বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নূপুর শর্মাকে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইতে বলল আদালত

  •    
  • ১ জুলাই, ২০২২ ১৪:৩৫

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বলে, ‘তার পুরো দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। গোপন বিষয় নিয়ে নূপুর শর্মার দায়িত্বহীন ও বেফাঁস মন্তব্য গোটা দেশে আগুন ছড়িয়ে দিয়েছে।’

ভারতে এখন যা ঘটছে তার জন্য ক্ষমতাসীন বিজেপির বহিষ্কৃত মুখপাত্র নূপুর শর্মাকে এককভাবে দায়ী করেছে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। গোপন বিষয় নিয়ে নূপুর শর্মার দায়িত্বহীন ও বেফাঁস মন্তব্য গোটা দেশে আগুন ছড়িয়ে দিয়েছে, জানায় দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের বিষয়টি উল্লেখ করে শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বিজেপির সাবেক এ মুখপাত্রের কঠোর সমালোচনা করে।

দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুস্তান টাইমস এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

আদালত আরও জানায়, উত্তরপ্রদেশের বারানসীর জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে হিন্দু-মুসলিমের বিরোধের মধ্যে মোহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে নূপুর শর্মার মন্তব্য দেশজুড়ে ভয়াবহ বিতর্কের জন্ম দেয়।

আদালত আরও বলে, ‘তার পুরো দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।’

৩৭ বছর বয়সী এই নেত্রী দেশের বিভিন্ন জায়গায় তার বিরুদ্ধে করা এফআইআর নয়াদিল্লিতে স্থানান্তরের আবেদন জানালে আদালত তার বিষয়ে এমন পর্যবেক্ষণ দেয়।

এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে কাতার, সৌদি আরব, কুয়েতসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ ভারতকে চিঠি দিয়েছে। পরে বিজেপি সরকার জানিয়েছে, ভারতে সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকার রয়েছে।

আদালত জানিয়েছে, তার বেফাঁস মন্তব্য রাজস্থানের উদয়পুরে দর্জি হত্যার মতো অপ্রত্যাশিত ঘটনার জন্য দায়ী। এই হত্যার জেরে পুরো রাজ্য ও এর বাইরে উত্তেজনা ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে।

পরিস্থিতি সামাল দিতে আরোপিত কঠোর বিধিনিষেধ এখনও রাজস্তানে বহাল রয়েছে যেটি ভারতের অন্যতম প্রধান পর্যটক আকর্ষণীয় স্থান।

মহানবীকে (সা.) নিয়ে নূপুর শর্মার অবমাননাকর মন্তব্য ভিন্নধারার গণমাধ্যমে তুলে ধরার জেরে গ্রেপ্তার হন ভারতের জনপ্রিয় ফ্যাক্ট-চেকিং ওয়েবসাইট অল্টনিউজের প্রতিষ্ঠাতা সাংবাদিক মোহাম্মদ জুবায়ের।

আদালত তিরস্কার করে আরও জানিয়েছে, নূপুরের মন্তব্যের জেরে সহিংসতা ছড়িয়েছে উত্তর প্রদেশেও।

সম্প্রতি মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগে নূপুর শর্মাকে ডেকে কথা বলতে চায় পুলিশ, তবে সেসময় তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।

মুম্বাই পুলিশ জানিয়েছে, প্রথমে ই-মেইলে ২৫ জুন পুলিশের সামনে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য দিতে বলা হয় নূপুরকে। কিন্তু উত্তর দেননি তিনি।

এরপরই নূপুরের খোঁজে তার নয়াদিল্লির বাড়িতে উপস্থিত হয় পুলিশের একটি দল। কিন্তু শুক্রবার পর্যন্ত পাঁচ দিন ধরে বিজেপির এই সাবেক মুখপাত্রের খোঁজ পাওয়া যায়নি।

শুধু মুম্বাই নয়, বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য পশ্চিমবঙ্গেও নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি থানায় তার বিরুদ্ধে করা হয় এফআইআর।

২০ জুন থানায় উপস্থিত হওয়ার জন্য তলবও করা হয়েছে তাকে। কিন্তু নূপুর সেখানে যাবেন কি না, তা নিয়েও তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।

সম্প্রতি একটি টেলিভিশন চ্যানেলের বিতর্ক অনুষ্ঠানে নূপুর শর্মা মহানবীকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ ওঠে। বিতর্কিত মন্তব্য করেন বিজেপি নেতা নবীন কুমার জিন্দালও।

এরপরই শুরু হয় সমালোচনা আর বিক্ষোভ। দেশের বিভিন্ন স্থানে শুরু হয় সংঘর্ষ ও সহিংসতা। বিভিন্ন রাজ্যে এরই মধ্যে নূপুরের বিরুদ্ধে মামলা হয়। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ক্ষোভ পৌঁছেছে বিভিন্ন মুসলিম দেশে। কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে কোনো কোনো দেশ।

এ ইস্যুতে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করায় বিজেপির পক্ষ থেকে নূপুর ও নবীনকে ছয় বছরের জন্য বরখাস্ত করা হয়।

মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম এবং পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, সেসব দেশে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ঘোষণাও দেয় মুসলমানরা।

এ ঘটনার পর দলের নেতা ও মুখপাত্রদের টিভি বিতর্কে অংশ নেয়ার ব্যাপারে নতুন নিয়ম করে বিজেপি। এখন থেকে কেবল দলটির অনুমোদিত মুখপাত্র এবং প্যানেলিস্টরা টেলিভিশন বিতর্কে অংশ নিতে পারবেন। টিভি বিতর্কে অংশ নিতে মুখপাত্র এবং প্যানেলিস্ট নির্ধারণ করে দেবে দলটির মিডিয়া সেল।

নূপুরকে গ্রেপ্তারের দাবি উঠে বিভিন্ন মহলে। তবে এখনও পর্যন্ত নূপুর-বিতর্কে মুখ খোলেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

এ বিভাগের আরো খবর