ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য রপ্তানিতে কিয়েভ ও ক্রেমলিন চুক্তি স্বাক্ষরের এক দিন না পেরোতেই বন্দরনগরী ওডেসায় হামলা হয়েছে। রাশিয়ার ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইউক্রেনের এই বন্দরনগরের অবকাঠামোয় আঘাত করেছে।
বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট সমাধানে শুক্রবার প্রতীক্ষিত চুক্তিতে স্বাক্ষর করে রাশিয়া ও ইউক্রেন। এর আওতায় ইউক্রেন থেকে শস্য রপ্তানি পুনরায় শুরুর জন্য কৃষ্ণ সাগর তীরবর্তী বন্দরগুলো পুনরায় চালু করার কথা। আর এই রপ্তানি কার্যক্রমে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো বন্দরনগরী ওডেসা।
কিয়েভে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ব্রিজেট ব্রিঙ্ক এক টুইটার বার্তায় বলেছেন, রাশিয়া শনিবার ওডেসা বন্দরনগরীতে হামলা চালিয়েছে। ক্রেমলিন খাদ্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। এই হামলার জন্য রাশিয়াকে জবাবদিহি করতে হবে।
জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় ইস্তানবুলের জমকালো ডলমাবাহচে প্রাসাদে চুক্তিতে সই করেন রাশিয়ান প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু ও ইউক্রেনের অবকাঠামোমন্ত্রী ওলেক্সান্ডার কুব্রাকভ। চুক্তি হলেও এক টেবিলে বসেননি তারা।
চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, কৃষ্ণ সাগরে অবরোধ শিথিল করবে রাশিয়া। এতে ইউক্রেন থেকে জাহাজে করে খাদ্য রপ্তানির পথে আর কোনো বাধা থাকবে না।
চুক্তিটি পুরোপুরি বাস্তবায়নের জন্য রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতি আহ্বান জানান জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।
ওডেসা বন্দর দিয়েই ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্যের চালান ইউক্রেন থেকে তুরস্কের উদ্দেশে যাওয়ার কথা রয়েছে। সেই বন্দরনগরীতেই রাশিয়ার হামলা চুক্তির বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় তৈরি করেছে।
ওডেসা, চোরনোমরস্ক ও ইউঝনয়- কৃষ্ণ সাগর তীরবর্তী ইউক্রেনের এই তিনটি বন্দর থেকেই মূলত ইউক্রেনের রপ্তানি কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এর মধ্যে ওডেসা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বন্দর।
ইউক্রেনের অপারেশনাল কমান্ড সাউথ টেলিগ্রাম বার্তায় জানিয়েছে, রাশিয়া কালিব্র ক্রুজ মিসাইল দিয়ে ওডেসা সমুদ্রবন্দরে হামলা চালায়। মিসাইলগুলোর দুটি বন্দরের অবকাঠামোয় আঘাত করে। এ ছাড়া দুটি ক্ষেপণাস্ত্র বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী প্রতিহত করেছে।
রাশিয়ার এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ইউক্রেন বলেছে, খাদ্যশস্য নিরাপদে রপ্তানির ক্ষেত্রে রুশ বিরোধিতার সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সেসব বাধা কাটানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে আমরা জাতিসংঘ ও তুরস্কের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। চুক্তি কার্যকর না হলে বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকটের দায়ভার রাশিয়াকে নিতে হবে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র ফারহান হক বলেছেন, ‘বিশ্ব বাজারে ইউক্রেনীয় শস্য এবং সংশ্লিষ্ট পণ্যের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট মোকাবেলা করার পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষের দুর্ভোগ কমাতে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে হবে।’