিনে শেষ করার কথা থাকলেও পরবর্তী সময়ে তা বাড়ায় বৈশ্বিক পরাশক্তিটি।