ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী সাংবাদিক মারিয়া রেসার প্রতিষ্ঠিত অনুসন্ধানী সংবাদ পোর্টালের ওয়েবসাইট বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে।
মারিয়া রেসার প্রতিষ্ঠিত ‘র্যাপলার হল’ প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তের সমালোচনা করা গুটিকয়েক মিডিয়া আউটলেটের একটি।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত এমন সময় নিল, যখন দুতার্তে প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার এ মাসেই অর্পণ করতে যাচ্ছেন মে মাসের নির্বাচনে বিজয়ী ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়রের কাছে। রাজনীতির মাঠে দুতার্তে ও ফার্দিনান্দ মিত্র হিসেবেই পরিচিত।
তবে সহজে হাল ছাড়ছে না র্যাপলার। বুধবার সংবাদমাধ্যমটির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তারা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করবে।
তবে দুতার্তের সমালোচনার কারণে মিডিয়া আউটলেটের ওয়েবসাইট বন্ধ করা হয়নি বলে দাবি করছে কর্তৃপক্ষ।
ফিলিপাইন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এক বিবৃতিতে বলেছে, একটি আপিলের ভিত্তিতে কোম্পানি পরিচালনার লাইসেন্স প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, কারণ আদালত এই সিদ্ধান্তে পৌছেছে যে র্যাপলারের ব্যবসায়িক মডেল অসাংবিধানিক।
র্যাপলার হলের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, ফিলিপাইনের গণমাধ্যমে বিদেশি মালিকানার বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করে সংস্থাটি একটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে নিজের নিয়ন্ত্রণ বিক্রি করেছিল।
নোবেলজয়ী ফিলিপাইনের সাংবাদিক মারিয়া রেসা
তবে র্যাপলার বলছে, তারা ২০১৫ সালে ওমিদার নেটওয়ার্কের থেকে তহবিল পেয়েছিল। এই নেটওয়ার্ক একটি জনকল্যাণমূলক বিনিয়োগ সংস্থা। ‘ই-বে’র প্রতিষ্ঠাতা বিলিয়নিয়ার পিয়ের ওমিদার এ সংস্থাটি জনহিতৈষী কাজের জন্য প্রতিষ্ঠা করেন।
এর ঠিক তিন বছর পরই র্যাপলার-কর্মীদের পুরো বিনিয়োগের অর্থ পুরোপুরি দিয়ে দেয় ওমিদার নেটওয়ার্ক। এ ঘটনাই প্রমাণ করে, র্যাপলারের ব্যবসায় ওমিদার নেটওয়ার্ক কোনো নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা নয়।
র্যাপলারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক আদেশ র্যাপলার বন্ধ করার বিষয়টি কার্যকরভাবে নিশ্চিত করেছে।
যদিও মারিয়া রেসা মঙ্গলবার এক মিডিয়া কনফারেন্সে বলেছিলেন যে সাইটটি বন্ধ হবে না।
গত বছর মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সুরক্ষার প্রচেষ্টার স্বীকৃতি হিসেবে র্যাপলারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মারিয়া রেসা রুশ সাংবাদিক দিমিত্রি মুরাতভের সঙ্গে যৌথভাবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান।
সাংবাদিকদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশের তালিকায় ফিলিপাইনের নাম রয়েছে।
২০১৬ সালে ফিলিপাইনের ক্ষমতায় বসেন প্রেসিডেন্ট দুতার্তে। এর পরই রেসা ও তার প্রতিষ্ঠান র্যাপলারকে বেশ কয়েকটি মামলার মুখে পড়তে হয়। বিভিন্ন সময়ে অনলাইনে রেসাকে হুমকিসহ অবমাননাকর বার্তাও পাঠানো হয়।
র্যাপলারকে ‘ভুয়া সংবাদমাধ্যম’ হিসেবে দেখেন দুতার্তে।