ইউক্রেনের ওডেসা বন্দরে হামলার বিষয়ে মুখ খুলল রাশিয়া। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওডেসার সামরিক অবকাঠামো এবং অস্ত্রের মজুতে শনিবার আঘাত হেনেছে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ওডেসার সমুদ্রবন্দর, একটি শিপইয়ার্ড, একটি ডক করা ইউক্রেনীয় যুদ্ধজাহাজ এবং কিয়েভ সরকারকে যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা হারপুন অ্যান্টি-শিপ মিসাইলের একটি গুদাম ধ্বংস করা হয়েছে সাগর থেকে ছোড়া দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে। হামলায় ইউক্রেনীয় নৌবাহিনীর জাহাজ মেরামত করার একটি কারখানাও বিকল হয়ে গেছে।
ইউক্রেনের দক্ষিণ-পশ্চিমের প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র ওডেসা। ইউক্রেনীয় বন্দর থেকে শস্য রপ্তানি ফের চালু করতে জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় মস্কো-কিয়েভ চুক্তির ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই এ হামলা হয়।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করে রাশিয়া। মস্কো দাবি করে আসছে, রুশ সেনারা কেবল ইউক্রেনের সামরিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালাচ্ছে। তবে ইউক্রেন ও তার পশ্চিমা মিত্রের অভিযোগ, সামরিক স্থাপনার পাশাপাশি বেসামরিক স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে পুতিনের বাহিনী।
ওডেসায় হামলা প্রসঙ্গে কিয়েভ কর্মকর্তারা বলছেন, বন্দরে হামলায় চারটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল। বন্দরের শস্য মুজতের স্থান ছিল লক্ষ্যবস্তু। দুটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার আগেই ধ্বংস করে দেয়া হয়েছিল। তাই ক্ষয়ক্ষতি অনেক কম হয়েছে।
তবে রাশিয়ার দাবি শস্যে নয়, হামলা হয়েছে কেবল সামরিক স্থাপনায়।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি এ হামলাকে ‘বর্বর’ বলে বর্ণনা করেছেন। জোরগলায় তিনি বলেছেন, ‘রাশিয়ান কালিব্র ক্ষেপণাস্ত্র আলোচনা ও চুক্তির সম্ভাবনাকে ধ্বংস করে দিয়েছে।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও ওডেসা বন্দরে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। গুতেরেস বলেন, ‘রাশিয়া, ইউক্রেন ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় হওয়া চুক্তির বাস্তবায়ন অপরিহার্য। কারণ এটির আওতায় থাকা পণ্যগুলো বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট মোকাবিলা এবং লাখ লাখ মানুষের কষ্ট লাঘবের জন্য নিদারুণভাবে প্রয়োজন।
রাশিয়া-ইউক্রেন চুক্তিটি শুক্রবার তুরস্ক ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় হয়েছিল। যুদ্ধের কারণে ব্যাহত কৃষ্ণ সাগরের বন্দরগুলোর মাধ্যমে ইউক্রেনীয় শস্য রপ্তানি পুনরায় শুরু করার জন্য পথ সুগম হয়েছিল।
বিশ্ববাজারে রাশিয়ার শস্য ও সার রপ্তানির ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে জাতিসংঘের সঙ্গে একটি চুক্তিও হয় রাশিয়ার। শুক্রবার স্মারকলিপিতে সই করে জাতিসংঘ ও রাশিয়া।