চীনের কঠোর হুঁশিয়ারির পরও তাইওয়ান সফর করতে পারেন যুক্তরাষ্ট্রের হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। চলমান এশিয়া সফরের অংশ হিসেবেই তিনি তাইওয়ান সফর করতে পারেন।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হোয়াইট হাউস সতর্ক করে বলেছে, চীন সামরিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে উসকানি দিয়ে ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের জবাব দিতে পারে।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কিবরির মতে, তাইওয়ানের কাছে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ কিংবা বিমান ও নৌবাহিনীর তৎপরতা বাড়িয়ে পেলোসির সফরের জবাব দিতে পারে চীন।
এদিকে স্বশাসিত দ্বীপ তাইওয়ানের একজন সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তা ও যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা বলছেন, বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সতর্কতার পরও তাইওয়ানে এই ধরনের উচ্চপর্যায়ের সফর নিয়ে চীনের প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে তারা চিন্তিত।
হোয়াইট হাউস সতর্ক করেছে যে চীন সামরিক উসকানি দিয়ে ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের জবাব দিতে পারে।
তাইওয়ানের কর্মকর্তারা বলছেন, পেলোসি খুব শিগগিরই তাইওয়ানে থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে। যদিও পেলোসি ঠিক কবে তাইওয়ান যাবেন তা এখনও স্পষ্ট নয়।
তার আসন্ন তাইওয়ান সফরকে ঘিরে প্রতিরক্ষা দপ্তরের কর্মকর্তারা এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে। এই অঞ্চলের যেকোনো চীনা গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে এবং তাকে সুরক্ষিত রাখতে ২৪ ঘণ্টা কাজ করছেন তারা।
স্পিকারের অফিস থেকে জানানো হয় এশিয়া সফর পরিকল্পনায় ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের উল্লেখ ছিল না। সেখানে বলা হয়েছিল, শুরুতে সিঙ্গাপুর হয়ে মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপান সফর করবেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র ও তাইওয়ানের কর্মকর্তারাই এখন বলছেন, পেলোসি স্বশাসিত দ্বীপটি পরিদর্শন করতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। ২৫ বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা তাইওয়ান সফর করেননি।
যুক্তরাষ্ট্রের হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি
গুঞ্জন সত্যি হলে ন্যান্সি পেলোসিই হবেন ১৯৯৭ সালের পর তাইওয়ানে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ কর্মকর্তা।
তবে চীনের পক্ষ থেকে সোমবার আবারও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছে, ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ান সফর করলে গুরুতর পরিণতি ভোগ করতে হবে।
তাইওয়ানে পেলোসির সম্ভাব্য সফর শুধু চীনেরই মাথাব্যথার কারণ হয়নি, এটি একই সঙ্গে ভাবিয়েছে বাইডেন প্রশাসনকেও। স্পিকারকে পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে যেতে নিরুৎসাহ করার খবর পাওয়া গেছে।
দ্বীপ রাষ্ট্রটিতে পেলোসির সফরের সম্ভাবনা নিয়ে গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে জানতে চান সাংবাদিকরা। জবাবে তিনি বলেন, এটা ভালো পরিকল্পনা নয়।
বাইডেন আরও বলেন, পেলোসির তাইওয়ান সফরের প্রয়োজন নেই বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী।
স্বায়ত্তশাসিত তাইওয়ানকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া প্রদেশ মনে করে চীন। দেশটির ইচ্ছা তাইওয়ানকে আবার মূল ভূখণ্ডে অন্তর্ভুক্ত করা। সে লক্ষ্যে প্রয়োজনে বল প্রয়োগ করতে চায় বেইজিং।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সফরের কোনো ঘোষণা দেননি পেলোসি এবং তাইওয়ানের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি অপরিবর্তিত রয়েছে।