বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মাহিন্দা এখনও শ্রীলঙ্কায়, নেই পালানোর চিন্তা

  •    
  • ১৫ জুলাই, ২০২২ ২২:১৯

মাহিন্দা রাজাপাকসের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, মাহিন্দা এখন শ্রীলঙ্কায় আছেন। দেশ ছাড়ার কোনো পরিকল্পনা নেই তার। লঙ্কানদের কঠিন সময়ে তাদের পাশেই থাকবেন তিনি।

বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসে গোতাবায়া। ব্যাপক বিক্ষোভের মধ্যেই দেশ থেকে পালিয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্র মালদ্বীপ হয়ে সিঙ্গাপুরে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। এর আগে গত মে মাসে আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেন তার ভাই ও দেশটির তৎকালীন প্রধানমন্দ্রী মাহিন্দা রাজাপকসে। এখন প্রশ্ন উঠেছে মাহিন্দা রাজাপাকসে কোথায় আছেন।

আল জাজিরা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাহিন্দা রাজাপাকসে এখন শ্রীলঙ্কায় আছেন। দেশ ছাড়ার কোনো পরিকল্পনা নেই তার।

তার একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, লঙ্কানদের কঠিন সময়ে তাদের পাশেই থাকবেন মাহিন্দা।

তাছাড়া মাহিন্দা রাজাপাকসের বড় ছেলে সাবেক মন্ত্রী নামালও দেশে থাকবেন। জনসম্মুখে এমন ঘোষণা দিয়েছেন নামাল নিজে।

গত কয়েক মাস ধরেই শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে চরম মন্দা বিরাজ করছে। বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে, মুদ্রাস্ফীতিও আকাশছোঁয়া। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী কিনতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে মানুষ।

এ অবস্থায় ক্ষোভ দানা বাঁধতে শুরু করে দেশটির সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে। এক পর্যায়ে রাজাপাকসে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়।আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে।

তখন শোনা য়ায়, বিক্ষোভকারীদের হাত থেকে রক্ষা পেতে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ত্রিনকোমালিতে একটি নৌ ঘাঁটিতে আশ্রয় নেন মাহিন্দা ও তার পরিবারের সদস্যরা। সেসময় মাহিন্দা, তার ছেলে নামালসহ ১৫ মিত্রের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয় দেশটির একটি আদালত।

এরপর লাগাতার বিক্ষোভের মুখে গোতাবায়ার দেশত্যাগের পর মাহিন্দা রাজাপাকসেও দেশ ছেড়েছেন কিনা তা নিয়ে ফের গুঞ্জন উঠেছে। তাদের আরেক ভাই সাবেক অর্থমন্ত্রী বাসিল রাজাপাকসেও দেশ ছেড়ে যেতে চেয়েছিলেন। তবে তার সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মাহিন্দার একটি সূত্রের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানিয়েছে, মাহিন্দা রাজাপাকসে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে খুবই ব্যথিত। মাহিন্দা ও নামাল জানিয়েছেন, তারা শ্রীলঙ্কা ছাড়বেন না।

মাহিন্দা ২০০৫ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট হন। এরপর থেকে নিজের ভাইদের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়ে আসেন তিনি।

প্রেসিডেন্ট থাকার সময়ে মাহিন্দা তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী গোতাবায়াকে সঙ্গে নিয়ে দেশটিতে কয়েক দশক ধরে চলতে থাকা তামিল বিদ্রোহ দমন করেন।

২০১৫ সালে মাহিন্দা ক্ষমতা হারান। প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদ ছাড়েন গোতাবায়া। ২০১৯ সালের দেশটিতে ইস্টার সানডেতে সন্ত্রাসী হামলার পর ক্ষমতায় ফেরে রাজাপাকসে পরিবার। একজন দুইবারের বেশি প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না-এ নিয়মের কারণে মাহিন্দা তখন প্রেসিডেন্ট হতে পারেননি। বিপুল জনসমর্থন নিয়ে প্রেসিডেন্ট হন গোতাবায়া।

