জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়ছে বিশ্বজুড়ে; সে ধাক্কা লেগেছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতেও। শীতের সময় তীব্র শীত আর গরমে প্রচণ্ড দাবদাহ। এ অবস্থায় প্রাণ টিকে থাকাই কষ্টকর।
কয়েক দিন ধরে নয়াদিল্লিসহ দেশটির বিভিন্ন এলাকায় বইছে অতি তাপপ্রবাহ। তাপমাত্রা ঠেকেছে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। তবে রোববার সকালে বৃষ্টি নেমেছে নগরে। স্বস্তির এই বৃষ্টি কমিয়েছে উত্তাপ।
এনডিটিভি বলছে, বিভিন্ন এলাকার বৃষ্টিতে দিল্লির তাপমাত্রা নেমে এসেছে ২৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
এ ছাড়া কেন্দ্রীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর আগামী তিন দিন পাঞ্জাব, হরিয়ানা, চণ্ডীগড় এবং উত্তর প্রদেশে বজ্রসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে।
গত কয়েক মাস ধরেই ভারতে তাপমাত্রার পারদ চড়ছে। পশ্চিমবঙ্গের কলকাতাসহ দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোর তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির আশপাশে। তাপপ্রবাহের পরিস্থিতিতে শহরের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
এপ্রিলে বাঁকুড়ার তাপমাত্রা উঠেছিল ৪৩ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। মে মাসের মাঝামাঝি রাজস্থানের শ্রীগঙ্গানগরে তাপমাত্রার পারদ সর্বোচ্চ ৪৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায়। রাজস্থানের বিকানির চুরুতেও তাপমাত্রা ছিল ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ওই সময় নয়াদিল্লির অনেক এলাকায় তীব্র তাপপ্রবাহ ছিল। নাজফগড়ে তাপমাত্রা ৪৬ দশমিক ১ ডিগ্রিতে পৌঁছায়।
সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর (আইএমডি) দিল্লির অনেক এলাকায় তীব্র গরমের কমলা সতর্কতা জারি করে। জারি হয় হলুদ সতর্কতার সংকেতও। আবহাওয়া অনুযায়ী আইএমডি চার ধরনের সতর্কতা জারি করে। এতে সবুজে কোনো সতর্কতা নেই, হলুদে সতর্কতা, কমলাতে জরুরি অবস্থার জন্য প্রস্তুত থাকা এবং রেড অ্যালার্টে জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলা হয়।
আবহাওয়া পরিস্থিতি প্রায় একই রয়েছে এখনও। তবে এর মধ্যে রোববারের অল্প সময়ের বৃষ্টিতে উত্তাপ কমায় কিছুটা স্বস্তি মিলেছে নয়াদিল্লির নাগরিক জীবনে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বজুড়ে যে ভয়াবহতা সৃষ্টি হচ্ছে তার প্রভাব পড়ছে এসব দেশে। কার্বন নিঃসরণ না কমাতে পারলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে। বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে দেশগুলো।
কয়েক দিন ধরে তীব্র তাপপ্রবাহে ইউরোপে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। দাবানলে পুড়ছে ফ্রান্স, স্পেন ও পর্তুগালের মতো দেশগুলো। শিগগিরই যে এই ভয়াবহতা কমবে, এমন কোনো সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না।
সপ্তাহখানেক ধরে চলা দাবানল নিয়ন্ত্রণে অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা রীতিমতো যুদ্ধ করেও কোনো সুরাহা করতে পারছেন না।
ইউরোপের কিছু অংশে তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর চলে যাওয়ার পর এই দাবানলের সৃষ্টি হয়। দিন যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে।