ইউক্রেনে চলছে রুশ সামরিক অভিযান। পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে রাশিয়া গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে দেশটিতে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা জোট ন্যাটোর সহযোগিতায় ইউক্রেনের সেনারাও রুশ সেনাদের প্রতিরোধের চেষ্টা করছে।
ইউক্রেনীয় সেনারা রাজধানী কিয়েভকে রক্ষা করতে পারলেও পূর্ব ইউক্রেন অর্থাৎ দোনবাস অঞ্চলে রুশ সেনাদের অগ্রযাত্রা থামাতে পারছে না। কিয়েভ জানিয়েছে, গোলাবারুদের সংকটে আছে ইউক্রেনীয় সেনারা।
এমন পরিস্থিতিতে আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, আর কয়েক বছরের মধ্যে হয়তো ইউক্রেনের অস্তিত্বই থাকবে না।
তিনি বলেন, ‘আমি একটি বার্তা দেখেছি যে ইউক্রেন বাইরের দেশ থেকে ২ বছরের জন্য অর্থ দিয়ে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) পেতে চায়, অন্যথায় আগামী শীতে দেশটি বরফে জমে যাবে। প্রশ্ন হলো: কে বলেছে ইউক্রেন বিশ্ব মানচিত্রে ২ বছর আদৌ থাকতে পারবে?’
২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন মেদভেদেভ, এরপর ২০১২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত পালন করেন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব।
বর্তমানে রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বে থাকা দিমিত্রি মেদভেদেভ এক টেলিগ্রাম পোস্টে এসব লেখেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সহকারী মাইখাইলো পোডোলিয়াক মেদভেদেভের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বলেন, ‘ইউক্রেন আছে, আছে এবং থাকবে। প্রশ্ন হলো মেদভেদেভ দুই বছর পরে কোথায় থাকবেন?’
এদিকে পূর্ব ইউক্রেনে লড়তে সমরাস্ত্র ঘাটতিতে থাকা ইউক্রেনকে আরও ১ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
নতুন এই অস্ত্র সহায়তার প্যাকেজ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি।
যদিও কিয়েভের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগের প্রতিশ্রুত পশ্চিমা অস্ত্রের ১০ শতাংশও এখনও হাতে পায়নি ইউক্রেনীয় সেনারা।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ সেনাদের সামরিক অভিযান।
দোনবাসের বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।
যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এ যুদ্ধ বন্ধ না হলে বিশ্বজুড়ে বড় ধরনের খাদ্যসংকট তৈরি হবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।