বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দাবদাহে পুড়ছে ইউরোপ, মরছে মানুষ

  •    
  • ১৮ জুলাই, ২০২২ ২২:২১

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপপ্রবাহ ঘন ঘন, তীব্র এবং দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে। শিল্প যুগ শুরু হওয়ার পর থেকে পৃথিবী ইতোমধ্যেই প্রায় ১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় উষ্ণ হয়েছে। কার্বন নিঃসরণ কমানো না গেলে তাপমাত্রা বাড়তে থাকবে।

তাপপ্রবাহে নাকাল ইউরোপ। ইতিহাসের তীব্র তাপমাত্রার রেকর্ড টপকে যেতে পারে ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যে। ধারণ করা হচ্ছে, অসহনীয় এই গরমে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে। স্পেন ও পর্তুগালের পর দাবালন উত্তরে আরও ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের দিকে যাচ্ছে। দেশ দুটিতে ইতোমধ্যে তাপজনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে এক হাজারের বেশি মানুষের।

যুক্তরাজ্যে সম্প্রতি প্রথমবারের মতো তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট) রেকর্ড হয়েছে। সোমবার রেকর্ড হয়েছে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৯৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট)। ২০১৯ সালে রেকর্ড হয়েছিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০১.৬৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট)।

A reminder of the top ten hottest UK days on record#Heatwave2022 #heatwave pic.twitter.com/l97zKjlkR6

— Met Office (@metoffice) July 18, 2022

ফ্রান্সের দক্ষিণ-পশ্চিমের ১৫ অঞ্চলে তাপমাত্রা রেকর্ড মাত্রায় পৌঁছতে পারে বলে সতর্ক করেছে আবহাওয়া অফিস। দমকলকর্মীরা দাবানলের সঙ্গে লড়াইয়ের পাশাপাশি হাজার হাজার লোককে নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছেন।

ফ্রান্স সরকার বলছে, দক্ষিণ-পশ্চিমের একটি জনপ্রিয় পর্যটন অঞ্চল গিরোন্ডে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গত মঙ্গলবার থেকে আগুনে পুড়ে গেছে প্রায় ১৪ হাজার ৩৪ হাজার একর জমি।

পুড়ছে স্পেনের জামোরার প্রদেশ। সিয়েরা দে লা কুলেব্রা পর্বতশ্রেণিতে এক মেষপালকের মরদেহ পাওয়া গেছে। এর আগে রোববার ৬২ বছরের এক ফায়ার ফাইটার নিহত হন।

কাতালোনিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে, পন্ট দে ভিলোমারার কাছে মার্সিডিজ পিনোর বাড়িতে আগুন লেগেছিল। তিনি বলেন, ‘বিছানায় ছিলাম। জানালা দিয়ে খুব লাল আলো দেখলাম। যত দ্রুত সম্ভব দরজার দিকে দৌড়ে গেলাম। দেখি বাড়ির সামনে আগুন জ্বলছে।’

মালাগার কাছে মিজাস পাহাড়ের পাশাপাশি ক্যাস্টিলা ওয়াই লিওন, গ্যালিসিয়া এবং এক্সট্রিমাদুরায়ও দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজের অঞ্চলটি পরিদর্শন করার কথা রয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার পর্তুগালে তাপমাত্রা ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। দেশটির আবহাওয়া অফিস বলছে, মূল ভূখণ্ডের এক-তৃতীয়াংশ এখনও চরম ঝুঁকিতে রয়েছে।

#EFFIS Fire Danger Forecast for 18 July🔥Very Extreme Danger forecasted in:➡️Large parts of #Spain🇪🇸, except in Catalonia and Galicia➡️Occitanie, Pays de la Loire and Brittany, #France🇫🇷➡️North Eastern #Portugal🇵🇹 ➡Greek 🇬🇷Islands & east of Athens➡Western #Turkey 🇹🇷 pic.twitter.com/jhhLL7pS6k

— Copernicus EMS (@CopernicusEMS) July 18, 2022

বিবিসির পর্তুগাল সংবাদদাতা অ্যালিসন রবার্টস বলেন, ‘পরিস্থিতি ভয়াবহ। চরম খরার কারণে এমনটি হয়েছে।

‘জরুরি এবং সিভিল ডিফেন্স কমান্ডারদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার, প্রাণহানি ঠেকাতে দ্রুত কাজ করা। উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চল থেকে ইতোমধ্যে ৮৬০ জনেরও বেশি মানুষকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপপ্রবাহ ঘন ঘন, তীব্র এবং দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে। শিল্প যুগ শুরু হওয়ার পর থেকে পৃথিবী ইতোমধ্যেই প্রায় ১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় উষ্ণ হয়েছে। কার্বন নিঃসরণ কমানো না গেলে তাপমাত্রা বাড়তে থাকবে।

স্পেনের ক্যাস্টিলা-লা মাঞ্চা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অ্যান্ড বায়োকেমিস্ট্রির ডিন এনরিক সানচেজ জানিয়েছেন, তাপপ্রবাহ শিগগিরই স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।

‘আমি বলতে চাচ্ছি যে সামনের বছরগুলোতে তাপমাত্রা যে বাড়বে না, তা বলা যাচ্ছে না। মানে তাপ তরঙ্গের ঘটনাগুলো আরও বেশি স্বাভাবিক হয়ে উঠবে... ইউরোপজুড়ে।’

আর্কটিক সার্কেলের উত্তরে সবচেয়ে শীতল জনবসতিপূর্ণ স্থান হিসেবে বিখ্যাত ছিল সাইবেরিয়ার গ্রাম ভারখোয়ানস্ক, যেখানে রেকর্ড সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৬৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

চলতি বছরের জুনে এ গ্রামটি আর্কটিক সার্কেলের উত্তরে উষ্ণতম স্থানে পরিণত হয়েছে। গ্রামটির সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যেখানে সাধারণ গ্রীষ্মে তাপমাত্রা থাকত ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে।

ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশন প্রজেক্ট বলছে, মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পৃথিবীর তাপমাত্রা ৬০০ গুণ বেড়েছে।

ল্যানসেটের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাস ব্যাপক মাত্রায় বেড়েছে। এই উষ্ণায়ন বন্যা, দূষণ, রোগের বিস্তারসহ নানা বিপদ ডেকে আনবে। তবে গবেষকরা এসবের মধ্যে তাপপ্রবাহকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছেন।

চলতি সপ্তাহে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, রেকর্ডের তিনটি উষ্ণতম বছরের মধ্যে একটি ২০২০ সাল; তখন গড় বৈশ্বিক তাপমাত্রা প্রাক-শিল্প স্তর থেকে ১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি রেকর্ড হয়েছিল। ২০২৪ সালের মধ্যে এটি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এ বিভাগের আরো খবর