মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির জেরে বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মাকে তলব করেছে কলকাতা পুলিশ। আগামী ২০ জুনের মধ্যে তাকে হাজির হওয়ার জন্য কলকাতার নারকেলডাঙ্গা থানা পুলিশ নোটিশ পাঠিয়েছে।
মহানবীকে নিয়ে করা কটূক্তির জন্য নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে মেদিনীপুর জেলার কাঁথি এবং কলকাতা নারকেলডাঙ্গা থানায় মামলা হয়েছে। এর ভিত্তিতে দল থেকে বরখাস্ত বিজেপির এই মুখপাত্রকে তলব করেছে কলকাতা পুলিশ।
সোমবার নূপুরকে ২০ জুনের মধ্যে হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ পাঠিয়েছে নারকেলডাঙ্গা থানা ।
এর আগে মুম্বাই পুলিশ তাকে নোটিশ দেয়। সেখানে বলা হয়, আগামী ২৫ জুন মুম্বাই পুলিশের সামনে উপস্থিত হয়ে তাকে এ বিষয়ে জবানবন্দি দিতে হবে। ওই দিন নূপুরের জবানবন্দি রেকর্ডের পাশাপাশি টেলিভিশন বিতর্কে তার দেয়া বক্তব্যের ভিডিও ফুটেজও দেখবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। এ ব্যাপারে চ্যানেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
মহানবীকে অবমাননার অভিযোগে তৃণমূলের রাজ্য সংখ্যালঘু সেলের সম্পাদক আইনজীবী আবু সোহেল পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি থানায় নূপুরের বিরুদ্ধে মামলা করেন। নূপুরের বিরুদ্ধে শান্তিভঙ্গের প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগে ভারতের বিভিন্ন থানায় মামলা হয়েছে।
একটি সর্বভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেলে দেয়া নূপুর শর্মার কটূক্তিকে কেন্দ্র করে ভারতজুড়ে শান্তির পরিবেশ বিঘ্নিত হয়। আর তার আঁচ এসে পড়ে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় ।
সম্প্রতি জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে ভারতের একটি টেলিভিশন চ্যানেলের অনুষ্ঠানে নূপুর মহানবীকে নিয়ে আপত্তিকর কটূক্তি করেন।
ইসলাম সম্পর্কেও তার কিছু মন্তব্যের জেরে দেশটিতে মুসলিম সমাজে ক্ষোভ দানা বাঁধছিল।
শুধু নূপুরই নন, মহানবীকে নিয়ে কটূক্তি করেছিলেন বিজেপি নেতা নবীন কুমার জিন্দালও।
গত বৃহস্পতিবার থেকে পশ্চিবঙ্গের হাওড়ার বিভিন্ন অংশ অবরোধ করা হয়। বাড়িঘর, দোকানে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। চলে ভাঙচুর। প্রশাসন ওই এলাকায় ১৪৪ ধারার পাশাপাশি ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেয় । আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে মুর্শিদাবাদ ও নদিয়া জেলাতেও।
শুক্রবার ভারতের ঝাড়খণ্ডে প্রতিবাদ সমাবেশে সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
তবে এরই আগে এ ইস্যুতে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করায় বিজেপির পক্ষ থেকে নূপুর ও নবীনকে ছয় বছরের জন্য বরখাস্ত করা হয়।
মহানবীকে নিয়ে বিজেপির দুই নেতার কটূক্তির জেরে আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে দলটি। অন্তত ১৫টি দেশ এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে। ব্যাপক প্রতিক্রিয়া এসেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে। এসব দেশে ভারতের বিরুদ্ধে বিক্ষোভও হয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম এবং পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, সেসব দেশে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ঘোষণাও দেয় মুসলমানরা।
এ ঘটনার পর দলের নেতা ও মুখপাত্রদের টিভি বিতর্কে অংশ নেয়ার ব্যাপারে নতুন নিয়ম করেছে বিজেপি। এখন থেকে কেবল দলটির অনুমোদিত মুখপাত্র এবং প্যানেলিস্টরা টেলিভিশন বিতর্কে অংশ নিতে পারবেন। টিভি বিতর্কে অংশ নিতে মুখপাত্র এবং প্যানেলিস্ট নির্ধারণ করে দেবে দলটির মিডিয়া সেল।