যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প তার পরিবারের ব্যাবসায়িক কোনো প্রশ্নের উত্তর নিউ ইয়র্ক রাজ্যের তদন্তকারীদের দিতে অস্বীকার করেছেন।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজ্যের কর্মকর্তারা বলছেন, লোন ও ট্যাক্সের ছাড়ের বিষয়ে এবং নিজের সম্পদের বিষয়ে ট্রাম্প কর্তৃপক্ষকে বিভ্রান্ত করেছেন।
তবে ট্রাম্প বুধবার অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিশিয়া জেমসের কার্যালয়ে সাক্ষাৎকারটি ব্লক করার জন্য মামলা করেছিলেন এবং তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
ম্যানহাটনে পৌঁছানোর এক ঘণ্টা পরই অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে উপস্থিত হলেও কোনো প্রশ্নের উত্তর দেননি তিনি।
তিনি বলেছেন, ‘আমি যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের অধীনে প্রতিটি নাগরিকের প্রদত্ত অধিকার এবং সুযোগ-সুবিধাগুলোর অধীনে প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকার করেছি।’
জেমসের কার্যালয় থেকে ট্রাম্পের সাক্ষাৎকারটি নেয়া হয়েছিল। কিন্তু ট্রাম্প পঞ্চম সংশোধনীর কথা বলে কোনো প্রশ্নের জবাব দেননি।
অ্যাটর্নি জেনারেলের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘অ্যাটর্নি জেনারেল সত্য ও আইনের অনুসরণ করবেন।’
একই সঙ্গে জানানো হয়েছে, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তদন্ত অব্যাহত থাকবে।
আইনি বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প বুধবার প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে অস্বীকার করেছেন, কারণ তার দেয়া উত্তরগুলো সেই অপরাধ তদন্তে তার বিরুদ্ধেই ব্যবহার করা হতে পারে।
তবে পঞ্চম সংশোধনী একজন নাগরিককে ফৌজদারি মামলায় নিজের বিরুদ্ধে সাক্ষী হতে বাধ্য করা থেকে রক্ষা করে।
এর আগে নিজের সোশ্যাল মিডিয়া সাইট-ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, নিউ ইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিশিয়া জেমসের সঙ্গে বুধবার দেখা করতে যাচ্ছেন তিনি।
জেমস সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং তার প্রতিষ্ঠানের সম্পদের মূল্য ভুলভাবে বর্ণনা করেছে কি না, তা তদন্ত করছেন।
জেমসের কার্যালয় জানুয়ারিতেও ট্রাম্পকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকেছিল।
এফবিআই এজেন্টরা মঙ্গলবার ফ্লোরিডায় ট্রাম্পের মার-এ-লাগো এস্টেটে অভিযান চালায়। এরপর ট্রাম্পের অসংখ্য আইনি জটিলতাগুলো আবার লাইমলাইটে চলে আসে।
এফবিআইয়ের দাবি, ২০২১ সালে হোয়াইট হাউস ছাড়ার সময় গোপনীয় কিছু তথ্য সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিলেন ট্রাম্প।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ সাবেক প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, এমন ধারণাই এখন স্পষ্ট।
চলতি বছরের মে মাসে অ্যাটর্নি জেনারেলের তদন্ত রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত জানিয়ে তদন্ত শেষ করতে ট্রাম্পের একটি মামলা খারিজ করেছিলেন এক বিচারক।
জেমস একজন ডেমোক্র্যাট, সোচ্চার ট্রাম্প সমালোচক। আদালতের ফাইলিংয়ে তিনি জানিয়েছেন, তার অফিস ট্রাম্পের বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পেয়েছে।
ট্রাম্পের কোম্পানি ‘লোন, বিমা কভারেজ এবং ট্যাক্সসহ প্রচুর অর্থনৈতিক সুবিধা পাওয়ার জন্য সম্পদের বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়েছেন। তাই তদন্তের মাধ্যমে জড়িত পক্ষের বিরুদ্ধে মামলাসহ আইনি ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে।
এর আগে ট্রাম্পের ছেলে ডনাল্ড জুনিয়র এবং ইভাঙ্কাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। ট্রাম্পের সাক্ষ্য ম্যানহাটন জেলা অ্যাটর্নি অফিস ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই অফিসও ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের ব্যাবসায়িক লেনদেনের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
ম্যানহাটন ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির তদন্তে ট্রাম্প অর্গানাইজেশন এবং ফিন্যান্স চিফ অ্যালেন ওয়েইসেলবার্গের বিরুদ্ধে কর জালিয়াতির অভিযোগ আছে।