ইউক্রেন যুদ্ধের খবর প্রচার করে ভ্লাদিমির পুতিনের সরকারের নির্দেশনায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল দেশটির সরকারি প্রভাবমুক্ত ‘সর্বশেষ’ টেলিভিশন চ্যানেল টিভি রেইন। অবশেষে চার মাস পর দেশের বাইরে গিয়ে আবার সম্প্রচারে এসেছে চ্যানেলটি।
ইউরোপের দেশ লাটভিয়া থেকে নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম চালু করেছে রাশিয়ার ভাষায় রজড নামে পরিচিত এই টেলিভিশন চ্যানেল।
বিবিসি বলছে, গত ফেব্রুয়ারির শেষদিকে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরু হলে এর কদিনের মাথায় মার্চে যুদ্ধের খবর প্রচার করায় রেইন টিভির সম্প্রচার বন্ধ করে দেয় সরকার।
পরে টেলিভিশন চ্যানেলটির অনেক কর্মী রাশিয়া থেকে পালিয়ে যান। বিদেশে গিয়ে চ্যানেলের কার্যক্রম চালানোর জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকেন তারা।
স্থানীয় সময় সোমবার রাত ৮টার দিকে লাটভিয়ার রাজধানী রিগা থেকে সংবাদ অনুষ্ঠান প্রচারের মাধ্যমে সম্প্রচার শুরু করে এই টিভি চ্যানেল।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্প্রচার অনুমোদন পাওয়ার কথা জানিয়ে টেলিভিশন চ্যানেল কর্তৃপক্ষ বলছে, শিগিগিরই পুরোদমে সম্প্রচারে নামবে তারা। লাটভিয়া ছাড়াও জর্জিয়া, ফ্রান্সসহ আরও কয়েকটি দেশ থেকে সম্প্রচার চালু করা হবে।
এমন প্রেক্ষাপটে রাশিয়ার অধিবাসীরা ইউটিউবের মাধ্যমে এই টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠান দেখার সুযোগ পাবেন।
ইউক্রেনে রাশিয়া যে আগ্রাসন শুরু করে তাকে ‘যুদ্ধ’ বলায় মার্চে টিভি রেইনের সম্প্রচার বন্ধ করে দেয় দেশটির টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ সেনাদের সামরিক অভিযান।
বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর এখন পর্যন্ত দেশটির ৮০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। একই সঙ্গে দেশ ছেড়েছে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ।
যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এ যুদ্ধ বন্ধ না হলে বিশ্বজুড়ে বড় ধরনের খাদ্যসংকট তৈরি হবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।