যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সম্পর্কে ওঠানামা আছে, আছে নানা সংকটও। তবে মিয়ানমারের সঙ্গে চীনের যোগাযোগটা খারাপ না। এরই প্রেক্ষাপটে বহু বছর পর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনায় মিয়ানমারকে চাপ দিতে চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জো বাইডেন প্রশাসন।
সোমবার অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) সাবেক এক পার্লামেন্ট মেম্বারসহ (এমপি) মিয়ানমারের চার গণতন্ত্রী কর্মীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে সামরিক জান্তা সরকার।
এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলেছে, অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে চীন মিয়ানমারের ওপর বেশি প্রভাব বিস্তার করার ক্ষমতা রাখে। চীনের উচিত মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগ করা।
স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র নেদ পাইস বলেন, এ বিষয়ে বিশ্বের সব দেশকেই আরও কিছু করার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরাও যা পারি, সেগুলো করব।
তবে চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে তারা কথা বলবে না।
এর আগে সোমবার ওই চারজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।
বিবিসি বলছে, অনেক বছর ধরেই দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নজির ছিল না। তবে চারজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকরের মধ্য দিয়ে কয়েক দশক পর সেই দণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া আবার ফিরে এলো।
স্থানীয় গ্লোবাল নিউ লাইট পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘নৃশংস ও অমানবিক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে’ নেতৃত্ব দেয়ার জন্য এই চারজনকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে।
কারা প্রথা অনুযায়ী এ দণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। তবে কোথায় এ দণ্ড কার্যকর হয়েছে তা নিয়ে ক্ষমতাসীন সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে গত বছর ক্ষমতা গ্রহণের পর দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে মিয়ানমারের শীর্ষ নেতারাসহ অনেককে গ্রেপ্তার করে সামরিক জান্তা। বেশ কজনকে দেয়া হয় মৃত্যুদণ্ড।
মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া একজন এনএলডির সাবেক এমপি ফিও জেয়া থাও গ্রেপ্তার হয়েছিলেন গত নভেম্বরে। এরপর চলতি বছরের জানুয়ারিতে তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে রায় ঘোষণা করা হয়।
সামরিক আদালতের রায়ে গণতন্ত্রী কর্মী কাউ মিন উকেও দেয়া হয় একই দণ্ড। বাকি দুজনকে দণ্ড দেয়া হয়েছিল এক নারীকে হত্যার মামলায়।
গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশটির সেনাবাহিনী; আটক করে শান্তিতে নোবেলজয়ী সু চি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্তসহ অনেককে।
এরপর থেকেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে নজিরবিহীন বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে মিয়ানমার। বিক্ষোভ দমনে কঠোর হয় সেনাবাহিনী। গ্রেপ্তার করা হয় বহু বিক্ষোভকারীকে। এ ছাড়া সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়তে গিয়ে প্রাণ গেছে দেশটির অনেক নাগরিকের।