২০২০ সালে পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা বাড়ে গোতাবায়ার দল শ্রীলঙ্কা পদুজানা পেরামুনার (এসএলপিপি)। সংবিধান সংশোধনের সুযোগ পায় দলটি। প্রধানমন্ত্রী পদে ভাই মাহিন্দাকে বসান গোতাবায়া। তাদের আরেক ভাই বাসিলসহ আত্মীয়দের মন্ত্রীসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদ দেন তিনি।

ভাইদের মধ্যে বিরোধগোতাবায়া প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধ শুরু হয় বলে আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়।মাহিন্দার এক ঘনিষ্ঠজন বলেছেন, গোতাবায়াকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়ে আসেন মাহিন্দা। কিন্তু ক্ষমতা নেয়ার পর থেকে মাহিন্দাকে একপাশে ছুড়ে ফেলেন গোতাবায়া।

আর এ থেকেই দুই ভাইয়ের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে।

তিনি বলেন, ‘শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত গোতাবায়া রাজাপাকসে জানতেন না কীভাবে সরকার চালাতে হয়। কিন্তু তিনি কখনই মাহিন্দার পরামর্শ নেননি।’গত সপ্তাহে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে কথা বলার সময় গোতাবায়ার চাচাত ভাই উদয়াঙ্গা বীরাতুঙ্গাও বলেছেন, ‘সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় প্রেসিডেন্ট কখনই প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ নেননি।’

গোতাবায়াকে সামরিক মানসিকতার বলে আখ্যা দেন তিনি। বলেন, ‘গোতাবায়া যেকোনও কিছু সামলানোর ক্ষেত্রে সামরিক পথই বেছে নিতেন।’

শ্রীলঙ্কার সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ২০১৯ সালে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে গোতাবায়াকে মনোনয়ন দিতে অনিচ্ছুক ছিলেন মাহিন্দা। তবে ভিয়াথ মাগা নামে একটি প্রেসার গ্রুপের চাপে শেষ পর্যন্ত তাকে মনোনয়ন দেন মাহিন্দা। এই প্রেসার গ্রুপটি তৈরি করে গোতাবায়া সমর্থকেরা।

ক্ষমতায় ফিরতে রাজাপাকসে পরিবারের ‘ছলচাতুরি’

শ্রীলঙ্কার বিক্ষোভকারীরা মাহিন্দা রাজাপাকসের সহযোগীর করা মন্তব্যের নিন্দা করেছেন। এটিকে রাজাপাকসে পরিবারের ক্ষমতায় ফিরে আসার আরেকটি প্রচেষ্টা হিসাবে বর্ণনা করেছেন তারা।

বিক্ষোভকারীদের বিমুক্তি দুশান্ত বলেছেন, ‘অন্য কাউকে দোষারোপ করা রাজাপাকসে পরিবারের রবাবরেই কৌশল। রাজাপাকসে এমন একটি পরিবার যারা বছরের পর বছর ধরে জোঁকের মতো শ্রীলঙ্কার মানুষের রক্ত পান করেছে। তারা সমস্যায় পড়লে সব সময় অন্য কাউকে দোষারোপ করেছে।

মাহিন্দা কিছুই জানতেন না বলে তার সহযোগীর করা দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন দুশান্ত। তিনি বলেন, ‘মাহিন্দা রাজাপাকসে গোতাবায়া রাজাপাকসের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তাই তিনি এখন সহজভাবে বলতে পারবেন না যে তিনি কিছুই জানেন না। মাহিন্দা রাজাপাকসে এবং নামাল রাজাপাকসেকে রক্ষা করার জন্য এটি তাদের আরেকটি কৌশল।’

অ্যাক্টিভিস্ট শেহান মালাকা গামাগে বলেন, ‘রাজাপাকসে ভাইদের মধ্যে রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকতে পারে। তবে তারা কোনো পরিস্থিতিতেই একে অপরের ক্ষতি করবে না। যখন পরিবারের কথা আসে, তখন তারা সবাই এক হয়ে যায়।’

এ বিভাগের আরো খবর