কারও হাতের প্ল্যাকার্ডে লেখা, ‘ট্রাম্পকে আমরা বিশ্বাস করি’, কারও হাতে ‘মেইক আমেরিকা, গ্রেট এগেইন’, আবার কারও হাতের প্ল্যাকার্ডে ‘ফেইক নিউজ সিএনএন’। দূর-দূরান্ত থেকে তারা এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ফ্লোরিডার রিসোর্ট ও বাড়ি মার-এ-লাগোর সামনে। করছেন প্রতিবাদ-বিক্ষোভ।
দেশটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এফবিআই) ডনাল্ড ট্রাম্পের ফ্লোরিডার বাড়িতে অভিযান চালাতে পারে এমন খবর পেয়ে গত শুক্রবার থেকে তারা সাবেক প্রেসিডেন্টের সমর্থনে হাজির হয়েছেন।
সেখানেই তারা ট্রাম্পের পক্ষে নানা ধরনের স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড ও টিশার্ট পরে দাঁড়িয়েছেন।
ডেইলি মেইলের খবরে বলা হয়, শুক্রবার থেকেই সমর্থকরা বাড়ির সামনে দাঁড়ালেও ট্রাম্পের বাড়িটিতে এফবিআই তল্লাশি শুরু করে সোমবার।
প্রেসিডেন্ট দপ্তরের কিছু নথিপত্র সরিয়ে ট্রাম্প নিজের ফ্লোরিডার রিসোর্টে রেখেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সে অভিযোগের তদন্ত চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ। এর অংশ হিসেবে তার বাড়িতে গোয়েন্দা সংস্থাটি তল্লাশি চালিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
সোমবার ট্রাম্প তার বাসাটিতে অভিযানের কথা জানালেও বিস্তারিত কিছু বলেননি।
অবশ্য তার আগেই একবার তার রিসোর্টটিতে অভিযান চালানো হতে পারে বলে জানান ট্রাম্প, আর সেই খবরেই সমর্থকরা আগেই হাজির হয়ে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন।
দুইবার অভিশংসনের শিকার হওয়া ট্রাম্পের সমর্থনে শুক্রবার যেসব সমর্থক ফ্লোরিডার রিসোর্টটির সামনে হাজির হন তারা অনেকেই সেখানে ক্যাম্প করে থাকছিলেন।
সোমবার রাতে তল্লাশির সময় সেখানে দেখা যায়, অনেকেই ট্রাম্পের সমর্থন করলেও সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের নামে ক্রসচিহ্ন দিয়ে রেখেছেন।
এক তরুণকে দেখা যায়, যিনি ট্রাম্পের সমর্থক হিসেবে নিজেকে গর্বিত বলে দাবি করেন।
ট্রাম্পপন্থি অনেক প্রতিবাদকারীকে দেখা গেছে, গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় ট্রাম্পের স্লোগান, ‘মেইক ভোট, কাউন্ট এগেইন’, ‘কিপ আমেরিকা গ্রেট এবং ট্রাম্পকে আমরা বিশ্বাস করি’, লেখা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারের প্রতিদ্বন্দ্বী ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন ট্রাম্প। তিনি ভোটের ফলাফল কারচুপি হয়েছে অভিযোগ করে পুনর্গণনার দাবি করেন।
যখন ট্রাম্পের ফ্লোরিডার বাসায় এফবিআই অভিযান চালাচ্ছে, তখনও সেখানে তার সমর্থকরা ভোট গণনার দাবি করছেন। জো বাইডেনকে ডিকটেটর অ্যাখ্যা দিয়ে টিশার্ট পরে দাঁড়িয়েছেন, ‘নট মাই ডিকটেটর’।
এক প্রতিবাদকারী তো রীতিমতো সিএনএনের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন। সংবাদমাধ্যমটির এক প্রতিবেদকের পাশে দাঁড়িয়ে প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে দেখাচ্ছেন, ‘ফেক নিউজ ইজ সিএনএন’।
ট্রাম্পের সমর্থনে অসংখ্য সমর্থক দাঁড়ালেও কিন্তু ট্রাম্পবিরোধী একজনকে সেখানে দেখা গেছে। সাবেক প্রেসিডেন্টকে গালি দিয়ে লেখা প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করছেন তিনি।
কিউবায় নির্বাসিত এক নারী এনবিসিসিক্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি বুঝতে পারছেন না কেন ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এফবিআই তদন্ত করছেন। কেন ‘হান্টার’ বাইডেন কিংবা ন্যান্সি পেলোসির স্বামীর বিরুদ্ধে নন।
বাড়িতে অভিযানের তথ্য জানালেও তার বিস্তারিত কিছু বলেননি ডনাল্ড ট্রাম্প।
তিনি বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ ও সহায়তার পরও আমার বাড়িতে অঘোষিত তল্লাশির দরকার ছিল না; এটা সমীচীনও নয়। এমনকি তারা আমার গোপনীয়তা লঙ্ঘন করেছে।’
এ বিষয়ে অবশ্য কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ। ওয়াশিংটন ডিসিতে এফবিআই সদর দপ্তর ও ফ্লোরিডার মায়ামিতে সংস্থাটির আঞ্চলিক কার্যালয়ের কোনো কর্মকর্তাও এ নিয়ে মুখ খোলেননি।